Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিশুর খাবারের দিকে নজর দিতে হবে

ড. অজয় কান্তি মন্ডল | প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

সম্প্রতি গ্রামে বেশ কিছুদিন অতিবাহিত করার সুযোগ হয়েছিল। অবসরে মাঝেমধ্যে গ্রামের কিছু মুদি দোকানে গিয়ে বসতাম। দেখতাম, সংসারের প্রয়োজনীয় টুকিটাকির সাথে মুদি দোকানের বিভিন্ন কৌটায় সারি সারি সাজানো আছে চকলেট, মিঠাই, ডেইরি মিল্ক, ছোটছোট প্লাস্টিকের কন্টেইনারে রঙ বেরঙের পানীয়, জুস, জেলি, চানাচুরসহ তেলে ভাঁজা নানা প্রকারের খাবার। একপাশ দিয়ে সাজানো আছে বিভিন্ন কোম্পানির চিপসের প্যাকেট। খেয়াল করলাম, এসব মুদি দোকানে বড়দের চেয়ে ছোটদের আনাগোনা বেশি। গ্রামের অধিকাংশ শিশু দিনে কয়েকবার এসব দোকানে যাচ্ছে এবং মুখরোচক ওইসব খাবার কিনছে। শিশুদের ক্রয় করা খাবারের গায়ের লেবেলে বিএসটিআই কর্তৃক মান নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কোন কিছু লেখা আছে কিনা খোঁজার চেষ্টা করলাম। কিন্তু সেগুলোর কোনো হদিস মিলল না।

এসব খাবার সরবরাহ করে এমন একটা কোম্পানির প্রতিনিধির সাথে একদিন সাক্ষাত হলো। দুই কৌটা চকলেট কিনলে কোম্পানির তরফ থেকে একটা বড় সাইজের গামলা ফ্রি, এমন একটি অফার দিয়ে পাইকারি দামে উনি দোকানিদের অফার দিচ্ছেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ‘আপনাদের প্রস্তুতকৃত খাবারের কোনরকম মান নিয়ন্ত্রণ করা হয় কিনা বা করলে কারা করে?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘আমাদের কোম্পানির প্রস্তুতকৃত চকলেট বাচ্চারা একবার খেলে দিনের ভিতর আরও পাঁচ বার দোকানে আসবে’। আমি আবার একই প্রশ্নের পুনরাবৃতি করলে তিনি ইনিয়ে বিনিয়ে কথা বলে সুযোগ খুঁজে সটকে পড়লেন। অর্থাৎ এসব খাবার যে শিশুস্বাস্থ্যের জন্য বেশ হুমকিস্বরূপ হবে, সেটা বুঝতে বিন্দুমাত্র বাকি রইল না। গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গড়ে ওঠা অনুমোদনহীন এসব খাবারের কারখানায় বিশুদ্ধতার কোনরকম তোয়াক্কা না করেই খাবার তৈরি করা হয়। যেখানে খাবারের পুষ্টিগুণের চেয়ে প্রাধান্য দেওয়া হয় শিশুদের মুখে ধরে এমন স্বাদকে। অর্থাৎ শিশুদের এসব খাবারকে অধিক মুখোরোচক করতে নানান কেমিক্যাল বা অপদ্রব্য মেশানো হয়। প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে বিভিন্ন অফারের বিষয়ে এদের সজাগ দৃষ্টি থাকলেও খাবারের মান উন্নয়ন বা শিশুস্বাস্থ্যের বিষয়ে এরা উদাসীন। এসব কোম্পানি লাভের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে উৎপাদন খরচ কমাতে যেকোন ধরনের নিষিদ্ধ রাসায়নিক পদার্থ বা ক্ষতিকর রঞ্জক পদার্থ শিশুখাদ্যে মেশাতে দ্বিধাবোধ করে না।

প্যাকেজিংয়ে চাকচিক্য বা বাহ্যিক সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে শিশুরা বা তাদের পিতামাতারা শিশুদের জন্য এসব খাবার ক্রয় করতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ছে। নষ্ট আটা, ময়দা, ভাতের মাড়, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড, স্যালিসাইলিক এসিড, ইউরিয়া, মনো সোডিয়াম গ্লুটামেট, সোডিয়াম বেনজোয়েট, আলকাতরা ব্যবহার করে অতিমাত্রার নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিভিন্ন অনুমোদনহীন কারখানায় শিশুদের এসব খাবার তৈরি হচ্ছে। দীর্ঘদিন অরক্ষিতভাবে রাখার ফলে অনেক শিশুখাদ্যে জন্ম নিচ্ছে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও পোকামাকড়। এসব খাবারের স্বাদ বর্ধিতকরণে ব্যবহৃত হচ্ছে টেস্টিং সল্টসহ অন্যান্য ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ। কাপড়ে ব্যবহৃত ক্ষতিকর রঞ্জক, কৃত্রিম ফ্লেভার, ঘনচিনি ও স্যাকারিনের দ্রবণ মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের জুস এবং জেলিসহ ভেজাল খাদ্যপণ্য। এসকল পণ্যের প্রধান ভোক্তা হচ্ছে শিশুরা। কিন্তু এসব রাসায়নিক পদার্থের সহনশীলতা শিশুদের তো দূরের কথা একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের শরীরে পর্যন্ত নেই। ভেজাল এসব খাবার খেয়ে শিশুরা মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে। এসব খাবারের প্রতিক্রিয়া শিশুদের শরীরে তাৎক্ষণিকভাবে লক্ষণীয় না হলেও খাবারে মেশানো ক্ষতিকর উপাদান তাদের শরীরে ‘স্লো পয়জনিং’-এর মতো কাজ করছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা গবেষণায় খুঁজে পেয়েছেন, ভেজাল এসব খাবার শিশুদের জিনগত পরিবর্তন করে ক্যান্সার সৃষ্টি করছে। দূষিত খাবার গ্রহণের ফলে শিশুদের পেটের পীড়া, আলসার, চর্মরোগ লেগেই আছে এবং এগুলো চরম পরিণতির পর্যায়ে পৌঁছালে শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হচ্ছে। দূষিত খাবারে তাদের দেহকোষ, মস্তিষ্ক, কিডনি ও লিভার সরাসরি আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দেখা দিচ্ছে হাঁপানি রোগ, তাদের শরীরে রক্ত চলাচলেও ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।

এসব নানান ধরনের জটিল রোগ সৃষ্টির সাথে দৈনন্দিন যে সমস্যাগুলো শিশুদের বেশি ক্ষতি করছে তার মধ্যে অন্যতম শিশুদের ক্ষুদামন্দা বা স্বাভাবিক খাবারে অরুচি। শহর বা গ্রামের অধিকাংশ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। তাদের কঙ্কালসার শরীর দেখলে সহজেই অনুমান করা যায় স্বাভাবিক খাবারে অরুচির বিষয়টি। সব শিশুর বাইরের খাবারের প্রতি এতটাই আসক্তি, যাতে করে তারা বাসার স্বাভাবিক খাবারের স্বাদ ভুলতে বসেছে। হজমক্রিয়ার নানারকমের জটিলতায় সকাল, দুপুর ও রাতের রুটিন মাফিক খাবার গ্রহণে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। সেকারণে অভিভাবকরা অনেকটা নিরুপায় হয়ে জেনে বা না জেনে বাচ্চাদের আবদার পূরণ করতে দোকানের এসব অস্বাস্থ্যকর খাবার তুলে দিচ্ছে। গ্রামের শিক্ষিত-অশিক্ষিত অধিকাংশ ব্যক্তিই বাচ্চাদের আবদারের কাছে অনেকটা অসহায়। তাঁদের অনেকের ধারণা, বাসার খাবার না খেলেও দোকানের খাবারে কিছুটা হলেও শিশুদের দৈনন্দিন খাদ্য চাহিদা পূরণ হচ্ছে। কিন্তু নিঃসন্দেহে তাদের এই ভ্রান্ত ধারণা বাচ্চাদের আরও একধাপ নিশ্চিত ক্ষতির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এসব খাবারে শিশুদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। অতিরিক্ত মাত্রার ফাস্ট ফুড, তেলে ভাজা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ খাবার খাওয়ার ফলে প্রতিটি শিশুর শরীরের রক্তে অল্প বয়স থেকেই বাসা বাঁধছে উচ্চ মাত্রার কোলেস্ট্রল। আবার কেউ কেউ অল্প বয়সে অতিরিক্ত মুটিয়ে যাচ্ছে। শরীরের বাড়তি ওজন সর্বদা সুস্থ জীবনযাপনের অন্তরায়। শরীরে চর্বি জমা হওয়া মানেই নানান রোগের উৎপত্তি। বর্তমানে শিশুদের ক্ষেত্রেও বেড়ে যাওয়া হৃদরোগ ও ডায়েবেটিসের হার এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

দেশের গ্রামগঞ্জের অধিকাংশ শিশুর লিকলিকে আর কঙ্কালসার দেহবিশিষ্ট চেহারা নিজেকে মাঝেমধ্যে বেশ ভাবিয়ে তোলে। শিশুকালে যাদের চেহারায় লাবন্য থাকার কথা ছিল, তাদের অধিকাংশরই বুকের পাঁজরের হাড় গুনে নেওয়া যায়। তাদের চেহারায় প্রকাশ পায় কোনরকমে হাড়ের গায়ে চামড়া লেগে কঙ্কালসার দেহখানি ঢেকে আছে। শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যহত হওয়া এসব বাচ্চার সবাই দোকানের ভেজাল খাবারের প্রতি আসক্ত। এসব শিশু বাবামায়ের থেকে ১০-২০ টাকা বের করে নিয়েই ছুটছে দোকানের দিকে।

ফল শিশুসহ যেকোন ব্যক্তির জন্য সহজ পাচ্য, উপকারী ও লোভনীয় একটি খাবার। দৈনিক পুষ্টি চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি ফলের আছে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকরণে অসাধারণ ভূমিকা। এই ভূমিকায় আপেল, আঙুর, কমলার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি ফলের জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু দেশের বাজারে যেকোন ধরনের ফলের যে লাগামহীন দাম তা সাধারণ মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। মৌসুমি ফলের বাজারমূল্যও অনেকটা মানুষের নাগালের বাইরে। সেইসাথে ফলকে দীর্ঘদিন তাজা রাখতে বা ফলের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে নির্দ্বিধায় মেশানো হচ্ছে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ। ফল হয়ে যাচ্ছে মানুষের খাওয়ার অনুপযোগী। যে ফল মানুষের রোগ প্রতিরোধ করবে সেই ফল এখন মানবস্বাস্থ্যের জন্য আতঙ্ক। শিশুস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। পরিস্থিতি এখন এতটা খারাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে যেখানে এসব খাবার খাওয়ার চেয়ে না খেলেই শিশুরা সুস্থ থাকবে। তাই প্রতিটি অভিভাবকের উচিত শিশুদের এসব খাবার থেকে দূরে রাখা। খাবার খাওয়ার উদ্দেশে শিশুদের হাতে টাকা তুলে না দেওয়া। খাবার খাওয়ার কথা বললেই তাদের অন্য কাজে ব্যস্ত রাখা। সম্ভব হলে নিজেরা বাসায় শিশুদের পছন্দের খাবার তৈরি করে দেওয়া। যদিও কাজগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে একটু কঠিন তারপরেও এই দূষিত ও বিষযুক্ত খাবার থেকে শিশুদের বাঁচাতে অভিভাবকদের কড়া ভূমিকা পালন করাটাই শ্রেয়। খাবারে ভেজাল মেশানো বন্ধ করতে সবচেয়ে কড়া ভূমিকা পালন করতে হবে প্রশাসনকে। আইনকে কাগজকলমে সীমাবদ্ধ না রেখে তার যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। সঠিক আইন প্রয়োগ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভেজাল খাবার তৈরি করে এমন কারখানা খুঁজে বের করে সেগুলো সিলগালা করতে হবে। এসব কারখানার মালিকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। মাঝে মধ্যে দেখা যায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী ভেজালবিরোধী অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হলে কিছুদিন কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রাখে। কিন্তু কয়েকদিন যেতেই সেসব কোম্পানি আবার তাদের রমরমা ভেজাল ব্যবসা শুরু করে। এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, দেশে প্রতিবছর যত শিশু মারা যায় তার ১০ শতাংশের কারণ ভেজাল ও বিষাক্ত খাদ্য, যেটা একেবারেই কাম্য নয়। নিরোগ দেহ ও স্বাস্থ্যকর জীবন প্রতিটি মানুষের একান্ত কাম্য। কিন্তু এই মানুষের নৈতিক মূল্যবোধ এতটা চরম অবনতির দিকে ধাবিত হয়েছে, যেখানে বিশুদ্ধ খাবার মেলানো আজ চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষের হাতেই খাবারে মেশানো বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য খাদ্যকে মানব শরীরের গ্রহণের অনুপযোগী করেছে। নিরুপায় হয়ে এসব খাবার মানুষ গ্রহণ করছে। ফলে ক্রমান্বয়ে মানব শরীরের লিভার, হৃদপিণ্ড, কিডনি তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারাচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে খাবারের বিষক্রিয়ার ফল মানব শরীরের গুরুত্বর কোনো পরিবর্তন না আনলেও ক্রমান্বয়ে এই বিষক্রিয়া সমস্ত শরীরকে নষ্ট করে দিচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে এর প্রভাব দেখেছি সমাজের অধিকাংশ মানুষের ভিতর। যেখানে সুস্থ মানুষ আজ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয় মানুষকে আজ নিয়ে গেছে চরম পরিণতির দিকে। যে খাদ্য খেয়ে মানুষ জীবনধারণ করে সেখানে যারা নির্দ্বিধায় আবাধে বিষ মিশিয়ে যাচ্ছে, তারা একটি বারও ভাবে না আগামী দিনে তাদের মেশানো এই বিষ গোটা জাতির জন্য হুমকি হচ্ছে।

একমাত্র কর্তৃপক্ষের গৃহীত কড়া পদক্ষেপই পারে খাবারে ভেজাল মেশানো রোধ করতে। এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কর্তৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে যত্রতত্র ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ বিক্রির ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করতে হবে। নিয়মিতভাবে প্রতিটি কারখানায় উৎপাদিত খাবারের মান যাচাই, খাবারের লেবেলে লিখিত উপাদান সঠিকভাবে মানা হচ্ছে কিনা তার তদারকি করতে হবে। অবৈধ কারখানা সিলগালা, ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ খাবারের বিরুদ্ধে দেশের সরকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনকে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নিয়মিতভাবে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে বাজার মনিটরিং করতে হবে এবং খাদ্যে বিশুদ্ধতা বজায় রাখার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। সর্বোপরি ভেজাল খাবার গ্রহনের ফলে মানবদেহের বিভিন্ন ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বিক্রেতা, ক্রেতা তথা জনগণের বিভিন্ন সচেতনতামূলক সভা, সেমিনার, আলোকচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে যথাযথ সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে হবে।

ভেজালে ভরা খাদ্যে বাজার সয়লাব হওয়ায় আমারা সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগলেও সব থেকে বেশি বিপদের মধ্যে রয়েছে শিশুরা। মানবতাবিবর্জিত কিছু অমানুষের কব্জায় আমাদের দেশের জনগণ আজ জিম্মি। অধিক মুনাফা লাভের আশায় যারা ফুলের মতো কোমলমতি শিশুদের খাবারে বিষ মেশাতে কুণ্ঠাবোধ করে না। যাদের ঘরে জন্ম নেওয়া ছোট্ট সন্তানটিও আজ না হোক কাল অন্যের দ্বারা এই একই কার্যকলাপের ঘূর্ণিপাকে পড়তে পারে, তারা এটি চিন্তায়ও আনেন না। নিঃসন্দেহে আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে এই ভবিষ্যৎ গোড়াতেই ধ্বংস হতে বসেছে। আগামী দিনের সুখি, সুন্দর ও সুস্থ ধারার সমাজ গঠনে বর্তমানের শিশুদের ভূমিকাই মুখ্য। আগামীর কথা চিন্তা করে, সুস্থ্য ধারার সমাজের কথা চিন্তা করে আসুন আমরা সবাই সচেতন হই। খাদ্যে ভেজাল বন্ধ করি। শিশুদের সুস্বাস্থ্যের দিকে অতীব গুরুত্বের সাথে নজর দিই। তাহলে আপনার আমার ঘরের ফুটফুটে সন্তানগুলো সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেড়ে উঠবে।

লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট
[email protected]



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন