পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশকে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ কোনো শর্ত দেয়নি বলে জানানো হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ঋণ পাবে কি না, সেটি দুই সপ্তাহের মধ্যেই জানা যাবে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আইএমএফের প্রতিনিধিদের বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জি এম আবুল কালাম আজাদ এ কথা বলেন। তিনি জানান, আইএমএফের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার মিটিং করেছে। আগামী ৩০ ও ৩১ অক্টোবর এবং ২ ও ৮ নভেম্বর আবার বৈঠক হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে মোট ৬টি বৈঠক করেছে আইএমএফের প্রতিনিধি দল। প্রথম পর্বের বৈঠকে বাংলাদেশকে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার বিষয়ে আইএমএফের দিক থেকে যে আশ্বাস রয়েছে, সেটি নিয়ে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনায় ঋণ দেওয়ার বিষয়ে আইএমএফ কোনো শর্ত দেয়নি। তবে আর্থিক খাতের সংস্কার, নীতি ও ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ডলারের বিনিময় হার প্রসঙ্গে কথা হয়েছে। বৈঠকে প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ডলারের ভিন্ন ভিন্ন রেট সম্পর্কে জানতে চায়। জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের রেট ৯৭ টাকা আর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর রেট বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে গতকাল বিকেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ এবং অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে বসে প্রতিনিধি দল।
দিনের প্রথমভাগের বৈঠকেই রিজার্ভের হিসাব পদ্ধতি আলোচনায় উঠে আসে, যেটি ‘ফলপ্রসূভাবে’ এগোচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রিজার্ভের হিসাব পদ্ধতি নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের আলোচনা ফলপ্রসূ হচ্ছে, তা সন্তোষজনক চলছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভের যে তথ্য নিয়মিত প্রকাশ করে আসছে সেটি নিয়ে বছর খানেক আগে থেকে প্রশ্ন তুলে আসছে আইএমএফ। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অর্থায়নকারী সংস্থাটি আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুসরণ করে রিজার্ভ হিসাবের কথা বলে আসছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেদের মতো করে এ হিসাব করছে, যাতে রফতানি উন্নয়ন তহবিলসহ (ইডিএফ) আরও কয়েকটি তহবিলে জোগান দেওয়া অর্থকেও অন্তর্ভুক্ত করে রাখছে। আইএমএফ যেকোনো দেশের রিজার্ভ হিসাবের বেলায় বিপিএম ৬ (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন) পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকে। এতে রিজার্ভের প্রকৃত ব্যবহারযোগ্য তহবিলই প্রকাশ করার কথা বলা হয়েছে। এ পদ্ধতি অনুসরণ করে হিসাব করা হলে বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত রিজার্ভের চেয়ে তা অনেক কম হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক গঠিত ইডিএফে সরবরাহ করা হয়েছে প্রায় ৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ বিমান, পায়রা সমুদ্রবন্দর ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়া শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এজন্য মোট দেওয়া হয়েছে প্রায় ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের হিসাবে এই পরিমাণ অর্থ রিজার্ভের হিসাবে থাকার কথা নয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বুধবার পর্যন্ত রিজার্ভের পরিমাণ হচ্ছে ৩৫ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের হিসাব মানলে এ থেকে ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের মতো। এছাড়া ২০১৬ সালে হ্যাংকিংয়ের মাধ্যমে চুরি হওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থের মধ্যে ফেরত না আসা অংশটুকু এখনো রিজার্ভে দেখাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে এবারের সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শুরু এ আলোচনার সূচিতে রিজার্ভের হিসাব ব্যবস্থাপনায় ‘বিপিএম৬’ হিসাব পদ্ধতি পরিপালনের এ বিষয়টিই তুলেছে আইএমএফ।
গতকালের বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে রিজার্ভের নিট ও গ্রস দুটো হিসাবেই প্রকৃত পরিমাণের তথ্য জানতে চায় প্রতিনিধি দলটি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়। ২০২১ সালে রিজার্ভ হিসাবের পদ্ধতি নিয়ে আইএমএফ প্রশ্ন তোলার পর সেটি নিয়ে করণীয় ঠিক করতে একটি প্রস্তাব বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক পরিষদে তোলা হয়েছিল। তবে পর্ষদ আইএমএফের পরামর্শ গ্রহণ না করে নিজেদের মতো করেই রিজার্ভ হিসাব করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আগামীতে অনুষ্ঠেয় বৈঠকগুলোতে রিসেন্ট মনিটরিং ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড আউটলুক, ইন্টারেস্ট রেট ডেভেলপমেন্ট, সরকারি বন্ড, মানেটারি এক্সচেঞ্জ রেট, রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট, ব্যাংকিং ইস্যুস, ব্যালেন্স অব পেমেন্ট, এক্সটার্নাল লোন ডিসবার্সমেন্ট আইএমএফ টিএ রিপোর্টস, রিসেন্ট ট্রেড পারফর্মেন্স, রিসেন্ট এক্সচেঞ্জ পারফর্মেন্স, রিস্ক বেসড সুপারভিসন এবং টেকনিক্যাল মিটিং অন এএমএলের বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া ফাইন্যান্সিয়াল ডেটা, অন্যান্য বড় চ্যালেঞ্জ, বপ রেটেড ম্যাটার্স, মানেটারি পলিসি স্ট্র্যাটেজি, এক্সচেঞ্জ রেট প্রেসার, ইনস্টিটিউশনাল অটোনমি অ্যান্ড গভর্নেন্স, কমার্শিয়াল ব্যাংক পারফর্ম্যান্স এবং এফএসএপি আপডেটের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।