Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিবিএ করে মাছের প্রজেক্টের আড়ালে কক্সবাজারের ইয়াবার গডফাদার এরশাদুল

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশের সময় : ২৬ অক্টোবর, ২০২২, ৩:৪৪ পিএম

নৌপথে ইয়াবার চালান আনতে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করতেন কক্সবাজারের উখিয়ার ইয়াবা গডফাদার এরশাদুল হক (৩২)। সেই ইয়াবা পাঠাতেন ঢাকায়। ঢাকার ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কখনো মাছের চালানের সঙ্গে ট্রাকে, কখনো বাসে ইয়াবা পাঠাতেন। ইয়াবার চালান ঢাকায় পাঠিয়ে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে নিজে প্লেনে ঢাকায় যাতায়াত করতেন। ঢাকা ও মিয়ানমারের ইয়াবা ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বিভিন্ন এনক্রিপটেড অ্যাপস ব্যবহার করতেন। পাইকারিতে মিয়ানমার থেকে পিস প্রতি ৮০ টাকায় কিনে ঢাকায় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করতেন।

মঙ্গলবার উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩৩ হাজার পিস ইয়াবাসহ এরশাদুলকে গ্রেপ্তার করে বুধবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান।


তিনি বলেন, প্রায় এক মাস আগে এরশাদুলের ইয়াবা সিন্ডিকেট সম্পর্কে অবগত হই। এরশাদুলের সঙ্গে সখ্যতা তৈরির জন্য সোর্স নিয়োগ করি। গত ২৪ অক্টোবর রমনা সার্কেলের পরিদর্শক তমিজ উদ্দিন মৃধা ক্রেতা সেজে দুই হাজার পিস ইয়াবা কেনার দেন-দরবার করার সময় এ চক্রের সহযোগী সদস্য হুমায়নকে তার স্ত্রীসহ ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। হুমায়ন ও তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদে এরশাদুলের অবস্থান সম্পর্কে অবগত হই।


হুমায়নকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাশেদুজ্জামান বলেন, উখিয়া ও টেকনাফ এলাকার ইয়াবার মূল গডফাদার এরশাদুল। তিনি ইয়াবার একটি বড় চালান নিয়ে দু’একদিনের মধ্যে ঢাকায় অবস্থান করবেন। এমন তথ্যর ভিত্তিতে প্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) রাতে উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩৩ হাজার পিস ইয়াবাসহ এরশাদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এরশাদুল হক একটি সরকারি কলেজ থেকে বিবিএ সম্পন্ন করেছেন। কক্সবাজার সদরের নুরুল হকের ছেলে এরশাদুল নিজেকে কক্সবাজার জেলা ক্রিকেট টিমের সাবেক ক্যাপ্টেন বলে দাবি করেন।

এরশাদুলকে জিজ্ঞাসাবাদে মাদকের এই কর্মকর্তা জানায়, উখিয়ায় তাদের একাধিক মাছের প্রজেক্ট রয়েছে। এ প্রজেক্টের আড়ালে তিনি ইয়াবার ব্যবসা করতেন। গত তিন বছর ধরে মিয়ানমারের ইয়াবা ডিলারদের সঙ্গে বিভিন্ন এনক্রিপটেড অ্যাপসের মাধ্যমে যোগাযোগ করে ইয়াবার কারবার করছেন এরশাদুল।

গ্রেপ্তার এরশাদুল মাছ পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ট্রাকের মধ্যে বিশেষ কায়দায় ম্যাগনেট (চুম্বক) ব্যবহার করে ঢাকায় ইয়াবার বড় চালান নিয়ে আসতেন। এ কাজে তার একাধিক সহযোগী সদস্য রয়েছে এবং তিনি সিন্ডিকেটের মূলহোতা।

এক প্রশ্নের জবাবে রাশেদুজ্জামান বলেন, এরশাদুল সরাসরি মিয়ানমারের ইয়াবার ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন।

নৌপথে অবৈধভাবে মিয়ানমারে যাতায়াত করা রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ইয়াবার চালান আনতেন টেকনাফে। এরপর তা তিনি নির্ভরযোগ্য সোর্স ও বাহকের মাধমে কখনো বাসে, কখনো ট্রাকে ঢাকায় পাঠাতেন। তিনি নিজে কখনো ইয়াবা বহন করতেন না বলেও জানান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রাশেদুজ্জামান ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্রেফতার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ