Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৮০ ভাগ পরিপক্ব আমন ধান কাটার পরামর্শ

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে উপকূলীয় ১৯ জেলায় ক্ষতির শঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর ক্ষতি থেকে আমন ফসল রক্ষার জন্য জরুরি পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। এতে বলা হয়েছে, আমন ধান ৮০ শতাংশ পরিপক্ক হলে অতিসত্বর কেটে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হলো।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, বঙ্গোপসাগরের গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ লাভ করে সোমবার দিবাগত রাতের পর থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় ১৯টি জেলার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এর গতিপথ পরিবর্তন হলে বাংলাদেশের সুন্দরবন ও এর আশপাশের জেলাগুলোতে আঘাত হানতে পারে। এর আগে ২০০৭ সালে সিডরের আঘাতে গোটা উপকূলীয় অঞ্চল যেমন লন্ডভন্ড হয়েছিল, আবহাওয়াবিদরা এবারও তেমন আশঙ্কা করছেন।

এদিকে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রে জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারি থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এর ফলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এ সংস্থাটির মতে, পূর্ব-মধ্যবঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে আগামী ২৫ অক্টোবর ভোরে দেশের বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এর প্রভাবে আগামী ২৪ থেকে ২৬ অক্টোবর দেশের উপকূলীয় অঞ্চলসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। ভারী বর্ষণের ফলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি হতে পারে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কিছু স্থানে আকস্মিক বন্যা এবং পূর্বাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মহুরী, মনু, খোয়াই, সুরমা-কুশিয়ারা নদ-নদীর পানি সমতল দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। সময় বিশেষে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া গভীর নিম্নচাপটির বর্ধিতাংশ, অমাবস্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যে আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলায় বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং এ জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। ঝুঁকিতে থাকা দেশের উপকূলীয় জেলাগুলো হচ্ছে Ñখুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, পিরোজপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ ও শরীয়তপুর।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কাটা ফসল বৃষ্টি শুরুর আগে নিরাপদ স্থানে সংরক্ষণ করুন। সেচ নালা পরিষ্কার রাখতে হবে যাতে ধানের জমিতে অতিরিক্ত পানি জমে না থাকে। ক্ষেতের চারপাশে উঁচু বাঁধ দিতে হবে যাতে পানির স্রোত ফসলের ক্ষতি করতে না পারে। সেচ, সার ও কীটনাশক প্রয়োগ আপাতত বন্ধ রাখতে হবে। বৃষ্টির পানি সরে যাওয়ার পর ধানের পেনিকেলগুলো বান্ডেল করে বেঁধে সোজা করে রাখার কথাও বলেছে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট।

আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবের ফলে এবার আমন চাষে লক্ষমাত্রা পূরণ হয়নি। জুন-জুলাইয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টিপাতের ফলে অনেক এলাকায় পানির অভাবে সময়মত আমন চাষ সম্ভব হয়নি। জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত আমন রোপনের মৌসুম হলেও আগস্টের শেষ পর্যন্ত এবার আবাদ করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। চলতি বছর আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫৯ লাখ ৫৮ হাজার হেক্টর জমি। তবে চাষ হয়েছে ৫৬ লাখ ৭৪ হাজার হেক্টর জমি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঘূর্ণিঝড়

২৬ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ