দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
(পর্ব এক এর বাকি অংশ)
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া-তা›আলা উম্মতে মুহাম্মাদিকে পৃথিবীতে প্রেরণ করার পূর্বেই তাঁর নবী ইবরাহিম (আ.)-এর মাধ্যমে এ উম্মতের নামকরণ করেছিলেন। কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করা হয়েছে- তোমরা তোমাদের পিতা ইবরাহিমের ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকো। তিনি তোমাদের নাম রেখেছেন মুসলিম, এর পূর্বেও এবং এই কুরআনেও। যাতে রাসুল তোমাদের সাক্ষ্যদাতা হন এবং তোমরা সমগ্র মানবজাতির জন্য সাক্ষ্যদাতা হও।(সুরা হাজ্জ : ৭৮)
কুরআনুল কারীমের অন্য আয়াতে (মুসলিম) শব্দটি বিশেষণরূপে ব্যবহৃত হলেও উপরোক্ত আয়াতে (মুসলিম) শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে বিশেষ্যরূপে। সুতরাং তাওহীদ তথা আল্লাহর একত্ববাদ এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর রিসালাতের সাক্ষ্যদানকারী প্রতিটি ব্যক্তিই মুসলিম বলে গণ্য হবে। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- যে আমাদের ন্যায় নামাজ আদায় করে, আমাদের কিবলার দিকে মুখ ফেরায়, আমাদের যবেহ করা প্রাণী খায়- সে মুসলিম। তার জন্য আল্লাহ ও রাসুল যিম্মাদার। সুতরাং তোমরা আল্লাহর যিম্মাদারীতে বিশ্বাসঘাতকতা করোনা। (সহীহ বুখারী : কিতাবুস সালাত, ৩৮৪)
রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর উম্মতকে বৃহদার্থে মুসলিম বলে গণ্য করলেও তাঁর ইহলোক ত্যাগের পর এ উম্মতের মধ্যে নানাবিদ দল-উপদলের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী সবাই মুসলিম, তবুও কিছু চিন্তাগোষ্ঠীর বিশ্বাস ও কর্মের সাথে কুরআন-সুন্নাহ›র মৌলিক শিক্ষার বিশাল ফারাক রয়েছে। ইসলামের ইতিহাসে প্রথম যে দলটি সাহাবায়ে কেরামের জামা›আত ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিল, ইতিহাসে তারা খারাজি নামে পরিচিত। ৩৭ হিজরিতে আমিরুল মু›মিনীন আলী ইবনে আবি তালিব (রা.) ও সিরিয়ার গভর্ণর মু›আবিয়া ইবনে আবি সুফিয়ান (রা.)-এর মধ্যে সংঘটিত সিফফিন যুদ্ধের সালিস মীমাংসায় নাখুশ হয়ে আব্দুল্লাহ ইবনে ওয়াহব আর-রাসিবীর নেতৃত্বে ৬ হাজার খারেজি খলিফা আলী (রা.)-এর দল ত্যাগ করে আলাদা হয়ে যায়। অপরদিকে আরেকদল লোক আলী (রা.) ও আহলে বায়েতের সম্মান ও ভালবাসায় চরম বাড়াবাড়ি করতে শুরু করে এবং নিজেদেরকে (শিয়াতু আলী) বা আলীর দল বলে পরিচয় দেয়। আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা নামক ব্যক্তি শিয়াদের বিশ্বাসগত বিচ্যুতিতে জ্বালানির যোগান দিয়েছিল। প্রথমে রাজনৈতিক মতাদর্শের আকারে জন্ম নিলেও ৬১ হিজরিতে সংঘটিত কারবালার হৃদয়বিদারক হত্যাকান্ডের ফলস্রুতিতে বা আলীর দলখ্যাত লোকেরা নিজেদেরকে একটি আকীদাভিত্তিক গোষ্ঠীরূপে গড়ে তুলে। একদিকে খারেজি সম্প্রদায় যেমন সাহাবায়ে কেরামের আকীদা থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছিল, অপরদিকে শিয়ারাও আকীদার ক্ষেত্রে নানাবিদ বাড়াবাড়ির আশ্রয় নিয়েছিল। যারা রাজনৈতিকভাবে আমিরুল মু›মিনীন আলী (রা.)-এর পক্ষে ছিলেন, তাঁদেরকে সাধারণ অর্থে তাফদ্বিলী শিয়া বলা হয়। তাফদ্বিলী শিয়াদের মধ্যে আকীদাগত কোন বিচ্যুতি ছিলনা। বরং আহলে বায়েতের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যবৃন্দ এ দলের অংশ ছিলেন। কিন্তু এ দল বেশিদিন টিকতে পারেনি। শীঘ্রই আব্দুল্লাহ ইবনে সাবার অনৈসলামিক আকীদাকে কেন্দ্র করে সাবায়িয়্যাহ আকীদার একদল চরমপন্থী শিয়া আত্মপ্রকাশ করে। এই সাবায়িয়্যাহ আকীদার শিয়াদেরকে রাফেজি শিয়া বলে আখ্যায়িত করা হয়। এরপর আরো নানাবিদ ছোটখাটো আকীদাভিত্তিক গোষ্ঠীর উদ্ভব ঘটেছিল। তবে এক মু›তাযিলা (অতি যুক্তিবাদী গোষ্ঠী) ব্যতীত বাকি সবাই ইতিহাসের গহ্বরে বিলিন হয়ে গেছে। এতসব দল-উপদল ও বিচ্যুত বিশ্বাসের ভিড়েও একটি বৃহৎ জামা›আত সর্বদা আল্লাহর কিতাব, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাত ও সাহাবায়ে কেরামের মানহাজের উপর দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত ছিল এবং এখনো আছে। পরিচয়ের সুবিধার্থে উম্মতে মুহাম্মাদির এই বৃহদাংশকে (আহলে সুন্নাত ওয়াল-জামা›আত) বলে আখ্যায়িত করা হয়। এ নামকরণের পেছনে মূল সূত্র হচ্ছে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মোবারক বাণী। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) এবং মু›আবিয়া ইবনে আবি সুফিয়ান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- ইহুদিরা ৭১টি উপদলে বিভক্ত হয়েছিল, খ্রিস্টানরা ৭২টি উপদলে। আমার উম্মত ৭৩টি উপদলে বিভক্ত হবে। প্রত্যেক উপদল জাহান্নামে যাবে, কেবল একটি ব্যতীত। জিজ্ঞেস করা হলো- ইয়া রাসুলাল্লাহ! এরা (জাহান্নাম থেকে মুক্ত) কারা? তিনি (সা.) বললেন, যারা এ পথে থাকবে যে পথে আমি ও আমার সাহাবিরা আছি। অপর একটি বর্ণনায় রয়েছে, রাসুলাল্লাহ (সা.) বলেছেন- এরা হবে জামা›আত (বৃহৎ দল)। (জামে তিরমিযি : আবওয়াবুল ঈমান, ২৬৪১ এবং সুনানে আবু দাউদ : কিতাবুস সুন্নাহ, ৪৫৯৭)
উল্লেখিত হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, আহলে সুন্নাত ওয়াল-জামা›আত কোন ফিরকা বা উপদল নয়। আহলে সুন্নাত হচ্ছে একটি মানহাজ এবং উম্মতে মুহাম্মাদির সেই বৃহদাংশ, যারা নিজেদেরকে সর্ববিদ দলাদলি এবং বিশ্বাসগত নব-উদ্ভাবন থেকে মুক্ত রেখে রাসুলাল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের সুন্নাতের উপর দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত আছে। রাসুলাল্লাহ (সা.)-এর হাদিসের মধ্যে আহলে সুন্নাত ওয়াল-জামা›আতের প্রস্তাবিত কর্মপন্থা সুস্পষ্টরূপে বিদ্যমান। ইরবাদ্ব ইবনে সারিয়াহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলাল্লাহ (সা.) বলেছেন- আমি তোমাদেরকে আল্লাহকে ভয় করার এবং (নেতার আদেশ) শ্রবণ ও মান্য করার আদেশ দিচ্ছি, যদিও সে একজন হাবশি গোলাম হয়। তোমাদের মধ্যে যারা বেঁচে থাকবে তারা বহু মতবিরোধ লক্ষ্য করবে। তোমরা (দ্বীনের মধ্যে) নব-উদ্ভাবন থেকে বিরত থাকবে, কারণ তা ভ্রান্ততা। তোমাদের মধ্যে কেউ সে যুগ পেলে, সে যেন আমার সুন্নাত ও আমার সুপথপ্রাপ্ত পথপ্রদর্শক খলিফাদের সুন্নাতের উপর অবিচল থাকে। এসব সুন্নাতকে তোমরা দাঁতের সাহায্যে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরো। (জামে তিরমিযি : আবওয়াবুল ইলম, ২৬৭৬)
উম্মতের বৃহদাংশকে রাসুলুল্লাহ (সা.) সাওয়াদে আ›জম বা বৃহৎ দল এবং সুরক্ষিত মানহাজ বলে আখ্যায়িত করেছেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলাল্লাহ (সা.) বলেছেন- আমার উম্মত কখনো ভ্রান্তির উপর একমত হবেনা। সুতরাং যখন মতবিরোধ দেখবে, তখন তোমরা সাওয়াদে আ›জমকে অনুসরণ করবে। (সুনানে ইবনে মাজাহ : কিতাবুল ফিতান, ৩৯৫০)
উপরোক্ত হাদিসের পর আহলে সুন্নাত ওয়াল-জামা›আতকে আর কোন সংজ্ঞা দিয়ে পরিচয় করিয়ে দেয়ার প্রয়োজন পড়েনা। যারা আল্লাহর কিতাব, রাসুলাল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাত এবং সাহাবায়ে কেরামের আকীদার অনুসারী, তাঁরাই আহলে সুন্নাত ওয়াল-জামা›আত বলে গণ্য হয়। প্রচলিত অর্থে আহলে সুন্নাত ওয়াল-জামা›আতের অনুসারীদেরকে সুন্নী বলে আখ্যায়িত করা হয়। বর্তমান বিশ্বে ৮০-৮৫ শতাংশ মুসলমান সুন্নী আকীদার অনুসারী। এ স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতাই রাসুলাল্লাহ (সা.)-এর দাবী তথা সাওয়াদে আজমের সত্যতা প্রমাণ করে।
আহলে সুন্নাত ওয়াল-জামা›আত সাহাবায়ে কেরামের ব্যাপারে সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ আস্থা পোষণ করে। আহলে সুন্নাত দ্ব্যর্থহীনভাবে স্বীকার করে যে, রাসুলাল্লাহ (সা.)-এর পর যে চারজন সাহাবি ক্রমানুসারে খেলাফত তথা উম্মতের নেতৃত্বের দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকেই ছিলেন সুপথপ্রাপ্ত এবং সুপথ-প্রদর্শক। উক্ত চারজন সাহাবির খেলাফতের ব্যাপারে সাহাবায়ে কেরামের ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সুতরাং এ চারজন খলিফার খেলাফতকে অমান্য করা স্পষ্ট ভ্রান্ততা। উপরন্তু তাঁদের খেলাফতের ব্যাপারে রাসুলাল্লাহ (সা.) ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন। সাফিনা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলাল্লাহ (সা.) বলেছেন- নবুয়্যাত-ভিত্তিক খেলাফত চলবে ত্রিশ বছর। এরপর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে রাজত্ব দান করবেন। (সুনানে আবু দাউদ : কিতাবুস সুন্নাহ, ৪৬৪৬)
ইসলামের ইতিহাসে ্রনববী আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত খেলাফতগ্ধ-এর চারজন খলিফা হলেন- ১.আবু বকর সিদ্দিক ইবনে আবি কুহাফা (রা.) খেলাফতকাল- ১১ হিজরি থেকে ১৩ হিজরি ২.উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) খেলাফতকাল- ১৩ হিজরি থেকে ২৩ হিজরি ৩.উসমান ইবনে আফফান (রা.)খেলাফতকাল- ২৩ হিজরি থেকে ৩৫ হিজরি ৪.আলী ইবনে আবি তালিব (রা.) খেলাফতকাল- ৩৫ হিজরি থেকে ৪০ হিজরি খোলাফায়ে রাশিদীনের প্রতি মর্যাদাপূর্ণ আস্থা পোষণ করার পরও আহলে সুন্নাত এমন দাবী করেনা যে, উক্ত চার খলিফা আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত বা এঁদের কোন ঐশী ক্ষমতা ছিল কিংবা রাসুলাল্লাহ (সা.) তাঁর ইন্তেকালের পূর্বে চার খলিফার মধ্যে কাউকে স্পষ্টভাষায় তাঁর উত্তরাধিকারীগ্ধ নির্ধারণ করে গেছেন। বরং আহলে সুন্নাত বিশ্বাস করে, মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মত উক্ত চার খলিফাকে যথাসময়ে নিজেদের শাসকের আসনে আসীন করেছে। যেহেতু চার খলিফার খেলাফতের উপর প্রায় সমস্ত সাহাবিদের ইজমা তথা ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এ ব্যাপারে রাসুলাল্লাহ (সা.) থেকে বিশুদ্ধ সনদের মাধ্যমে ইঙ্গিত বিদ্যমান রয়েছে, তাই আহলে সুন্নাত খোলাফায়ে রাশিদীনের খেলাফতকে বিশুদ্ধ এবং যথার্থ বলে স্বীকৃতি দেয়।
উম্মতের নেতৃত্বের ব্যাপারে শিয়া আকীদাভুক্ত মুসলমানদের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পুর্ণ ভিন্ন। আহলে সুন্নাত যেভাবে খোলাফায়ে রাশিদীনের খেলাফতের উপর আস্থাশীল, শিয়ারা তারচেয়ে কয়েক ধাপ এগিয়ে গিয়ে ইমামত নামক আরেকটি মতবাদের উদ্ভাবন করেছেন। শিয়া আকীদা অনুযায়ী, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পর আলী (রা.) এবং তাঁর বংশধর থেকে ৭ জন মতান্তরে ১২ জন ইমাম কিয়ামত পর্যন্ত উম্মতের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। তাঁরা মনে করেন যে, ইমাম ও ইমামতের ব্যাপারে রাসুলাল্লাহ (সা.)-এর ওসিয়ত রয়েছে। শিয়া মতাদর্শী আলিম আল্লামা আল-কামী আকাঈদুস সুদুকগ্ধ কিতাবের ১০৬ নং পৃষ্ঠায় বলেছেন- আমাদের অর্থাৎ শিয়াদের আকীদা হল, প্রত্যেক নবীর একজন উত্তরাধিকারী থাকেন। উক্ত নবী আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী তাঁকে উত্তরাধিকার দিয়ে যান। শিয়ারা আলী (রা.)-কে নবুয়্যাতের পর শেষ উত্তরাধিকারী বলে গণ্য করেন। হাদিসে বর্ণিত আছে, বনি ইসরাইলের একজন নবী ইন্তেকাল করলে আরেকজন নবী তাঁর স্থলাভিষিক্ত হতেন। শিয়াদের বিশ্বাস, যেহেতু সায়্যিদুনা মুহাম্মদ (সা.) সর্বশেষ নবী, অতএব তাঁর উত্তরাধিকারীই হবেন শেষ উত্তরাধিকারী। তাঁরা আলী (রা.)-কে উক্ত উত্তরাধিকারীর আসনে আসীন করেন। শিয়া আলিম আল্লামা মুহাম্মদ বাকির আল-মাজলিসি বিহারুল আনওয়ারগ্ধ কিতাবের ৩৯তম অধ্যায়/পরিচ্ছেদে বলেছেন- নিশ্চয়ই আলী (রা.) সর্বশেষ উত্তরাধিকারী। শিয়া আকীদা অনুযায়ী, ইমামতগ্ধ তত্ত্বটি কুরআন-হাদিসের ভাষ্যে গ্রন্থবদ্ধ এবং এ তত্ত্বে বিশ্বাস স্থাপন করা ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। শিয়া আলিম আল্লামা মুহাম্মদ হোসাইন আসলুশ শিয়াগ্ধ কিতাবের ৮৫ নং পৃষ্ঠায় বলেছেন- ইমামত হল নবুয়্যাতের মত একটি ঐশী অবস্থান। যেভাবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া-তা›আলা তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা তাঁকে নবুয়্যাত ও রিসালাতের জন্য নির্বাচিত করেন এবং তাঁকে আল্লাহর পক্ষ থেকে পাঠ (লিখিত নির্দেশ) স্বরূপ মু›জিজা দ্বারা সমর্থন করেন; সেভাবে আল্লাহ ইমামতের জন্য কাউকে নির্বাচিত করেন এবং লিখিত নির্দেশের মাধ্যমে তাঁর নবীকে আদেশ দেন, যেন ঐ (নির্বাচিত ব্যক্তিকে) নবীর পর মানুষের জন্য ইমাম নির্ধারণ করেন।
বর্তমানে শিয়াদের বৃহদাংশ (টুয়েল বার শিয়া) নামে পরিচিত। তাঁরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পরে ১২ জন ইমামকে উম্মতের দায়িত্বশীল বলে গণ্য করেন। ক্রমানুসারে ঐ বারজন ইমাম হলেন- ১.সায়্যিদুনা আলী ইবনে আবি তালিব (রা.) ২.ইমাম হাসান ইবনে আলী (রা.) ৩.ইমাম হোসাইন ইবনে আলী (রা.) ৪.ইমাম আলী ইবনে হোসাইন যাইনুল আবেদীন (রহ.) ৫.ইমাম মুহাম্মদ আল-বাকির (রহ.) ৬.ইমাম জা›ফর আস-সাদিক (রহ.) ৭.ইমাম মুসা আল-কাযিম (রহ.) ৮.ইমাম আলী আর-রিদ্বা (রহ.) ৯.ইমাম মুহাম্মদ জাওয়াদ ত্বকী (রহ.) ১০.ইমাম আলী হাদী (রহ.) ১১.ইমাম হাসান আল-আসকারী (রহ.) ১২.ইমাম মুহাম্মদ আল-মাহদী (আ.) সর্বশেষ ইমাম মুহাম্মদ আল-মাহদী হচ্ছেন সেই ইমাম যিনি কিয়ামতের পূর্বে উম্মতের নেতৃত্ব দিতে পৃথিবীতে আসবেন। (চলবে)
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ, অধ্যয়ণরত- (মাস্টার্স) রিলিজিয়াস স্টাডিজের অধীনস্থ ইসলামিক স্টাডিজ,
এয়ারফোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়, জার্মানী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।