পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
চার মাসের মাথায় আবারো পানির দাম বাড়িয়েছে ঢাকা ওয়াসা। আবাসিক ক্ষেত্রে দাম প্রতি ইউনিটে এক টাকা ৫১ পয়সা এবং শিল্প ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ৩ টাকা ৭২ পয়সা বাড়ানো হয়েছে। হঠাৎ উচ্চহারে দাম বাড়ানো সম্পর্কে ঢাকা ওয়াসার একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে ঢাকা ওয়াসা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে এবং চওড়া পাইপের সরবরাহ লাইন বসিয়েছে। এডিবির তাগিদ ছিল পানির দাম বাড়াতে হবে- যা হবে উৎপাদন খরচের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। পানির দাম বাড়ানোর ব্যাপারে বিশ্বব্যাংকেরও চাপ ছিল। অনেকটাই গোপনে পানির এই মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে ঢাকা ওয়াসা বলেছে, পনির উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় দাম বাড়িয়েও সংস্থাকে লোকশান গুনতে হচ্ছে। এসম্পর্কে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি গোলাম রহমান একটি দৈনিককে জানিয়েছেন, দাম বাড়ানোর পুরো দায়টা আসবে ভোক্তাদের উপরই। ঢাকা ওয়াসার অপচয়ের শেষ নেই। পানির পাইপের লিকেজের কারণে ভোক্তারা বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি আরো বলেছেন, ওয়াসার সিস্টেম লসের ব্যাপারে অনেক কিছু শোনা যায়। এগুলো কমানো গেলে পানির দাম বাড়াতে হবে না। তিনি মনে করেন, পানির দাম বাড়ানোর বেলায় ভোক্তাদের মতামতের মূল্য দেয়া উচিত। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এর নজির রয়েছে।
রাজধানীতে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে ঢাকা ওয়াসা। পানি নিয়ে রাজধানীবাসীর ভোগান্তি নতুন কিছু নয়। কোথাও হয়ত পানির সরবরাহ নেই। আবার দেখা যায়, পান করা দূরে থাক, পানি ব্যবহারেরও উপযোগী নয়। রাজধানীবাসী দীর্ঘদিন ধরে কোন না কোনভাবে পানির সংকটে রয়েছে। এই সংকট কোন কোনো তীব্র আকার ধারণ করে। তথন কোথাও কোথাও পানির জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় নারী-পুরুষদের। যখন সংকট দেখা দেয় তখন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দায়সারা বক্তব্য দেন। প্রকাশিত রিপোর্টগুলোতে দেখা যায়, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাবার কারণে পাম্পগুলো প্রয়োজনীয় পানি পাচ্ছে না। অন্যদিকে ভূউপরিস্থ পানির সরবরাহের আধার রাজধানীকে ঘিরে থাকা প্রকৃতিক নদীগুলো দখল-দূষণে বিপন্ন হয়ে রয়েছে। এই বাস্তবতায় কেবল ভূগর্ভস্থ পানির উপর ভরসা করে পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে গিয়ে তার অতিরিক্ত মূল্য জনগণকে দিতে হবেÑ এটা কোন কথা হতে পারে না।ওয়াসার অপচয় ও অর্থ লোপাটের নানা কাহিনী প্রায়শই মিডিয়ায় প্রকাশিত হচ্ছে। সেসব অপচয় ও চুরির বোঝা জনগণের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। তা না হলে নিয়মানুযায়ী বছরে একবার পানির দাম বাড়নোর কথা থাকলেও একবছরে কেন দুবার বাড়ানো হলো? তার আবার গোপনে। পানির দাম যদি বাড়াতে হয়, তবে জনগণকে যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে বাড়াতে অসুবিধা কোথায়?
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্বব্যাংক দাম বাড়াতে বলেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, জনগণের অসুবিধার কথা বিবেচনা না করে বিশ্বব্যাংকের কথা শুনতে হবে কেন? বিশ্বব্যাংক তো আরও অনেক প্রস্তাব দেয়, তার সবই কি গ্রহণ করা হয়? সরকার, সরকারি কর্মচারী কর্মকর্তাদের বেতন বাড়িয়ে যদি মনে করে দেশের সকল মানুষের সামর্থ বেড়েছে তবে তা নিতান্ত ভুল ধারনা। সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। আয়-উন্নতিতের ভাটা পড়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থাও নাজুক। সেই বাস্তবতায় ওয়াসার পানির মূল্যবৃদ্ধি গ্রহণযোগ্য নয়। বলার অপেক্ষা রাখে না, ভূগর্ভস্থ পানি তুলে নগরবাসীর পানির চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। এধরনের উৎপাদনে আনুসাঙ্গিক ব্যয় দিনদিন বাড়তেই থাকবে। সেকারণে পানির স্বাভাবিক প্রবাহের দিকে নজর দিতে হবে। এজন্য রাজধানীর চারপাশের নদ-নদীগুলোর নাব্যতা বৃদ্ধির দিকে নজর দেয়া জরুরি। বিদ্যমান বাস্তবতায় তীর সংরক্ষণ ও গভীরতা বাড়ানোর দিকে দৃষ্টি দেয়ার পাশাপাশি পানি দূষণমুক্ত ও নিরাপদ করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।