গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
ভয়ের দিন চলে গেছে পাল্টা আক্রমণের সময় এসে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের গুলির আঘাতে হয়তো আমাদের শোকের মিছিল আরও দীর্ঘ হতে পারে। কিন্তু আমরা ভয় পাই না। আপনারা গুলি করেন আর ভাবছেন যে আমরা ভয় পেয়ে গেছি। ভয়ের দিন চলে গেছে। আর কোন ধরনের হুমকি, গুলি করে জনগণকে ভয়ের রাজত্বের মধ্যে রাখতে পারবেন না। ভয়ের রাজত্ব শেষ হয়ে গেছে।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী নাগরিক পরিষদের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষিত সারা দেশব্যাপী যে কর্মসূচি চলছে সে কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ গাজীপুরের কর্মসূচি শুরু করার সময় পুলিশ বেপোরোয়া ভাবে আক্রমণ করেছে। আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছে এবং অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়েছে, যুবদলের অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যুবনেতা জাকির, শাহজাহান, নাসির, মাসুম আরিফ, মারুফ তারা গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এই কর্মসূচি ছিল খুবই শান্তিপূর্ণ শোক মিছিল। আজকে কেন গুলি করা হলো? আজ সেই সমস্ত মানবাধিকার কর্মীরা কোথায়? যারা বক্তব্য রাখছেন শেখ হাসিনার আমলে গুম খুনের তথ্য ভুয়া, বিএনপি ভুয়া তথ্য দিচ্ছে। তারা কোথায়? ভোলায় যখন রহিম, নূরে আলম, মুন্সিগঞ্জে শাওন এবং নারায়ণগঞ্জের শাওনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় তখন এই সমস্ত মানবাধিকার কর্মীরা তারা কোথায় থাকে। সবাই না কিছু সংখ্যক সরকারের অতি আপনজন তারা নিশ্চুপ ছিল।
বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, আজ জনপদের পর জনপদ রক্ত ঝরছে। রক্ত ঝরছে রহিমের, শাওনের, নুর আলমের তখন এই সমস্ত মানবাধিকার কর্মীদের মুখ থেকে একটা শব্দ বের হয় না। অথচ বিদেশী পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিলেন এগুলো চলে আসছে বিএনপির আমল থেকে। বিএনপি মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে এদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা কি নি¤œ শ্রেণীর মানুষ? আমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারবো না তাদের ভাবখানা এরকমই। তারা ফ্যাসিবাদের পূজা করবে। এর প্রতিবাদ করা যাবে না। এটা বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী দলের নেতাকর্মীরা মরে যাবে, জীবন দিবে, গুলি বুকে নিয়ে মরে যাবে, কিন্তু মেনে নেবে না। এ সমস্ত বর্ণচুরা মানুষ যারা ফ্যাসিবাদকে প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে জায়েজ করতে চাচ্ছে তাদেরকে আমরা উন্মোচন করবই। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম থামাতে পারবে না কেউ।
রিজভী বলেন, এই সরকার জুলুমসাহী কায়েম করেছে। মানুষের সকল অধিকার খাঁচার মধ্যে বন্দী করে রেখেছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আপনারা মনে করেছেন আমরা নিশ্চুপ থাকবো? আপনারা (আওয়ামী লীগ) হুমকি দেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে বাধা দেন হামলা করেন গ্রেফতার করেন, গুলি করে হত্যা করেন। আমাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আমাদের নিরন্তন সংগ্রাম চলবে। আর কতদিন নিশ্চুপ থাকবো? এবার পাল্টা আক্রমণের সময় এসে গেছে। যারা গণতন্ত্রের পক্ষে তারা প্রত্যাঘাত করবে সেই সময় এসে গেছে। তারা এখন প্রতিটি অন্যায় অবিচারের প্রত্যাঘাত করবে। এ ফ্যাসিবাদ ও নাৎসিবাদের বিরুদ্ধে শপথ নিয়ে নামবে। আপনার (হাসিনা) হুমকি আপনার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এটা ঠেকাতে পারবেনা।
তিনি আরও বলেন, তারা (সরকার) বলে আমরা নাকি পতাকাকে অপমান করছি। মিশরের কায়রোতে, তিউনেশিয়ায় গণতন্ত্রের জন্য পতাকা হাতে নিয়ে মানুষ রাস্তায় নেমেছিল। আমরা সেই গণতান্ত্রিক মানুষের মতো লাঠির আগায় পতাকা নিয়ে নামবো। কারণ এ পতাকা আমাদের উদ্দীপনা জাগায়। এই পতাকা যেকোনো অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমাদের প্রেরণা যোগায়। তাই আগামীতে দেশের গণতন্ত্র মুক্তির সংগ্রামের মিছিলে দেশমাতার মুক্তির মিছিলে প্রত্যেক জনের হাতেই এই পতাকা থাকবে। এবং প্রতিটি দেশে যেভাবে পতাকা থাকে পাকা বাঁশের আগায় বাধা তেমনি প্রত্যেক জনের হাতে পাকা বাঁশের আগায় পতাকা বাধা থাকবে। এখান থেকে আমাদেরকে বিচ্যুত করতে পারবেন না।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাসান মাহমুদের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, আপনারা এখন দুর্বল অবস্থায় আছেন। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রোডাকশনে আপনাদের অস্ত্রধারী ক্যাডার ছাড়া উপায় নাই। আপনাদের জনগণের কাছে আসার কোন মুখ নাই। গণতন্ত্র কবর, প্রতিটি সেক্টরে লুটপাট বিদেশে অর্থ পাচারের কারণে আপনারা জনগণের কাছে মুখ পান না।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোঃ কামরুজ্জামান শামীমের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন তাতী দলের যুগ্ন আহবায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির,গাজীপুর জেলা বিএনপির সহ সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সবুজ, প্রচার সম্পাদক সাংবাদিক রাশিদুল হক প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুলাহ আল নাইম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।