পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
১০ ডিসেম্বর ঢাকায় শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হবে জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গ্রেফতার, আক্রমণ করে কেউ গণসমাবেশ রুখতে পারবে না। জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দীন টুকু ও সিনিয়র সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম নয়নকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে গতকাল সোমবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশ করতে চেয়েছি। এই গণসমাবেশ কিসের জন্য? কিছু দাবির প্রেক্ষিতে। সমাবেশের জন্য আমরা পল্টনে অনুমতি চেয়েছি, কারণ নেতাকর্মীদের নিরাপত্তার জন্য। কিন্তু আপনারা সে কথার গুরুত্ব দিচ্ছেন না। অন্যদিকে যুবলীগের কাউন্সিল সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য এই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সারা ঢাকা শহর সাধারণ মানুষের চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল। অথচ আমরা বাংলাদেশের বিরোধী দল আমরা কর্মসূচি করতে পারবো না। কর্মসূচির আগে সারা বাংলাদেশে গ্রেফতার অভিযান চলে। এক দেশে দুই আইন চলতে পারে না। আমরা সেটা চলতে দিতে পারি না। ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় শান্তিপূর্ণ গণসমাবেশ হবে। এই গণসমাবেশ কেউ রুখতে পারবে না।
এসময় বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন হাসান, সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানি, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।
এর আগে সকালে ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে রাজধানীর বেইলি রোড এলাকায় লিফলেট বিতরণ করেন রুহুল কবির রিজভী। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, কেন্দ্রীয় নেতা কাজী আবুল বাশার, আ ক ম মোজাম্মেল হক, ওমর ফারুক সাফিন, আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভুইয়া জুয়েল, অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল, ডা. জাহেদুল কবির, মেহবুব মাসুম শান্ত সহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।
লিফলেট বিতরণ শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নানা ধরনের তৎপরতা চালাচ্ছে। তারা আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণে বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ঢাকা বিভাগের গণসমাবেশ হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। যেভাবে দেশের ৯টি বিভাগে ইতোমধ্যে গণসমাবেশ হয়েছে। তেমনইভাবে ঢাকা বিভাগের গণসমাবেশ হবে। এটা তো জাতীয় সমাবেশ না। এখানে ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীরা আসবেন। কিন্তু সরকার সেটাকে ব্যাহত করতে চাচ্ছে। এই কর্মসূচিতে হানা দেওয়া হচ্ছে। এসব তো করে ফ্যাসিস্ট, কর্তৃত্ববাদী ও নাৎসী সরকার। আজকে সেটাই করছে আওয়ামী লীগ সরকার।
রিজভী বলেন, আজকে এসব চক্রান্ত ও গ্রেপ্তার করে বিএনপির কর্মসূচিতে জনতার ঢল থামানো যাবেনা। আমরা যাদেরকে লিফলেট দিচ্ছি তারা বলছেন আমাদের সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন। এই যে তাদের মনের আকুতি ও আকাক্সক্ষা সেটা কিন্তু সরকার বন্ধ করতে পারবেনা। তিনি বলেন, ঢাকা বিভাগের গণসমাবেশ হলো আমাদের নিয়মিত কর্মসূচি ও আন্দোলনের অংশ। আমাদের আরো কর্মসূচি আসবেন।
এদিকে বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার শেষ সময়ে এসে চরম মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছে। একদিকে চলছে গায়েবী এবং মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতারের হিড়িক, অন্যদিকে অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতাদের গোয়েবলসীয় মিথ্যাচারকেও হার মানিয়েছে। রোববার চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার বক্তব্যে তিনি লজ্জা না পেলেও গোটা জাতি লজ্জা পেয়েছে। তিনি বলেছেন ‘বিএনপি ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আসতে চায়, বিএনপি’র আমলের দুর্নীতি ও খুনের রাজনীতে দেশ ফিরে যাবে না’। তিনি আরও বলেছেন ‘গণতন্ত্র আছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে’। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলতে চাই-২০১৪ এর বিনা ভোটের সরকার এবং ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের রাতে নিশিরাতের ভোট ইতিহাস সারাবিশে^ নজীরবিহীন এক ঘটনা। শেখ হাসিনার এহেন ভোট চুরির ঘটনায় সারাবিশে^র মানুষ বিস্ময়ে হতবাক। এখন গণতন্ত্রের ছিটেফোটাও বাংলাদেশে নেই। মানুষের ভোটের অধিকার নেই, নেই কথা বলার অধিকার। বিচার বিভাগ এবং প্রশাসন চলছে এক ব্যক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর। দেশে দুর্নীতি ও লুটপাটের প্রতিযোগিতা এখন সীমাহীন। আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কুইক রেন্টাল, পর্দা ও বালিশের নামে দুর্নীতির নতুন নতুন মহাকাব্যের কথা না হয় বাদই রাখলাম, ফরিদপুরের জেলা পর্যায়ের ছাত্রলীগের এক নেতার ২ হাজার কোটি টাকা পাচারের কথা কি শেখ হাসিনা জানতেন না? এটা তো ছোট্ট একটি ঘটনা, এর চেয়েও অনেক বড় দুর্নীতির মহাযজ্ঞ চলছে শেখ হাসিনার আমলে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল বিএনপিকে নিয়ে খুনের কথা বলছেন, উনি তো চট্টগ্রামে একটা মারলে দশটা মারার নির্দেশ দিয়েছিলেন ছাত্রলীগ-যুবলীগকে। এটা তো প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি।
তিনি বলেন, হামলা-মামলা-গ্রেফতার করে জনগণের আন্দোলনকে দমানো যাবে না। দেশের মানুষের অধিকার ও গণতন্ত্র ফেরাতে বিএনপিসহ গোটা জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। যেকোন ত্যাগের বিনিময়ে হারানো গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার শপথ নিয়েছে তৃণমূল। কোন বাধাই বিএনপি’র কর্মসূচি ঠেকাতে পারবে না। এসময় তিনি সারাদেশে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার বিএনপি নেতাকর্মীদের তথ্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, ৩০ নভেম্বর রাত থেকে ৫ ডিসেম্বর দুপুর পর্যন্ত ৫ দিনে ১ হাজার ৩১৫জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।