চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
প্রিয় রাসুল (সা.) এর নাম শুনলে দরুদ পড়া তাঁর প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন। রব্বে কারীম রাসুলের প্রতি দরুদ পাঠের নির্দেশ দিয়ে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ নবীর প্রতি রহমত নাযিল করেন এবং তাঁর ফেরেশতাগণও নবীর জন্য রহমতের দোয়া করে। হে মুমিনগণ! তোমরাও নবীর প্রতি রহমতের দোয়া কর এবং তাঁকে যথাযথভাবে সালাম জানাও।’ (সুরা আহযাব : ৫৬) রাসুলের প্রতি দরুদ পাঠের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ প্রেরণ করবে আল্লাহ তায়ালা তার ওপর দশবার রহমত বর্ষণ করবেন। (সহীহ মুসলিম)।
অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করে আল্লাহ তায়ালা তার প্রতি দশবার রহমত বর্ষণ করেন, তার দশটি পাপ ক্ষমা করা হয় এবং তার জন্য মর্যাদার দশটি স্তর বৃদ্ধি করে দেয়া হয়। (নাসায়ি) রাসুলের প্রতি দরুদ পাঠকারী ব্যক্তি কেয়ামতের দিন রাসুলের নিকটে থাকবে। এ সম্পর্কে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, কেয়ামত দিবসে লোকদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই আমার অধিক নিকটতম হবে, যে ব্যক্তি তাদের মধ্যে আমার প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠ করবে। (তিরমিজি)।
রাসুলের কোনো উম্মত যদি রাসুল (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠ করে তাহলে তা ফেরেশতারা রাসুলের নিকট পৌঁছে দেয়। এ সম্পর্কে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, মহান আল্লাহর কিছু সংখ্যক ফেরেশতা রয়েছেন, তারা পৃৃথিবীতে বিচরণ করতে থাকেন এবং আমার উম্মতের পক্ষ থেকে আমার কাছে সালাম পৌঁছে দেয়। (নাসায়ি ও দারেমী) অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমরা আমার প্রতি দরুদ পেশ কর। তোমরা যেখানেই থাক না কেন, নিশ্চয়ই তোমাদের দরুদ আমার কাছে পৌঁছবে। (নাসায়ি)।
কারো সম্মুখে রাসুলের নাম উচ্চারিত হলে তার উচিত হবে রাসুলের প্রতি দরুদ পাঠ করা। এ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ঐ ব্যক্তির নাক ধুলায় মলিন হোক (সে অপমানিত হোক) যার সম্মুখে আমার নাম উচ্চারিত হয়েছে, অথচ সে আমার প্রতি দরুদ পাঠ করেনি। (তিরমিজি) হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ঐ ব্যক্তি বড় কৃপণ, যার সম্মুখে আমার নাম উচ্চারণ করা হয়, অথচ সে আমার প্রতি দরুদ পাঠ করে না। (তিরমিজি)।
রাসুলের রওজা মোবারকের কাছে গিয়ে তাঁর প্রতি দরুদ পাঠ করলে রাসুল (সা.) তা সরাসরি শুনতে পান। এ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আমার কবরের কাছে এসে আমার প্রতি দরুদ পাঠ করে, আমি তা সরাসরি শুনতে পাই। আর যে ব্যক্তি দূর থেকে আমার প্রতি দরুদ পাঠ করে, তা আমার নিকট পৌঁছে দেয়া হয়। (শোয়াবুল ঈমান)।
দোয়া কবুল হওয়ার জন্য দরুদ পাঠ করা জরুরি। এ সম্পর্কে হজরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই দোয়া আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী শূন্যস্থানে ঝুলন্তভাবে অবস্থান করতে থাকে। এর কিছুই ওপরের দিকে ওঠে না অর্থাৎ গৃহীত হয় না, যতক্ষণ না তুমি তোমার রাসুল (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠ কর। (তিরমিজি)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।