Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অবশেষে রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হলো ইউক্রেনের চার প্রদেশ

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৯:০৬ পিএম

অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার অন্তর্ভূক্ত হলো অভিযানরত রুশ বাহিনী ও রুশভাষী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইউক্রেনের চার প্রদেশ খেরসন, ঝাপোজ্জিয়া, দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক । শুক্রবার মস্কোর ঐতিহাসিক রেড স্কয়্যারে এক উৎসবমুখর পরিবেশে এই চার প্রদেশের নেতৃবৃন্দ রাশিয়ায় যোগদান সম্পর্কিত নথিপত্রে স্বাক্ষর করেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। -বিবিসি

স্বাক্ষর হয়ে যাওয়ার পর রেড স্কয়্যারের মঞ্চে উঠে পুতিন বলেন, দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও ঝাপোরিজ্জিয়ার জনগণ তাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ থেকে তারা সবাই রাশিয়ার নাগরিক। আমরা তাদের সবাইকে রাশিয়ান ফেডারেশনের পক্ষ থেকে উষ্ণ অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমি নিশ্চিত রাশিয়ার আইনসভাও এই চার প্রদেশকে সমর্থন করবে এবং এসব প্রদেশে বসবাসকারী লোকজনকে সাদরে বরণ করে নেবে। দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও ঝাপোরিজ্জিয়ার লাখ লাখ মানুষের ইচ্ছে এবং স্বপ্ন এই যোগদানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ও এবং রাশিয়ার আইনসভা— দুমা (নিম্নকক্ষ) ও ফেডরেশন কাউন্সিল (উচ্চকক্ষ) সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের আবেগের প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল।

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক জোট ন্যাটোতে ইউক্রেনের যোগদানকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের জেরে চলতি বছর ২৬ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। পুতিন স্বয়ং এই অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ৮ মাসের অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন প্রায় ৬ হাজার রুশ সেনা। শুক্রবার বক্তব্য প্রদানের আগে অভিযানে নিহত রুশ সেনাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন পুতিন ও ইউক্রেনের চার প্রদেশের নেতারা। বক্তব্যের শুরুতেও ইউক্রেনে অভিযানরত রুশ সেনা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সম্মান জানান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, প্রিয় বন্ধু ও সহকর্মীরা, আজ আমি সম্মান জানাতে চাই আমাদের সেনা সদস্যদের, যারা নিজেদের জীবন বাজি রেখে মাতৃভূমির মর্যাদা, সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াই করছে। আমি সম্মান জানাতে চাই আমাদের সেনা সদস্যদের বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তানদেরও। মাতৃভূমির জন্য তারা যথেষ্ট ত্যাগ স্বীকার করছেন এবং তারা জানেন, আমরা কী জন্য লড়াই করছি।

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের ‘লোভী’ ও ‘বিদ্বেষপূর্ণ’ উল্লেখ করে পুতিন বলেন, রাশিয়ার সমৃদ্ধি পশ্চিম সহ্য করতে পারে না। এ কারণে তারা সবসময়ই চায় রাশিয়া ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাক এবং আমরা যেন তাদের সামনে নতজানু হতে বাধ্য হই। রাশিয়াকে নিজেদের উপনেবেশ বানাতে চায় পশ্চিম, আর আমাদেরকে বানাতে চায় তাদের দাশ। ইউক্রেনকে সামনে রেখে রাশিয়ার বিরুদ্ধে তার যে হাইব্রিড যুদ্ধ চালাচ্ছে, সেটিও তাদের এই দুরভিসন্ধিমূলক পরিকল্পনার অংশ। কিন্তু তারা কখনও সফল হবে না। কারণ রাশিয়ার জনগণ দেশপ্রেমিক ও আত্মমর্যাদাসম্পন্ন। অতীতেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমের যাবতীয় পদক্ষেপের জবাব দিয়েছে রুশ জনগণ, ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।

ইউক্রেনকে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি আলোচনায় ফিরে আসার আহ্বানও জানান পুতিন। তবে সেইসঙ্গে তিনি বলেন, লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, ঝাপোরিজ্জিয়া ও খেরসনের জনগণ নিজেদের ইচ্ছায় রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন এবং তাদের আকাঙ্ক্ষার প্রতি রাশিয়া অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল।সুতরাং শান্তি আলোচনায় যদি এসব অঞ্চলকে নিজেদের বলে দাবি করার সুযোগ আর ইউক্রেনের নেই। এই চার প্রদেশ এখন থেকে রাশিয়ার অংশ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাশিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ