পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানী ঢাকার যানজট এখন প্রতিদিনের সমস্যা। সকাল, বিকাল, রাত সব সময়ই রাস্তায় বের হলেই পড়তে হয় যানজটে। আর এই যানজটে পড়ে নষ্ট হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। গাড়ির জ্বালানি খরচ হয়। কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় নগরবাসীকে। এই যানজটে পড়ে ঢাকায় বসবাসকারী লোকজনকে স্বাস্থ্যগত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। যানজটের কারণে শিক্ষার্থীরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
যানজটে আটকে থাকা লোকজনকে রাস্তায় আটকে থেকে যানবাহনের কালো ধূয়া ও গণপরিবহনে বসে গরমে অনেকে অসুস্থ হওয়ার কথাও শোনা যায়। তবে রাজধানীর এই বড় সমস্যা যানজটের কবল থেকে বাঁচতে দাওয়াই হিসেবে কাজ করতে পারে স্কুলবাস পদ্ধতি। এজন্য ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর দুই সিটি করপোরেশন এলাকাতেই স্কুলবাস পদ্ধতি চালু করা প্রয়োজন। প্রত্যোকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্কুলবাস চালু করা হলে রাজধানীর যানজট অনেকাংশে কমে আসবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করছেন, প্রতিটি বিদ্যালয়ে স্কুলবাস চালু হলে যাজধানীর যানজট কমে আসবে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের ব্যক্তিগত গাড়ি অথবা গণপরিবহন ব্যবহার না করে স্কুলবাসে যাতায়াত করবে। এতে সড়কে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য প্রাইভেট গাড়ির চাপ কমবে। তাতে যানজটও কমবে।
ঢাকা শহরের নামিদামি স্কুলগুলোতে স্কুলের সামনে শত শত গাড়ি ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই স্থানে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। একজন শিক্ষার্থীর জন্য একটি গাড়ি ব্যবহার করা হয়। পরিবেশ রক্ষায় ও যানজট কমাতে স্কুল বাস চালু করা প্রয়োজন। এর ফলে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার কমে যাবে। স্কুলবাস সার্ভিস চালু হলে পরিবেশ দূষণ কমবে, যানজট কমবে, জ্বালানি সাশ্রয় হবে বলেও মনে করেন তারা।
অভিভাবকরা বলছেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকার প্রত্যেকটি বিদ্যালয় যদি স্কুলবাস পরিচালনা করে তাতে সহজে শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করতে পারবে। সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে স্কুলবাস পরিচালনা হলে অভিভাবকদের মাঝে তাদের সন্তানদের নিয়ে যাতায়াতে কোন ধরনের ভয় থাকবে না। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করার কথাও বলেন তারা।
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় একই সাথে কয়েকটি স্কুলের পরীক্ষা শেষ হয়। একই সাথে সব স্কুলের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় বের হলে রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হয়। গণপরিবহনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নিতে আসা প্রাইভেটকারগুলো রাস্তায় জটলা সৃষ্টি করে স্থবির হয়ে বসে থাকে। এই যানজট সারাতে লেগে যায় কয়েক ঘণ্টা। একই অবস্থা দেখা গেছে রাজধানীর আরও কয়েকটি স্কুলের সামনে।
ইতোমধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন ৪টি স্কুলে পাইলট প্রকল্প হিসেবে স্কুলবাস চালু হচ্ছে। শুরুতে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে চালু হলেও পর্যায়ক্রমে সকল স্কুলেই এই সার্ভিস চালু করা হবে। ডিএনসিসির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। ডিএনসিসি আওতাধীন এলাকার স্কুলগুলো হলো, চিটাগং গ্রামার স্কুল-ঢাকা, স্কলাস্টিকা স্কুল, স্যার জন উইলসন স্কুল ও বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল টিউটরিয়াল। গত ৭ সেপ্টেম্বর গুলশানে ডিএনসিসির নগর ভবনে অনুষ্ঠিত ‘স্কুলবাস সার্ভিস প্রবর্তন সংক্রান্ত প্রাথমিক কর্মকৌশল নির্ধারণ’ বিষয়ক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরে স্কুলবাস চালু হলে ব্যাপক হারে যানজট কমে যাবে। এর ফলে দূষণ কমবে, কার্বন নিঃসরণ অনেকাংশে কমবে। আমরা অংশীজনদের সঙ্গে কথা বলছি। অনেক শিক্ষক একমত পোষণ করেছেন। এটি বাস্তবায়নে অভিভাবকদের সদিচ্ছা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সবার আন্তরিক সহযোগিতায় প্রথম ধাপে চারটি স্কুলে পাইলট প্রকল্প হিসেবে স্কুলবাস চালু করা হবে। অনেক স্কুলে দেখা যায় একজন শিক্ষার্থীর জন্য একটি গাড়ি ব্যবহার করা হয়। এর ফলে অসংখ্য ব্যক্তিগত গাড়ি রাস্তায় চলাচল করছে। স্কুলগুলোতে বাধ্যতামূলকভাবে স্কুলবাস চালু হলে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার ব্যাপকহারে কমে যাবে। ছেলে-মেয়েরা অনেকে একসঙ্গে বাসে যাওয়া-আসা করলে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হবে, সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় হবে। ছেলে-মেয়েরা আত্মবিশ্বাসী হবে। তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, সন্তানরাই বাবা-মায়ের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ। স্কুল বাসগুলোতে সিসি ক্যামেরাসহ আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে বাচ্চাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। অ্যাপসের মাধ্যমে ট্র্যাকিং ব্যবস্থা থাকবে। একই সঙ্গে স্কুল বাসের চালক ও স্টাফদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হবে। একটি হটলাইন নাম্বার থাকবে, যেটির মাধ্যমে অভিভাবকরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করতে পারবেন। ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যাওয়া-আসা নিয়ে দুশ্চিন্তা না করতে হয় সেক্ষেত্রে নিরাপদ স্কুলবাসই চমৎকার সমাধান হবে। সময়, নিরাপত্তা ও খরচ সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই বাস সার্ভিস চালু করা হবে। আমরা চাই একটি টেকসই সমাধান হবে। একটি বাসে নির্দিষ্ট রুটের স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করবে। এর ফলে খরচ অনেক কমে আসবে।
মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সামসুন্নাহার বলেন, রাজধানীর প্রত্যেকটি স্কুলের সামনে যানজট হয়। এমন সমস্যা প্রতিদিন ঘটে। কিন্তু এর কোনো স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না। যারা গাড়ি নিয়ে আসেন তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্কুলের সামনে বা আশে পাশে রেখে বসে থাকেন এ কারণেও যানজট বাড়ে। সব এলাকার জন্য স্কুলবাস চালু হলে আমাদের জন্যও সুবিধা হবে। আমরা সন্তানকে স্কুলে প্রবেশ করিয়ে বাইরে অপেক্ষা করি এটাও করতে হবে না।
রাজধানীর অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষক আবু নাসের ইনকিলাবকে বলেন, আমাদের স্কুলের কয়েকটি গাড়ির সাহায্যে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়। অনেকেই ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার দিয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুলে নিয়ে আসেন। তবে সব শিক্ষার্থীদের স্কুল বাস সিস্টেমের আওতায় আনতে পারলে স্কুলের সামনের গাড়ির জটলা কমে আসবে। যানজটও কমবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।