পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি সেই সাথে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে চট্টগ্রাম নগরীর বেশিরভাগ এলাকা। বৃষ্টিপাত থেমে যাওয়ায় পানি সরতে শুরু করেছে। আর তাতে সড়কে ক্ষয়-ক্ষতির চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠছে। পানিতে তলিয়ে যাওয়া সড়ক ভেঙেচুড়ে একাকার। উন্নয়ন কাজের জন্য যেসব সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়েছিল সেসব সড়ক রীতিমত কোথাও ডোবা আবার কোথাও চাষযোগ্য জমির রূপ ধারণ করেছে। কাদা পানিতে সয়লাব এসব সড়ক ও আশপাশের এলাকা। খানাখন্দে ভরে গেছে প্রধান প্রধান সড়ক থেকে নগরীর অলিগলির রাস্তাও। তাতে যানবাহন চলতে গিয়ে থমকে যাচ্ছে, বাড়ছে যানজট। রাস্তায় নেমেই দুর্ভোগের মুখোমুখি হচ্ছেন নগরবাসী।
গত শুক্রবার থেকে নগরীতে কখনো টানা কখনো থেমে থেমে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে থাকে। সেই সাথে প্রবল জোয়ারে নগরীর অনেক এলাকায় পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বলা হচ্ছে এমন পানিবদ্ধতা গত ৮ বছরের রেকর্ড। নতুন নতুন এলাকায় এবার পানি উঠেছে। পানির উচ্চতাও অতীতের চেয়ে বেশি ছিল। নগরীতে চলছে পানিবদ্ধতা নিরসনে ছয় হাজার কোটি টাকার মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন। এই প্রকল্পের জন্য প্রধান প্রধান খালগুলোতে সীমানা দেয়াল তোলা হচ্ছে। কাজের সুবিধার জন্য খালে বাঁধ দিয়ে রীতিমত রাস্তা তৈরি করা হয়েছে।
সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে বার বার তাগাদা দেয়া হলেও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সিডিএ এসব বাঁধ অপসারণ করতে পারেনি। অন্যদিকে পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই এমন অজুহাতে সিটি কর্পোরেশনও বর্ষার আগে নগরীর খাল-নালায় বড় ধরণের কোন সংস্কার কাজ করেনি। ফলে নগরীর পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। আর তাই সামান্য বৃষ্টিতে সড়কে পানি জমে যায়। দেখা দেয় পানিবদ্ধতা। বর্ষণের সময় জোয়ার হলে পানিবদ্ধতা আরো প্রকট হয়।
দিনের পর দিন সড়কে পানি জমে থাকে। আর তার উপর চলে যানবাহন। তাতে সড়কে ব্যাপক খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায় সড়ক জুড়ে বড় গর্ত। যানবাহনের চাকার আঘাতে এসব গর্ত আরো বড় হয়ে কোথাও ডোবার আকার নিয়েছে। নগরীর প্রধান সড়কের সিমেন্ট ক্রসিং থেকে ইপিজেড, বারিক বিল্ডিং হয়ে আগ্রাবাদ থেকে টাইগার পাস পর্যন্ত চলছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ। এজন্য সড়কের চলছে খোঁড়াখুঁড়ি।
সিমেন্ট ক্রসিং মোড় থেকে ইপিজেড পর্যন্ত সড়কের একপাশে চলছে নালা নির্মাণকাজ। আগে থেকে সড়কে কাটাকাটির ফলে বৃষ্টিতে সড়কের ওই অংশ ডোবায় রূপ নিয়েছে। সড়কে হাঁটু সমান কাদা পানি, ভারি যানবাহন চলাচলের সময় সেই কাদা পানি উপচে পড়ছে পাশের দোকানপাট ও বাসাবাড়িতে। প্রধান সড়কের কিছু অংশ ছাড়া প্রায় পুরোটাই খানাখন্দে ভরা।
জাকির হোসেন রোড, আরাকান রোডসহ নগরীর আরো কয়েকটি সড়কে উন্নয়নের খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। সেসব সড়কের অবস্থাও বেহাল। টানা বর্ষণে নগরীর লালখান বাজার, জিইজি, মুরাদপুর, ষোলশহর, বহদ্দারহাট, অক্সিজেন, বায়েজিদ সড়ক, চকবাজার, বাদুরতলা শোলকবহর, বারইপাড়া, কেবি আমান আলী রোড, ডিসি রোড, আগ্রাবাদ, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, শান্তিবাগ, গুলবাগ, মুহুরিপাড়া, মনসুরাবাদ, হালিশহরের বিভিন্ন সড়কের পাশাপাশি বহদ্দারহাট থেকে কাপ্তাই রাস্তার মাথা হয়ে কালুরঘাট সড়কে পানিবদ্ধতা হয়। এসব সড়কেও পানি সরে যাওয়ার পর খানাখন্দ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। কর্ণফুলী সংযোগ সড়ক, স্টেশন রোড, মেরিনার্স রোডসহ নগরীর নিউ মার্কেট, লালদীঘি, আন্দরকিল্লা, সদরঘাট, পাথরঘাটা, এনায়েত বাজার এলাকায়ও সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়। প্রধান সড়কের পাপাশি নগরীর অলিগলি, বিভিন্ন আবাসিক এলাকার সড়কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নগরীর পোর্ট কানেকটিং রোড, বিমানবন্দর সড়কের সিমেন্ট ক্রসিং থেকে গুপ্তখালসহ কয়েকটি সড়ক সম্প্রতি সংস্কার করায় বৃষ্টির পানিতে তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
তবে গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে প্রায় সড়কের ক্ষতি হয়েছে। এসব সড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়ে যানজট হচ্ছে। নগরীর বন্দর এলাকার সড়কে রাতে-দিনে যানজট। একই অবস্থা পোর্ট কানেকটিং রোড, আগ্রাবাদ এক্সেস রোডসহ প্রধান প্রধান সড়কে। তাতে আমদানি-রফতানিকৃত পণ্য পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে। রাস্তায় চলতে গিয়ে গর্তে আটকে যাচ্ছে ভারি যানবাহনে চাকা। ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও। চালকেরা বলছেন, রাস্তায় গর্ত কোন কোন এলাকায় ডোবার আকার নিয়েছে। তলিয়ে যাওয়া সড়কে গাড়ি চলতে গিয়ে খানাখন্দ আরো বাড়ছে। সড়কে কাদা পানির প্লাবন। রাস্তায় নেমেই পথচারী থেকে শুরু করে সবাইকে দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হিমশিম খাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর ভেঙে যাওয়া সড়কে জরুরি সংস্কার কাজ শুরু হবে। এখন টানা বর্ষণ এবং জোয়ারে সড়কের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ চলছে।
গত বছর বর্ষার প্রথম ১৭ দিনে ৩৬.২৭ কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি হয়। এর আগে ২০২০ সালো বর্ষায় ক্ষতি হয় ১৭০ কিলোমিটার সড়ক। এবারের বর্ষার প্রথম সপ্তাহে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। মহানগরীর পাশাপাশি মহানগরী থেকে জেলার বিভিন্ন মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কেও বৃষ্টিপাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।