পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম মহানগরীতে যানজট স্থায়ী রূপ নিচ্ছে। প্রধান প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলি পর্যন্ত বিস্তৃত হচ্ছে তীব্র যানজট। সড়কে বিশৃঙ্খলা সেইসাথে অসহনীয় যানজটে নিত্য দুর্ভোগের শিকার নগরবাসী। স্থবির হয়ে পড়েছে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানীখ্যাত বন্দরনগরীর সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রফতানি কার্যক্রম।
একাধিক মেগা প্রকল্পসহ উন্নয়ন প্রকল্পে ধীরগতি, নগরজুড়ে সড়কে সমন্বয়হীন, অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি এবং ফুটপাত ও সড়ক দখলের কারণে স্বাভাবিক যানবাহন চলাচল মারাত্মক বিঘ্নিত হচ্ছে। রিক্সা, অটোরিক্সাসহ অবৈধ যানবাহনের ছড়াছড়ি, যত্রতত্র বাস-টেম্পো দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা এবং ট্রাফিক আইন মেনে না চলার কারণে এমন বিশৃঙ্খল অবস্থা চলছে।
নগরীতে নেই কেন্দ্রীয় কোন বাস ও ট্রাক টার্মিনাল। শত শত বাস-ট্রাক রাখা হচ্ছে সড়ক দখল করে। গণপরিবহনে বড় বাসের চেয়ে ছোট যানবাহনের আধিক্য বেশি। এতে নগরীর প্রায় প্রতিটি সড়কে বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করছে। ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও যানজট কমছে না। সড়কে শৃঙ্খলা আনতে সিটি কর্পোরেশনেরও কার্যকর কোন উদ্যোগ নেই। ফলে দিনে দিনে যানজট তীব্র হচ্ছে।
মহানগরীর প্রধান সড়কের বিমানবন্দর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার অংশে চলছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ। প্রকল্পে ধীরগতির কারণে সড়কজুড়েই খোঁড়াখুঁড়ি চলছে টানা প্রায় চার বছর। প্রকল্পের কাজে নেই কোন সমন্বয়। একদিকে সড়কের মাঝে পাইলিং অন্যদিকে দু’পাশে চলছে নালা-নর্দমা সংস্কারের কাজ। কোথাও আবার পাইলিংয়ের পাশাপাশি সড়কের দু’পাশের অবৈধ স্থাপনা সরানো হচ্ছে। কোথাও আবার সরানো হচ্ছে পানি, গ্যাস ও বিদ্যুতের লাইন। এর ফলে সড়কটিতে যানজট এখন স্থায়ী রূপ নিয়েছে। কিছু অংশে পাইলিংয়ের কাজ শেষ হলেও সড়ক সংস্কার করা হয়নি। সড়কের বড় বড় গর্তে ভারী যানবাহন আটকে যানজট হচ্ছে।
এ সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে চট্টগ্রাম বন্দর এবং পতেঙ্গা এলাকায় গড়ে ওঠা বেসরকারি কন্টেইনার ডিপোগুলোতে ভারী যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ভারী যানবাহনের ভারে নগরীর মাঝিরঘাট, বারিক বিল্ডিং থেকে শুরু করে ইপিজেড হয়ে পতেঙ্গা পর্যন্ত যানজট স্থায়ী রূপ নিয়েছে। যানবাহনের তীব্র জট বন্দর ফ্লাইওভার থেকে শুরু করে টোল রোডে। বন্দরকেন্দ্রিক ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই খুলে দেয়া হয় সিটি আউটার রিং রোড। কিন্তু মহানগরীর সাথে সংযোগ সড়ক নির্মাণ না হওয়ায় সিটি আউটার রিং রোডের সুফল মিলছে না। চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সংযোগ সৃষ্টিকারী গুরুত্বপূর্ণ পোর্ট কানেকটিং রোডের সংস্কার ও সম্প্রসারণ কাজ ছয় বছরেও শেষ হয়নি। সড়কের বন্দর-নিমতলা থেকে হালিশহর পর্যন্ত কাজ শেষ হলেও হালিশহর নয়াবাজার থেকে সাগরিকা পর্যন্ত কাজ চলছে। এ অংশে ভারী যানবাহন আটকে যানজট হচ্ছে। এর প্রভাবে যানজট বিস্তৃত হচ্ছে সাগরিকা, অলংকার হয়ে সিটি গেইট পর্যন্ত।
মহানগরীর উত্তরপ্রান্তের প্রবেশপথ অক্সিজেন এবং মুরাদপুর এলাকায়ও সড়কজুড়ে তীব্র যানজট হচ্ছে। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ এবং ভাঙাচোরা সড়কের কারণে সেখানে বেহাল অবস্থা। একই অবস্থা কালুরঘাট এলাকায়। প্রায় শত বছরের পুরাতন কালুরঘাট রেল সেতুতে একমুখী যানবাহন চলাচল করছে। আবার ট্রেন চলাচলের সময় সেতুতে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এর ফলে কালুরঘাট সেতুর দুই প্রান্তে যানজট এখন নিত্যদিনের ঘটনা। যানজট ঠেলে কালুরঘাট হয়ে মহানগরীতে আসতে যানবাহনগুলোকে ভাঙাচোরা সড়ক পার হতে হচ্ছে। নগরীর বহদ্দারহাট থেকে সিঅ্যান্ডবি রাস্তার মাথা হয়ে কালুরঘাট পর্যন্ত সড়কটির সম্প্রসারণ কাজ চলছে সম্ভুক গতিতে। প্রায় ছয় বছর ধরে সড়কের কিছু অংশে যানবাহন চলাচল বন্ধ। এর প্রভাবে যানজট কালুরঘাট, চান্দগাঁও হয়ে বহদ্দারহাট, মুরাদপুর পর্যন্ত বিস্তৃত হচ্ছে।
মহানগরীর ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা বাকলিয়ার যানজট কমাতে বাকলিয়া এক্সেস রোডের নির্মাণ কাজ চলছে কয়েক বছর ধরে। সড়কের মাঝখানে একটি ভবনকে ঘিরে এ প্রকল্পটি থমকে যায়। এর ফলে চকবাজার, ডিসি রোড থেকে শুরু করে বৃহত্তর বাকলিয়ার প্রতিটি সড়কে তীব্র যানজট হচ্ছে। নগরীর অন্যতম প্রবেশপথ কর্ণফুলী সেতু এলাকায় বৈধ-অবৈধ অসংখ্য বাস ও টেম্পু স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। সেতুর উত্তরপ্রান্তের কয়েক বর্গ কিলোমিটার এলাকা দক্ষিণ চট্টগ্রামমুখী গণপরিবহনের দখলে। সেতু পার হয়ে নগরীতে আসা এবং মহানগরী থেকে সেতু পর্যন্ত যেতে পরিবহনগুলোকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে। দেশের অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ ও আছদগঞ্জের প্রতিটি সড়কে পণ্যবাহী ভারী যানবাহনের জট নিত্যদিনের। চাক্তাই খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় নৌপথে পণ্য পরিবহন কমে গেছে। বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ীরা সড়কপথে পণ্য পরিবহন করছেন। এর খেসাররত দিচ্ছে চাক্তাই, খাতুনগঞ্জের বাসিন্দারা। তীব্র যানজটে সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি এলাকাবাসীর জীবনযাত্রাও স্থবির হয়ে পড়েছে।
বন্দরকেন্দ্রিক একাধিক সড়কে উন্নয়ণ কাজ অব্যাহত থাকায় আমদানি-রফতানি পণ্যমুখী যানবাহন মহানগরীর বিভিন্ন সড়ক হয়ে চলাচল করছে। এ কারণে কদমতলী, টাইগারপাস, মনসুরাবাদ, দেওয়ানহাট এলাকাসহ কয়েকটি সড়কে যানজট স্থায়ী রূপ নিয়েছে। মুরাদপুর, কদমতলী, বহদ্দারহাট ও দেওয়ানহাটে ছোটবড় চারটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হলেও এর সুফল মিলছে না। হাতেগোনা কিছু ব্যক্তিগত যানবান ও অটোরিক্সা চলছে এসব ফ্লাইওভারে। এছাড়া এসব ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে যানজট আরও তীব্র হচ্ছে। যানবাহনের তুলনায় মহানগরীতে এমনিতে সড়কের সংখ্যা কম। তার উপর ব্যস্ততম বেশিরভাগ সড়কের ফুটপাত বেদখল হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও ফুটপাতের পসরা সড়ক পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। সড়ক দখল করে রাখা হচ্ছে যানবাহন, নির্মাণ সামগ্রী।
এর ফলে যানবাহন চলাচলের পাশাপাশি পথচারীদের রাস্তা পারাপারেও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। নগরীতে নেই পর্যাপ্ত ফুটওভার ব্রিজ। যে কয়টি ফুটওভার ব্রিজ আছে সেগুলো বেদখল হয়ে গেছে। ফলে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হতে হচ্ছে পথচারীদের। সিটি কর্পোরেশনের হিসেবে, নগরীতে অবৈধ রিক্সার সংখ্যা প্রায় সোয়া লাখ। এর পাশাপাশি নগরীর অলিগলিতে চলছে ব্যাটারিচালিত অবৈধ রিক্সা ও টমটম। ছোট গাড়ির আধিক্যে বাড়ছে বিশৃঙ্খলা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।