বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প কর্মকর্তাদের বিদেশ প্রশিক্ষণ বাবদ ব্যয় কমানো হচ্ছে ২ কোটি ৬ লাখ টাকা। প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) আপত্তির মুখে এ ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৫০ লাখ টাকা। অথচ প্রস্তাব ছিল ২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ এ খাতে ব্যয় কমছে ৮০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এছাড়া বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত ব্যয় প্রস্তাব করায় সেগুলোও কমিয়ে প্রকল্প প্রস্তাবটি সংশোধনের জন্য দেওয়া হয়েছে ফেরত।
আর সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ সাধনের মধ্যেও বৈদেশিক ঋণের বর্ণিত প্রকল্পে গাড়ি বিলাসের প্রস্তাব করেছে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ। এক্ষেত্রে ৬টি দামি জিপ গাড়ি, ৪টি পিকআপ, ১টি মাইক্রোবাস এবং ৬টি মোটর সাইকেল কিনতে চাওয়া হয়েছে। এই ১৭টি গাড়ির জন্য ব্যয় প্রস্তাব ৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। তবে এক্ষেত্রে কোন জোর আপত্তি দেয়নি পরিকল্পনা কমিশন। কৌশলে শুধু বলা হয়েছে অর্থ বিভাগের উন্নয়ন প্রকল্পের জনবল নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ড্রাইভারের সংখ্যার ভিত্তিতে যানবাহনের সংখ্যা ও ব্যয় নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়া সে অনুযায়ী পেট্রোল, অয়েল ও লুব্রিকেন্ট, গ্যাস ও জ্বালানির ব্যয় ধরতে হবে। বিশ্বব্যাংকের ঋণে ‘সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়কটি চার লেন মহাসড়কে উন্নীতকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পে করা হয়েছে এমন প্রস্তাব।
এপ্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পে যে কোনো অপচয় কমাতে বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজন ছাড়া এরকম দামি গাড়ি বিদেশ প্রশিক্ষণ বিষয়ে একনেকে নেওয়া হবে না।
সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লহ নুরী বলেন, মোটেও গাড়ি বিলাসের প্রস্তাব নয়। ১ কোটি টাকার গাড়ি এখন বিলাসী গাড়ি নয়। প্রকল্পের গাড়ি যত চলবে, তত তদারকি বাড়বে, এই জিনিশটা বুঝতে হবে।
প্রকল্পটির ব্যয় প্রস্তাব পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ৬টি জিপ কেনার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এতে প্রতিটি গাড়ির দাম পড়বে ১ কোটি ৫ লাখ টাকা। প্রকল্প পরিচালক (পিডি), অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রকল্প পরিচালক (এপিডি), উপপ্রকল্প পরিচালক (ডিপিডি) এবং ৩ জন প্রকল্প ম্যানেজারের জন্য এসব গাড়ির প্রস্তাব দেওয়া হয়। এছাড়া ৪ টি পিকআপ কেনার জন্য ধরা হয়েছে ২ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এতে প্রতিটির দাম পড়বে ৫৮ লাখ টাকা। একটি মাইক্রোবাসের দাম ধরা হয়েছে ৪৫ লাখ টাকা। এছাড়া ৬টি মোটর সাইকেলের দাম ধরা হয়েছে ১২ লাখ টাকা। এতে একেকটির দাম পড়বে ২ লাখ টাকা করে। প্রকল্প প্রস্তাবে থোক হিসাবে রাজস্ব খাতে গাড়ি ভাড়া বাবদ ৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। এক্ষেত্রে সভায় বলা হয়েছে মূলধন খাতে গাড়ি ক্রয়ের প্রস্তাব করা হলেও রাজস্ব খাতে গাড়ি ভাড়ার সংস্থান যৌক্তিক নয়। রাজস্ব খাতে গাড়ি ভাড়া বাবদ প্রস্তাবিত ২ কোটি ৩১ লাখ টাকা কমিয়ে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার প্রাক্কলনের সুপারিশ দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) সত্যজিত কর্মকার বলেন, সরকারিভাবে এখন গাড়ি কেনা বন্ধ রয়েছে। তবে ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) সংশোধন হয়ে এলে আবারও পর্যালোচনা করার সুযোগ থাকবে।
সূত্র জানায়, ‘সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮৭২ কোটি ৩২ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১ হাজার ২৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৯১ হাজার টাকা এবং বিশ্বব্যাংকের ঋণ থেকে ২ হাজার ৬০৪ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর ২৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় বলা হয়, প্রকল্পের আওতায় বৈদেশিক প্রশিক্ষণের জন্য সরকারি খাতে ২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা এবং স্থানীয় প্রশিক্ষণে সরকারি খাতে ৩০ লাখ টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে, যা যৌক্তিকভাবে কমানো যেতে পারে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বৈদেশিক প্রশিক্ষণ ব্যয় ২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রশিক্ষণের বিষয় ও অংশ গ্রহণকারী বিভাগ সংস্থাগুলোর প্রতিনিধির সংখ্যাসহ পুনর্গঠিত ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে। ফলে এ খাত থেকে ব্যয় কমে যাচ্ছে ২ কোটি ৬ লাখ টাকা। প্রকল্পে বিভিন্ন পরামর্শক সেবা খাতে মোট ১০৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে পিইসি সভায় বলা হয়, মাত্র ৪২ দশমিক ৯৮ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের জন্য এত বেশি পরিমাণ পরামর্শক সেবার ক্রয় বিষয়টি যৌক্তিক নয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।