গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেয়া বক্তব্যে ‘ঘোড়াও হাসবে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আওয়ামী লীগই সুষ্ঠু নির্বাচন করে-লন্ডনে বিবিসিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া সাক্ষাতকারের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে মঙ্গলবার বিকালে খিলগাঁওয়ে এক সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, আওয়ামী লীগের আমলে যে নির্বাচন হয় সেই নির্বাচন নাকী সবচেয়ে সুন্দর সুষ্ঠু হয়। আপনার এই কথা শুনে, ঘোড়াও হাসবে। দেশের প্রতিটি মানুষ জানে আমাদের আবদুস সালামের ভাষায় সবচেয়ে ভুয়া এই কথা। সারা বাংলাদেশে একটাই শ্লোগান উঠবে শেখ হাসিনা ভুয়া।
মির্জা ফখরুল বলেন, আসলে হাসিনা আজকে নেই। তিনি বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে অনেক দূরে চলে গেছে। আজকে কথা নয়, সময় হচ্ছে কাজের। সমস্ত দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। এই সরকার জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে, তারা আজকে আমাদের সমস্ত অর্জনগুলোকে ধবংস করে দিয়েছে।
খিলগাঁও জোড় পুকুর মাঠের সামনে মহানগর জোন-২ খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মুগদা থানার যৌথ উদ্যোগে জ্বালানি তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যের ঊধর্বগতি এবং ভোলায় নুরে আলম, আব্দুর রহিম ও নারায়নগঞ্জে শাওন প্রধান হত্যাসহ পল্লবীসহ সারাদেশে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে এই সমাবেশ হয়। খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মুগদার বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার নেতা-কর্মীর খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, মির্জা আব্বাস ও আফরোজা আব্বাসের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে মিছিল নিয়ে এই সমাবেশে অংশ নেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি করছে, আজকে লক্ষ লক্ষ টাকা পাচার করছে, বিদেশে ঘরবাড়ি তৈরি করছে। আর আমাদের মানুষের তারা হত্যা করছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, সেলিমা রহমানকে(স্থায়ী কমিটির সদস্য) আঘাত করে, বরকত উল্লাহ বুলুকে (দলের ভাইস চেয়ারম্যান) হত্যার জন্য আঘাত করে, তাবিথ আউয়ালকে(নির্বাহী কমিটির সদস্য) হত্যার জন্য আঘাত করে, ভেলায় নুরে আলম, আব্দুর রহিম ও নারায়নগঞ্জে শাওন প্রধানকে হত্যা করে এই দেশের আন্দোলনকে দমন করে রাখা যাবে না। বাংলাদেশের মানুষ বরাবরই অন্যায়ের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে। আজকেও তারা জেগে উঠছে।
সরকারের পদত্যাগের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, পদত্যাগ করে একটি নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে সকলের গ্রহনযোগ্য একটা নির্বাচন করতে হবে। নতুন পার্লামেন্ট হওয়ার পর সরকার গঠন হবে।
আসুন আমরা সেই লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হই। সকল রাজনৈতিক দল ও সকল মানুষকে এক করে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাই এবং দূর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই হাসিনার সরকারের পতন ঘটিয়ে আমরা জনগনের সরকার গঠন করব।
এ সময়ে বিএনপি মহাসচিব নিজেই শ্লোগান ধরেন- ‘দাবি এক দফা এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ’, ‘ফয়সালা হবে কোন পথে রাজপথে রাজপথে’ ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’।
সভা-সমাবেশে প্রশাসন অনুমতি দিতে গড়িমসি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘ এই দেশ কারো বাবার রাজত্ব নয়। এই দেশের মানুষের রক্ত দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। আমি তাদেরকে পরিস্কার করে বলতে চাই, এই সরকারই শেষ সরকার নয়। এরপরও সরকার কিন্তু থাকবে। আপনাদের ছবিও প্রিন্ট করা আছে, ভিডিও করা আছে, রেকর্ড করা আছে।
আমি এই কয়েকদিনে আমার কর্মীদের যে অটুট মনোবল দেখেছি আমার ভালো লেগেছে। আমরা জানি, এখন থেকে যদি আমাদের ওপরে কখনো আক্রমন হয় যে, আমাদের কর্মী প্রত্যাঘাত করতে প্রস্তুত রয়েছে। আমরা এখন থেকে হামলা হলে প্রতিরোধ করব। আমরা এই এলাকা থেকে সন্ত্রাস অপসারণের আন্দোলন শুরু করবো-এই হোক আজকের শপথ।’’
মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস বলেন, ওরা আমাদের নেতা-কর্মীকে পাখির মতো গুলি করে মারবে। আরে তোমরা আমাদের গুলি করে মারবা, আর আমরা ভেরেন্ডা বাজাবো নাকী। এতো সোজা না।”
আমরাও গর্জে উঠবো, আমরা শহীদ জিয়ার সৈনিক, আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সৈনিক, আমরা তারেক রহমানের সৈনিক। আমাদের প্রত্যেকের কাছে আছে ধানের শীষ। এই ধানের শীষ দিয়ে আমরা লড়াই করব। এই লড়াইয়ে আমরা জিতেই নেবো। এই লড়াই হবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের শেষ লড়াই। হয় বাঁচব, না হয় মরব।
শান্তিপূর্ণভাবে এই সমাবেশ অনুষ্ঠানের জন্য মির্জা আব্বাস ও আফরোজা আব্বাস নেতা-কর্সীদের প্রতি অভিনন্দন জানান।
মহানগর দক্ষিনের যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুস মৃধার সভাপতিত্বে সমাবেশে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম আবুল খায়ের ভুঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, মীর সরফত আলী সপু, শিরিন সুলতানা, মহানগর দক্ষিনের রফিকুল আলম মজনু, ইশরাক হোসেন, হাবিবুর রশিদ হাবিব, মোশাররফ হোসেন খোকন, লিটন মাহমুদ, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসকে জিলানী, রাজীব আহসান, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদারসহ মহানগরের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।