Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিমু হত্যা মামলা: স্বামীসহ দুজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১০:৪৮ এএম

অভিনয়শিল্পী রাইমা ইসলাম শিমু হত্যা মামলায় স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল ও তার বন্ধু আব্দুল্লাহ ফরহাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত। রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব হাসানের আদালত এ চার্জশিট গ্রহণ করেন। ঢাকার সিজেএম আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবীর বাবুল বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।

তিনি জানান, দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত। এখন মামলাটি বিচারের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হবে।

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, চলতি বছরের (২০২২ সাল) ১৬ জানুয়ারি সকাল সোয়া ৮টায় নোবেলের বাসায় যান তার বন্ধু ফরহাদ। এসময় ফরহাদকে ড্রইংরুমে বসতে দিয়ে নোবেলকে জানান শিমু। নোবেল গিয়ে ফরহাদের সঙ্গে দেখা করে রান্নাঘরে চা বানাতে যান। এদিকে বেডরুমে বসে মোবাইল দেখতে থাকেন শিমু। নোবেল আবার সেই মোবাইল দেখতে চান। কিন্তু শিমু দেখাতে অস্বীকৃতি জানান। এনিয়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও ধস্তাধস্তি হয়। হইচই শুনে ফরহাদ উঠে শিমুর রুমে যান। তখন নোবেল ফরহাদকে বলেন, শিমুকে ধর, ওকে আজ মেরেই ফেলব। কথামতো ফরহাদ ধরতে গেলে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন শিমু। এরপর নোবেল প্রথমে শিমুর গলা ধরতে গেলে তাকেও ধাক্কা মেরে ফেলে দেন। এরপর ফরহাদকে শিমুর গলা ধরার জন্য বলেন নোবেল। ফরহাদ গলা আর নোবেল দুই হাত চেপে ধরেন। একপর্যায়ে নিচে পরে যান শিমু। এরপর নোবেল শিমুর গলার ওপর পা দিয়ে দাঁড়ান। এতে প্রস্রাব করে দেন শিমু। এক সময় শিমু নিস্তেজ হয়ে পড়েন। এসময় নোবেল ফরহাদকে দেখতে বলেন শিমু বেঁচে আছে কি না। ফরহাদ শিমুর হাত দেখে বলেন, শিমু বেঁচে নেই।

চার্জশিটে আরও উল্লেখ করা হয়, শিমুর মৃত্যুর পর নোবেল ও ফরহাদ মরদেহ লুকানোর পরিকল্পনা করতে থাকেন। একপর্যায়ে নোবেল রান্নাঘর থেকে দুটি পাটের বস্তা এবং ফ্রিজের ওপর থেকে মিষ্টির প্যাকেট বাঁধার প্লাস্টিকের রশি আনেন। ফরহাদ শিমুর মাথা উঁচু করে ধরেন। আর নোবেল একটি বস্তার ভেতর শিমুর মাথার অংশ এবং আরেকটি বস্তায় পায়ের অংশ ভরেন। এরপর প্লাস্টিকের রশি দিয়ে দুটি বস্তা একত্রে সেলাই করে দেন নোবেল। পরে শিমুর মরদেহ নোবেলের গাড়ির পেছনের সিটে ওঠান ফরহাদ। এরপর কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন আলীপুর ব্রিজ এলাকার একটি ঝোপে মরদেহ ফেলে দেন তারা।

গত ১৭ জানুয়ারি ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে অজ্ঞাত হিসেবে চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর (৩৫) বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে তার পরিচয় মিলছিল না। পরে ওই দিন রাতে তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে নাম-পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গত ১৮ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় নোবেল ও তার বাল্যবন্ধুর বিরুদ্ধে মামলা করেন শিমুর ভাই হারুনুর রশীদ। এ ছাড়া মামলায় বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

এ মামলায় ওই দিন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগম তাদের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে এ মামলার দুই আসামি গত ২০ জানুয়ারি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বর্তমানে তারা কারাগারে আটক রয়েছেন। মামলাটি তদন্ত করে গত ২৯ আগস্ট কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম দুজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বামী


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ