নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী : হাতে নেই ক্যামেরা, তবুও খালি হাতে টীমমেটদের জড়ো করে ছবি ফ্রেমবন্দি করছেন স্যামী! কখনোবা মোবাইল ক্যামেরা ছাড়াই তুলছেন সেলফি! উৎসব উদ্যাপনে এই নুতনত্ব নিয়েই হাজির রাজশাহী কিংস অধিনায়ক! ১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে তাসকিনকে মিড উইকেটে পুল করে ফরহাদ রেজার ডাবলসের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাট শূন্যে ছুড়ে ফেলে দাঁড়ালেন, ডাগ আউট থেকে দৌড়ে আসা টিমমেটদের থামিয়ে তুললেন সেলফি’র শ্যাডো! ৯ বল হাতে রেখে তামীম-গেইলদের চিটাগাং ভাইকিংসকে হারিয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে ওঠার আনন্দটা যে এভাবেই করলেন স্যামী। ২০১২’র টি-২০ বিশ্বকাপ ট্রফি জিতে গ্যাংনাম ড্যান্সে উৎসব উদযাপনে নেতৃত্বটা দিয়েছেন এই স্যামীই, ২০১৬ টি-২০ বিশ্বকাপ ট্রফি উপযাপনেও ছিল উইন্ডিজ অধিনায়ক স্যামীর অভিনবত্ব।
এমন উৎসবটা তাকেই মানায়। মাঝারিমানের একটি দল নিয়ে খুব বেশি আশা করেনি রাজশাহী কিংস ফ্রাঞ্চাইজিও। প্রথম ৫ ম্যাচে ৪ হারে আসর থেকে ভালোয় ভালোয় বিদায়ের উপায় খুঁজতে থাকা সেই দলটিই কিনা টানা ৪ জয়ে অন্য এক দলে পরিনত। নেতৃত্ব দিতে হয় সামানে থেকে, রংপুরের বিপক্ষে ১৮ বলে ৪৪ রানের অবিচ্ছিন্ন ইনিংসে কিংবা খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে ৩৪ বলে ৭১ রানে অসম্ভব সাধনে নিজের সামর্থ এবং দায়িত্ববোধের কথা দিয়েছিলেন জানিয়ে। গতকাল এলিমিনেটর ম্যাচে স্কোরশিটে ৫৭ উঠতে ৬ উইকেট হারিয়েও হতোদ্যম নন স্যামী। ৫৪ বলে ৮৬ রানের লক্ষ্যটা মোটেও সহজ ছিল না। সেই দুরূহ টার্গেটটাই সহজ করে দিয়েছেন স্যামী। মিরাজকে নিয়ে ৭ম জুটিতে ২০ বলে ৩৭ এবং ফরহাদ রেজাকে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ৮ম জুটিতে ২৫ বলে ৪৯ রানে নেতৃত্বটা যে দিয়েছেন তিনিই।
১৪৩’র জবাবে শুরুটা করেছিলেন তিনি আক্রমণাত্মক ঢংয়েই। ১২তম ওভারে নবীর প্রথম তিন বলকে বাউন্ডারি উৎসব করে সেই যে শুরু, ১৬তম ওভারে শুভাশিষকে উপর্যুপরি ৩ বলে তিন বাউন্ডারিতে দলকে জয়ের বন্দরে প্রায় পৌছে দিয়েছেন স্যামী। ১৮তম ওভারে মোহাম্মদ নবীকে লং অনের উপর দিয়ে ছক্কায় ২৩ বলে ফিফটি উদযাপন করে ইনিংস টেনে নিয়েছেন ৫৫ পর্যন্ত (২৭ বলে ৭ চার ২ ছক্কা)।
প্রথম ১১ ম্যাচে মাত্র ১টি’র বেশি ম্যাচে খেলার সুযোগ না পাওয়ায় উপেক্ষার যন্ত্রণায় দগ্ধ হয়েছেন কেসরিক উইলিয়ামস নামের পেস বোলার। ড্রেসিংরুমে রক সঙ্গীত পরিবেশনে ৩ দিন আগে চিটাগাং ভাইকিংসের বিপক্ষে করেছেন দারুণ বোলিং (২/১১)। ইনিংসের প্রথম বলে তামীমকে ফিরিয়ে দেয়া সেই ক্যারিবিয়ান এলিমিনেটর ম্যাচে খেলার সুযোগ পেয়ে করেছেন টুয়েন্টি-২০ ক্যারিয়ার সেরা বোলিং (৪/১১)। ডুয়াইন স্মিথকে ঝটপট (০) ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি প্রথম স্পেলে (২-০-৩-১)। শেষ স্পেলে (২-০-৮-৩) তামীম, রাজ, তাসকিন তার শিকার! ২৪টি বলের মধ্যে ১৭টিই করেছেন ডট! ব্যাটিং অর্ডারে গেইলকে তিন নম্বরে নামিয়ে এনে সুফল পেয়েছিলেন তামীম। ফ্রাঙ্কলিনের ফুলটসে লং অনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে আসার আগে ৩০ বলে ৫ ছক্কা, ২ বাউন্ডারিতে ৪৪ রানের ঝড়ো ইনিংস উপহার দিয়েছেন। মিরাজকে পর পর ২ বলে লং অন, লং অফে এবং ধ্রæবকে উপর্যুপরি ২ বলে ছক্কায় মাতিয়েছেন। তামীমের সঙ্গে দারুন বোঝাপড়ায় দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৫০ বলে ৭৪ রানে রেখেছেন অবদান। তবে এমন একটি দিনে বিপিএল ইতিহাসে এক আসরে রেকর্ড ৬ষ্ঠ ফিফটি উদযাপনের দিনে (৪৬ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৫১) তামিমের মুখের হাসি কেড়ে নিয়েছে লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান এবং বোলাররা। কেসরিক উইলিয়ামসকে কাভারের উপর দিয়ে খেলতে যেয়ে এক্সট্রা কভাবে বড় অসময়েই ক্যাচ দিয়ে এসেছেন চিটাগাং ভাইকিংস অধিনায়ক। বিপিএলে আলো ছড়ানো এই বাঁ হাতি ওপেনার মুশফিকুর, মাহামুদুল্লাহ’র পর হাজার রান করেছেন পূর্ণ। আর ১০টি রান করতে পারলে এক আসরে সর্বোচ্চ (২০১২ সালে) বরিশাল বার্নাসের আহমেদ শেহজাদের ৪৮৬ রানকে করতে পারতেন তামীম। বিপিএলে এক আসরে ৫’শ রানের মাইলস্টোনের স্বপ্নটাও কেড়ে নিয়েছে তার টিমমেটরা। চিটাগাং ভাইকিংসের ব্যাটিংয়ে ছন্দপতন শুরু গেইলের ফিরে যাওয়ার মধ্য দিয়ে। শেষ ৫৬ বলে ৬০ রানে ৭ উইকেটের পতন ঘটেছে। ¯øগের ৩০ বলে সেখানে ৩০ রানে থামতে হয়েছে। অথচ কি জানেন, শেষ ৩০ বলে ৪৩ রানের টার্গেট ৯ বল হাতে রেখে কি অনায়াসেই না পার করেছে রাজশাহী কিংস! সবার আগে ক্রিকেটারদের শতভাগ সম্মানী পরিশোধে উপর্যুপরি দ্বিতীয়বার প্রশংসিত দৃস্টান্ত রেখেও হতাশ হতে হলো চিটাগাং ভাইকিংস ফ্রাঞ্চাইজিকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।