২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
ক্রোমোসোমের সমস্যার জন্য টার্নার সিনড্রোম হয়। মানুষের শরীরের দেহকোষে ৪৬টি ক্রোমোজোম থাকে। মেয়েদের শরীরে ২টি ‘এক্স’ ক্রোমোজোম থাকে। এই অসুখে দেখা যায় একটি ‘এক্স’ ক্রোমোজোম আছে। ফলে বাইরে থেকে দেখতে মেয়েদের মতো হলেও স্বাভাবিক মেয়েদের মতো বৈশিষ্ট্য এদের থাকে না। প্রতি ২৫০০ জনের ১ জনের এ সিনড্রোম দেখা যায়।
উপসর্গ : টার্নার সিনড্রোমে বিভিন্ন উপসর্গ থাকে। এর মধ্যে আছে :
১। রোগিণী দেখতে অপেক্ষাকৃত খাটো হয়।
২। প্রথম তিন বছর স্বাভাবিক বৃদ্ধি হয়। এরপর বৃদ্ধি কমে যায় এবং বয়ঃসন্ধিতে এসে স্বাভাবিক বৃদ্ধি আর হয় না।
৩। যোনি, স্তন স্বাভাবিক থাকে না। অনেক ছোট থাকে।
৪। বগলে এবং যৌনাঙ্গে চুল গজায় না।
৫। ওভারি ঠিকমতো কাজ করে না। ফলে ইস্ট্রোজেন প্রজেস্টেরন হরমোন তৈরি হয় না।
৬। শিশু অবস্থায় এদের বার বার মধ্যকর্ণে প্রদাহ হয়। ফলে অনেক সময় শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়ে যায়।
৭। চওড়া বুক থাকে এবং নিপল স্বাভাবিক অবস্থানে থাকে না।
৮। হার্টে মারমার থাকে এবং রক্তচাপ বেশি থাকতে পারে।
৯। ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
ডায়াগনসিস : চিকিৎসক রোগী দেখেই টার্নার সিনড্রোম সন্দেহ করতে পারেন। রোগী সাধারণত ৫ ফুটের কম হয় এবং ওভারি থাকে না। অনেক বাবা-মা চিকিৎসকের কাছে মেয়েকে নিয়ে আসেন মাসিক শুরু না হওয়ার জন্য। তারপর পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর টার্নার সিনড্রোম ধরা পড়ে। একেবারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ক্যারিওটাইপিং করা হয়।
চিকিৎসা : টার্নার সিনড্রোমের চিকিৎসা একটু জটিল। বয়ঃসন্ধি পর্যন্ত একজন এন্ডোক্রাইনোলজিস্টের অধীনে চিকিৎসা হওয়া প্রয়োজন। গ্রোথ হরমোন ইনজেকশন দিয়ে কিছু ক্ষেত্রে ভালো ফল পাওয়া গেছে। ইস্ট্রোজেন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি দিলে সমস্যার তীব্রতা কমে যায়। উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্টের সমস্যার জন্য কার্ডিওলজিস্ট দেখানো উচিত। বার বার মধ্যকর্ণের প্রদাহের জন্য ইএনটি ¯েপশালিস্ট দেখানো যেতে পারে। টার্নার সিনড্রোমের রোগীরা গর্ভধারণ করতে পারে না। কিন্তু এদের জরায়ু ও যোনী যদি স্বাভাবিক থাকে তবে কৃত্রিম পদ্ধতিতে গর্ভধারণ সম্ভব। টার্নার সিনড্রোম কোনো অভিশাপ নয়। ক্রোমোজোমের এক ধরনের ত্রুটিই এর জন্য দায়ী। আশা করা যায় চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে টার্নার সিনড্রোমের উন্নত চিকিৎসা বের হবে।
ষ ডা. মো. ফজলুল কবির পাভেল
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।