পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজের সময় কংক্রিটের গার্ডার চাপায় দুই শিশুসহ পাঁচজন নিহত হয়। মর্মান্তিক এ ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এ কাজে অব্যবস্থাপনায় দুর্ঘটনার দায় সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা কেউ নিচ্ছেন না। তাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে এ ধরণের উন্নয়ন প্রকল্পের সার্বিক নিরাপত্তার দিকটি নিয়ে। নির্মাণকাজে সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে দুই ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়। কাজ শুরুর আগে এবং কাজ চলাকালে। এছাড়া দুর্ঘটনা ঘটে গেলে এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা থাকার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু এর কোনো ব্যবস্থার দেখা মেলেনি বিআরটি প্রকল্পে। বিআরটি প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিকুল ইসলাম প্রকল্পের সার্বিক দায়িত্বে থাকলেও তিনি দায়িত্বে অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ বার বার পাশ কাটিয়ে গেছেন। যদিও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না গ্যাঝুবা গ্রুপ করর্পোরেশনের (সিজিজিসি) বলছে, বক্স গার্ডার স্থানান্তরের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা জমা দেয়া হয়েছে অনেক আগেই। সে অনুযায়ীই কাজ চলছিল। কিন্তু ১৪ আগস্ট রাতে পুলিশ কাজে বাধা দেয়। পরের দিন ১৫ আগস্ট সরকারি ছুটির দিন তাই প্রকল্প পরিচালক সাইফুল ইসলাম ওইদিন রাস্তা ফ্রি থাকবে বলে দুপুর ২টার পর কাজের নির্দেশ দিয়েছেন। তাই প্রশ্ন উঠেছে, কাজের জন্য নির্ধারিত ১৪ আগস্ট রাতের পরিবর্তে কারো ইন্ধনে বা ষড়যন্ত্রে গার্ডার স্থানান্তরের কাজ ১৫ আগস্ট নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
নগর বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের প্রফেসর ড. হাদিউজ্জামান বলেছেন, এ ধরণের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার পেছনে শুধু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ওপর দায় চাপিয়ে সরকারি কর্মকর্তারা নিজেদের দায় এড়িয়ে চলতে পারেন না। ঠিকাদার ফাঁকি দিচ্ছে কি-না, কাজ নিয়ম মেনে মানসম্মত উপায়ে চলছে কি-না তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পরামর্শক ও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার। এবং এজন্য তাদের পেছনে বড় অঙ্কের ব্যয় হচ্ছে। তাই তাদের দায়িত্ব পালনের এই গাফিলতির বিষয়টি তদন্তে উঠে আসা দরকার। এই ঘটনা তদন্তে যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে সেখানে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা থাকায় সেই তদন্ত কতোটা নিরপেক্ষ হয়েছে কি-না তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তদন্ত হতে হবে নিরপেক্ষ। এখানে যাদের জবাবদিহিতা দেয়ার কথা তারাই যদি কমিটিতে জায়গা পায় তাহলে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণটি বের হয়ে আসবে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কারো ওপর দায় চাপানোই সমাধান নয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিজিজিসি চায়নিজ প্রতিষ্ঠান। তারা দেশিয় প্রতিষ্ঠান দিয়ে কাজ করাচ্ছে। দেশিয় সাব-কন্ট্রাক্ট পাওয়া প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা বা তাদের দিয়ে অন্য কেউ ষড়যন্ত্র করছে কি-না তাও খতিয়ে দেখতে হবে। পাশাপাশি প্রকল্প পরিচালককে কাজের সময় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বা সুরক্ষা ব্যবস্থাপনা ছিল কি-না এবং ওই দিন কাজের জন্য নির্ধারিত ছিল কি-না তাও পর্যবেক্ষণ করার দায়িত্ব ছিল। এই দুর্ঘটনায় প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের এড়ানোর সুযোগ নেই। পাশাপাশি সাধারণত এ ধরণের কাজ চলাকালে সুরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা কী কী নেয়া হয়েছে, তাও জানাতে হয়। সেটাও ছিল কি-না খতিয়ে দেখতে হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্যতম সহযোগী চীন এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যবসায়িক পক্ষ তাই কোন ধরণের যাচাই-বাছাই ছাড়া চীনকে দোষারোপ করলে এর প্রভাব অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পেও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন।
সূত্র মতে, ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে সরকার শুধু দায় চাপিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। সবার ভাষ্যমতে অন্য কারো কোনো ধরণের দায় নেই এ ঘটনায়। পরে গত ৪ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে গার্ডার দুর্ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন তুলে ধরেছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী। গত ১ অক্টোবর ৬ সদস্যের কমিটি তার কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেয়। কমিটির বিভিন্ন সুপারিশ প্রসঙ্গে সচিব জানান, কমিটি বিভিন্ন সুপারিশ দিয়েছে। সুপারিশগুলো হলো Ñচুক্তি অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নেয়া। ভারি কাজের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পূর্বানুমতি নিতে হবে। দুর্ঘটনা থেকে শেখার হলো এই যে, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান থেকে পরিদর্শনের অনুমোদন না করানো এই দুর্ঘটনায় একটি প্রধান অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে। রাস্তায় এ ধরনের যেকোনো ভারি কাজ যা যানবাহন চলাচলের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্টতা থাকবে, তা অবশ্যই পরিদর্শন করে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান থেকে যথাযথভাবে অনুমোদন করে তারপর কাজ সম্পাদন করা যেতে পারে। সুপারিশগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে, এ ধরনের নির্মাণ কাজের স্থান পুরোপুরি যথাযথ নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় নিয়ে আসতে হবে। বেষ্টনীকে সঠিকভাবে দৃশ্যমান করার জন্য সাইন, সিগন্যাল, মার্কিং, লাইটিং, রিপ্লেকটর ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে চলমান এমআরটি প্রকল্পের নিরাপত্তা বেষ্টনীকে উদাহরণ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। সবশেষে সড়ক পরিবহন সচিব বলেন, ওই দিনের দুর্ঘটনার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিজিজিসি দায়ী। তাদের অবহেলার কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। অন্য কাউকেই এ ঘটনায় তিনি দায়ী করেননি। প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে কোন ধরণের আপত্তি কেউ না করলে এটিই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গার্ডার স্থানান্তরের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বা পরিকল্পনার বিষয়ে তদন্ত কমিটিকে অবহিত করলেও তারা তা গ্রহণ করেননি বলে জানা গেছে। এমনকি তাদের কারো কোন বক্তব্যও আমলে নেয়নি কমিটি। আর তাই পুরো তদন্ত কার্যক্রমে ষড়যন্ত্রের গন্ধ মিলছে। কারণ বিশেষজ্ঞদের মতে, কাউকে দোষী করতে হলে অবশ্যই তাকে কথা বলা বা তথ্য উপাত্ত তুলে ধরার সুযোগ দিতে হবে। কাউকে একতরফাভাবে দায়ী করা এক ধরণের অন্যায়।
অথচ অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিআরটি প্রকল্পের ঠিকাদারি কোম্পানি চায়না গ্যাঝুবা গ্রুপ করর্পোরেশনের (সিজিজিসি) পরিকল্পনা অনুসারে বক্স গার্ডার স্থানান্তর করার কথা ছিল ১৪ আগস্ট। আগে থেকেই ট্রাফিক পুলিশ এবং প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিকুল ইসলাম বিষয়টি অবগত। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশ ও প্রকল্প পরিচালক ভেবেছিল, ১৫ আগস্ট সরকারি ছুটি হওয়ায় ওইদিন যান চলাচল স্বাভাবিকের তুলনায় কম হবে। আর ১৪ আগস্ট রাতে জাতীয় শোক দিবসের নানা আয়োজনে মানুষের চলাফেরা ও যান চলাচল বেশি হবে। তাই ট্রাফিক পুলিশ ১৫ আগস্ট দিনের বেলায় ২টার পর বক্স গার্ডার স্থানান্তর করতে সিজিজিসিকে নির্দেশ দেয়। সিজিজিসি সেই নির্দেশনা অনুসরণ করে এবং ট্রাফিক পুলিশের অনুমতি ও কনফার্মেশন নিয়ে কাজটি করে। এ ধরণের নির্দেশনার প্রমাণপত্রও ইনকিলাবের হাতে রয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় প্রথমবারের মতো দিনের বেলায় গার্ডার স্থানান্তরের কাজ করা হয়। সিজিজিসি কর্মকর্তাদের না জানিয়ে অপারেটর নিজে থেকেই তার হেলপারকে ক্রেন চালানোর অনুমতি দেন। ক্রেনে লোড সেন্সর ও ডিসপ্লে দুটোই ছিল এবং ঠিকমতো কাজ করে। কিন্তু অসাবধানতা বা অসচেতনতার কারণে বড় ধরণের দুর্ঘটনার মুখে পড়তে হয়।
সূত্র মতে, সিজিজিসি ২০২০ সালের ২০ ডিসেম্বর এবং ২০২২ সালের ২২ মার্চ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা জমা দিয়েছে। পাশাপাশি দেশীয় সাব-কন্ট্রাক্টকারী প্রতিষ্ঠান ইফসকন বাংলাদেশ লিমিটেডের সঙ্গে ২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর সর্বশেষ বক্স গার্ডার স্থানান্তর সম্পর্কিত চুক্তি হয়। ওই চুক্তিতে মাসে ২৪০ ঘণ্টা কাজের সময় এবং কাজের সময় নিরাপত্তাসহ সবকিছু নির্ধারণ করা হয়। এ জন্য স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে সুরক্ষা, নিরাপত্তাসহ যাবতীয় কার্যক্রম ইফসকন বাংলাদেশকে দায়িত্ব দেয়া হয়। মূল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইফসকন চুক্তিতে স্পস্টভাবেও তা উল্লেখ করা হয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় বক্স গার্ডার স্থানান্তর করার নির্ধারিত দিন ছিল গত ১৪ আগস্ট। কিন্তু পুলিশ ও প্রকল্প পরিচালক পরের দিন সরকারি ছুটি হওয়ায় ওইদিন যান চলাচল স্বাভাবিকের তুলনায় কম হবে উল্লেখ করে গার্ডার স্থানান্তরের কার্যক্রম পিছিয়ে পরের দিন ২টার পর নির্ধারণ করে। চুক্তি ও কাজের নির্ধারিত সময়ের এ বিষয়ে ইফসকনের কর্মকর্তা মনজুরুলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও পাওয়া যায়নি।
এদিকে বিআরটি প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিকুল ইসলাম ইসলাম বক্স গার্ডার স্থানান্তরের নির্ধারিত তারিখ ১৪ আগস্ট ছিল এটা ১৫ আগস্ট কিভাবে হলো এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত এবং পুরনো বিষয়ে কোন কথা বলবেন না বলে জানিয়ে দেন।
অবশ্য সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র আগেই বলেছে, তদন্তে সরকারি কর্মকর্তাদের দায়ি করার সম্ভাবনা কম। ঠিকাদারকে জরিমানা আরোপ করে দায় সারতে পারে। কারণ, তদন্ত কমিটির প্রধান নীলিমা আক্তার সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব। তিনি বিআরটি প্রকল্পেরও সমন্বয়ক। প্রকল্পের নির্মাণকাজ হচ্ছে Ñসড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতর, সেতু বিভাগ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে। প্রতিটি সংস্থার আলাদা প্রকল্প পরিচালকসহ বাস্তবায়ন ইউনিট রয়েছে। তাদের মধ্যে সমন্বয় ও তদারকির জন্য নীলিমা আক্তারের নেতৃত্বে আছে প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ইউনিট।
সূত্র মতে, রাজধানী ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ২০০৫ সালে প্রণয়ন করা কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (এসটিপি) বিমানবন্দর থেকে সদরঘাট পর্যন্ত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লাইন-৩ বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়। এই সুবিধা ঢাকার বাইরে ছড়িয়ে দিতে গাজীপুর পর্যন্ত প্রকল্পটি সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয় পরবর্তীতে। এডিবির সহায়তায় নেয়া আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পের আওতায় সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের সুপারিশে গাজীপুর-বিমানবন্দর সড়কে প্রথমেই বিআরটি নির্মাণের সুপারিশ করা হয়। এই সুপারিশের আলোকে ২০ দশমিক ৫ কিলোমিটার ডেডিকেটেড বাস করিডোর নির্মাণের লক্ষ্যে এডিবির আর্থিক সহায়তায় ২ হাজার ৩৯ দশমিক ৮৪৮৯ কোটি টাকা ব্যয় ধরে গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট (বিআরটি) শীর্ষক প্রকল্প নেয়া হয় ২০১২ সালে। পরবর্তীতে বিভিন্ন জটিলতার কারণে প্রকল্পের ব্যয় দ্বিগুণ হয়। একই ধরনের সঙ্কটের পুনরাবৃত্তি এড়াতে বিমানবন্দর থেকে সদরঘাট পর্যন্ত বিআরটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সরকার। অনুমোদনের পরের বছর প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ও পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হয়। বিস্তারিত নকশা, বিভিন্ন কাজের দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়া শেষ করতেই চলে যায় লম্বা সময়। সব প্রক্রিয়া শেষে ঠিকাদারের সঙ্গে প্রথম চুক্তি হয় ২০১৬ সালের শুরুতে। আর সর্বশেষ প্যাকেজের চুক্তি হয় ২০১৭ সালে। এ হিসাবে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু হতেই চলে যায় পাঁচ বছর। এর আগেই প্রকল্পের মেয়াদকাল শেষ হয়ে যায়।
বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল হক বলেন, প্রকল্পের ডিজাইনে বড় ধরনের অপূর্ণতা ও ভুল ছিল। ব্যস্ত একটা এলাকায় ফুটপাতের কোন বিকল্প নেই। আধুনিক ড্রেনেজ সিস্টেম রাখতেই হবে। বিআরটির পাশের সড়কের পরিবহন কীভাবে চলাচল করবে তারও ব্যবস্থা দরকার ছিল।
তিনি বলেন, মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে রেখে নির্মাণ কাজ পরিচালনার এমন নজির পৃথিবীর আর কোন দেশেই পাওয়া যাবে না। ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, দেরিতে হলেও টনক নড়েছে কর্তৃপক্ষের। এদিকে সড়কে আগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে, পরে আবারো কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, গত ১৫ আগস্ট রাজধানীর উত্তরার জসীমউদ্দীন এলাকায় ক্রেন থেকে বিআরটি প্রকল্পের ভায়াডাক্ট (বক্স গার্ডার) পড়ে গেলে এর নিচে একটি প্রাইভেটকার চাপা পড়ে। এতে ওই প্রাইভেটকারে থাকা ৫ জন মারা যান। একাধিক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, এই প্রকল্প নিয়ে অন্য কোন ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। এ বিষয়টিও খতিয়ে দেখা দরকার। এদিকে ১৫ আগস্টের ওই দুর্ঘটনার পর পর উত্তরা অংশের নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হয় যা গত রোববার থেকে চালু করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।