পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বিমানবন্দর-টঙ্গী-গাজীপুর চৌরাস্তা। র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজের জন্য দীর্ঘদিন থেকে প্রতিদিন এই গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ভোগান্তিতে পড়ছে লাখো মানুষ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকছে যানবাহন। এজন্য উন্নয়ন কাজ নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। মানুষের এই চরম দুর্ভোগের মধ্যেই নির্মাণ কাজ অসমাপ্ত রেখেই কাল ৬ নভেম্বর খুলছে বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের একাংশ। উত্তরা থেকে টঙ্গী রেলগেট ফ্লাইওভার এবং মাঝের টঙ্গী সেতুর একাংশ যানবাহন চলাচলের খুলে দেয়া হবে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রকল্প পরিদর্শনের পর যান চলাচল শুরু হবে। ২০ দশমিক পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ বিআরটি লেনের সাড়ে চার কিলোমিটার থাকবে উড়াল সড়কে। বাকি ১৬ কিলোমিটার বিআরটি লেন মাটির সমতলে নির্মিত হচ্ছে। মাঝে রয়েছে ১৭৫ মিটার দীর্ঘ ১০ লেনের টঙ্গী সেতু। সেতু ও ফ্লাইওভার নির্মাণ করছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ঢাকামুখী যানবাহনের চাপ কমবে বলে আশা কর্তৃপক্ষের। তবে পুলিশ ও সড়ক ব্যবহারকারীরা বলছেন, নিরাপত্তা ঝুঁকি ও কারিগরী সমস্যা রেখে দুটি লেন খুলে দেয়া হলে পুরোপুরি যানজট নিরসন হবে না। পুরো বিআরটি প্রকল্পের কাজ শেষ না হলে ভোগান্তি থাকছেই।
বাস র্যাপিট ট্রানজিট বা বিআরটি প্রকল্পে ২০ দশমিক ৫০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে উত্তরা থেকে টঙ্গীর চেরাগআলী পর্যন্ত সাড়ে চার কিলোমিটার এলিভেটেড বিআরটি লেন এবং বাকি ১৬ কিলোমিটার থাকবে সমতলে। প্রকল্পের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে ছয়টি ফ্লাইওভার। এর মধ্যে টঙ্গী থেকে হাউস বিল্ডিং পর্যন্ত ফ্লাইওভারের দুটি লেন আগামী সপ্তাহে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এতে দুই কিলোমিটারের বেশি সড়কে ঢাকামুখী যানবাহন অনেকটা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে বলে মনে করছে বিআরটি সংশ্লিষ্টরা। এরই মধ্যে দুই লেন উন্মুক্তের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
ঢাকা বিআরটি কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিকুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, ৬ নভেম্বর বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের উত্তরা থেকে টঙ্গী রেলগেট ফ্লাইওভার এবং মাঝের টঙ্গী সেতুর একাংশ যানবাহন চলাচলের খুলে দেয়া হবে। এতে টঙ্গী আব্দুল্লাহপুর অংশের যানজট কমে আসবে। এখন যেহেতু বৃষ্টি কমে এসেছে তাই দুর্ভোগ অনেকটা সমাধান হবে।
জানা যায়, টঙ্গীর স্টেশন রোড থেকে উত্তরার হাউস বিল্ডিং পর্যন্ত অংশের ফ্লাইওভারের ঢাকাগামী দুটি লেন খুলে দেয়ার জন্য নানা প্রস্তুতি নিচ্ছে বিআরটি প্রকল্পের কর্মীরা। গার্ডারের কাজ শেষ করা হয়েছে। ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ ও গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রস্তাবনা অনুযায়ী লেনের বাঁকা অংশ কিছুটা সরল করা হয়েছে। সড়কের মাঝখানে রং দিয়ে ট্রাফিক সিগনালের কাজ চলছে।
ফ্লাইওভার ছয় লেনের। মাঝের দুইলেনে চলবে বিআরটির বাস। ৬ নভেম্বর থেকে চালু হতে যাওয়া ফ্লাইওভার ও সেতুর দুই লেন টঙ্গী থেকে ঢাকামুখী যানবাহন ব্যবহার করবে। টঙ্গী সেতুর ঢাকামুখী পুরনো সেতু অপসারণ এবং সেখানে নতুন সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে। ঢাকা থেকে টঙ্গীমুখী যানবাহনকে পুরনো সেতু ব্যবহার করতে হবে। বিআরটি প্রকল্পটি ২০১২ সালে সরকারের অনুমোদন পায়। এ পদ্ধতিতে সড়কের মাঝে দুই লেনে চলবে শুধু বিশেষায়িত বাস। ২০১৬ সালে বিআরটি চালুর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে। গত আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ এগিয়েছে ৮১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে ১০৯ শতাংশ, যা টাকার অঙ্কে ২ হাজার ২২৫ কোটি টাকা। নির্মাণ কাজের কারণে চার বছর চরম দুর্ভোগ চলছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরা থেকে জয়দেবপুর অংশে। কিন্তু বাস চালু তো দূরের কথা, এখন দুর্ভোগের আরেক নাম হলো এই বিআরটি প্রকল্প। এই পরিস্থিতিতে কাজ বাকি রেখেই উত্তরা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত ফ্লাইওভারের একাংশ যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে। বৃষ্টি হলেই ডুবে যায় নির্মাণ এলাকা। সড়কে বিশাল খানাখন্দ ও পানিবদ্ধতায় টানা কয়েকদিন দীর্ঘ যানজট হয় উত্তরা থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা সড়কে। ১০ কিলোমিটার পথ যেতে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত লাগে। এমন পরিস্থিতিতে এই সড়ক এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দেয় পুলিশ।
উত্তরার বাসিন্দা রুবেল বলেন, প্রতিদিন এই সড়কে যানজট হয়। যানজটের কারণে এই সড়ক কেউ ব্যবহার করতে চান না। বিআরটি প্রকল্পের টঙ্গী থেকে উত্তরা পর্যন্ত ঢাকামুখী দুটি লেন খুলে দিলে যানজট কমে আসবে বলে মনে করি।
গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক), মো. আলমগীর হোসেন বলেন, বিআরটি প্রকল্পের দুটি লেন খুলে দেয়ার ব্যাপারে নিরাপত্তা ঝুঁকি ও সমস্যা চিহ্নিত করে বেশ কিছু প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকায় ফ্লাইওভারের শুরুতে লেন অত্যন্ত সরু এবং রাস্তা ভাঙাচুরা। ফলে শুরুতে ধীরগতিতে গাড়ি ফ্লাইওভারের লেনে ঢুকবে। হাউস বিল্ডিং এলাকায় যেখানে গাড়ি নামবে সেখানে পর্যাপ্ত জায়গা নেই।
এ অংশের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মহিরুল ইসলাম খান জানিয়েছেন, উত্তরা থেকে টঙ্গী রেলগেট পর্যন্ত উড়াল সড়কের দৈর্ঘ্য দুই দশমিক দুই কিলোমিটার। এর দুই লেন আগামী ৬ নভেম্বর সড়ক পরিবহনমন্ত্রী যান চলাচলের জন্য খুলে দেবেন। পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন। ফ্লাইওভার ও সেতুর দুই লেন যান চলাচলের জন্য খুলে দিতে ঢাকা মহানগর পুলিশ ও গাজীপুর মহানগর পুলিশের মতামত পাওয়া গেছে। যানজটের দুর্ভোগ কমবে। দুই মহানগরের পুলিশ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করবে।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।