পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গ্যাসের চুলায় রান্না নিয়ে এক মাসের বেশি সময় ধরে ভুগছে নগরবাসী। নিবু নিবু আগুনে সীমিত রান্নায় পার করতে হচ্ছে দিন। শিল্পকারখানার অবস্থাও প্রায় একই রকম। যেটুকু পাচ্ছে, তা দিয়ে কারখানা চালু করা দায়। পরিবহনে গ্যাস দিতেও হিমশিম অবস্থা। এর মধ্যেই গ্যাসের সরবরাহ আরও কমেছে। আগামী দুই/তিন মাসে গ্যাস-সঙ্কট কাটবে না। তার পরও শিল্পাঞ্চলে শিল্প ও ক্যাপটিভ খাতে বকেয়া গ্যাস বিল আদায় না করে এবং নতুন সংযোগও পুণঃসংযোগ দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) কর্মকর্তারা। চট্টগ্রামের একটি কোম্পানিকে ২০১৭ সালে বকেয়ার কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন দেখানো হয়, আবার ওই গ্রাহককে ২০১৮ সালে স্থায়ী বিচ্ছিন্ন করে গ্রাহককে এসএম এস অপসারণ করতে বলা হয় কিন্ত তা না করে ৩ বছর গ্রাহককে আরএম এস মিটাররে জায়গায় শর্টপিছ লাগিয়ে অবৈধভাবে গ্যাস দেওয়া হয়েছে। স্থায়ী বিচ্ছিন্ন না করে গ্রাহককে অবৈধভাবে গ্যাস ভোগের সুযোগ সৃষ্টি করার মহাব্যবস্থাপন (বিপণন-দক্ষিণ) আমিনুর রহমানকে দায়ী করা হয়েছে। এছাড়া মের্সাস ইয়ং ইন্টারন্যাশনাল (বিডি) লিমিটেড এর শিল্পখাতে সরঞ্জাম বৃদ্ধির মাধ্যমে বর্ধিত লোডে গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়েছে। গত ২০১৭ সালে এ কোম্পানির শিল্পখাতে ১০টন/ ঘণ্টা ক্ষমতা সম্পন্ন বয়লারের বর্ধিত গ্যাস সংযোগ আবেদন করে সে আবেদনে বলা হয়, ঘণ্টাপ্রতি ২৪.৩৬৭.১০ ঘনফুট, দৈনিক ০.২৩৩৯ এমএমসিএফডি মাসিক ১.৭২.২২৪.০০ ঘনমিটার। সেখানে পরবর্তীতে পর্ষদে উপস্থাপনা না করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিজেই সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে মাসে ১০টন/ঘণ্টা ক্ষমতা সম্পন্ন একটি বয়লারে ঘণ্টাপ্রতি ৩০.৩৬৭.১০ ঘনফুট, দৈনিক ০৩১০৭ এমএমসিএফডি এবং মাসিক ২.২৮.৭৬৭.০০ ঘনমিটার গ্যাস অবৈধভাবে দেয়া হয়েছে। তা চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী বর্ধিত সংযোগের অনুমোদন দেওয়া হয়। এছাড়া গ্যাস বিপণন নীতিমালা-২০১৪ ও বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা পরিপত্রের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে এবং কোম্পানি তথা সরকারের ক্ষতি করা হয়েছে। এ জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে জন্য সুপারিশ করেছে পেট্রোবাংলার গঠিত তদন্ত কমিটি।
পেট্রোবাংলার গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, নিয়মানুযায়ী বকেয়া গ্যাস বিল আদায় না করে এবং কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদকে পাশ কাটিয়ে নতুন সংযোগ/পুণঃসংযোগ প্রদান করে নথি উপস্থাপনকারী কর্মকর্তা প্রকৌশলী লোকমান হোসেন গাজী, উপ-ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান, ব্যবস্থাপক মো. আমিনুর রহমান এবং মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সফিউল আজম খান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মাজেদ এবং কোম্পানি সচিব ফিরোজ খান দায়ী করা হয়েেেছ। কোম্পানির আওতাধীন বিভিন্ন অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বিতরণ নেটওয়ার্কের অধীনে বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে শিল্প ও ক্যাপটিভ খাতে নতুন/বর্ধিত গ্যাস সংযোগে ক্ষেত্রে সিরিয়াল ভঙ্গ করা হয়েছে। এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে জন্য সুপারিশ করেছে পেট্রোবাংলার গঠিত তদন্ত কমিটি।
এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান ইনকিলাববে বলেন, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) যেসব কর্মকর্তা শিল্পাঞ্চলে শিল্প ও ক্যাপটিভ খাতে বকেয়া গ্যাস বিল আদায় না করে এবং নতুন সংযোগও পুণঃসংযোগ দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। দেখার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড (কেজিডিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মাজেদকে ফোন করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোন বক্তব্য দিবেন না বলে জানান।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, মহেশখালীর গভীর সমুদ্রে নোঙর করা ভাসমান দুটি টার্মিনালের (এফএসআরইউ) মাধ্যমে দিনে ১০০ কোটি ঘনফুট এলএনজি সরবরাহের সক্ষমতা আছে। গত ১৮ নভেম্বর বিকেলে সামিটের টার্মিনালের মুরিং লাইন ছিঁড়ে যায়। মুরিং হলো একটি স্থায়ী কাঠামো, যেখানে কোনো জাহাজ বাঁধা অবস্থায় থাকে। টার্মিনালে জমানো এলএনজি থেকে ১০ দিন পর্যন্ত সরবরাহ করে সামিট। এরপর থেকে সরবরাহ বন্ধ। বর্তমানে এটি মেরামতের কাজ শেষ গত ৮ ফেব্রুয়ারির এটি চালু করা হবে। এ টার্মিনাল বন্ধ থাকায় দিনে ৫০ কোটি ঘনফুট এলএনজি সরবরাহের সক্ষমতা কমে গেছে। অন্য টার্মিনাল দিয়ে দিনে বর্তমানে ৫০ থেকে ৫৫ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করা হচ্ছে। এলএনজি আমদানি করে রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল)।
এদিকে কয়েক বছর ধরেই দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে উৎপাদন কমছে। একসময় দিনে ২৭০ কোটি ঘনফুট উৎপাদন করা হলেও বর্তমানে উৎপাদিত হচ্ছে ২৩০ কোটি ঘনফুটের মতো। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উৎপাদন করে শেভরন। বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র থেকে দিনে ১৩০ কোটি ঘনফুটের মতো করে উৎপাদন করে আসছিল তারা। এখন দিনে ১১৫ থেকে ১২০ কোটি ঘনফুট উৎপাদন করা হচ্ছে। দিনে ১০ কোটি ঘনফুটের মতো উৎপাদন কমে গেছে।
জানা গেছে, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড (কেজিডিসিএল) এর কতিপয় কার্যক্রমের ওপর অনিয়ম/অভিযোগের বিষয়ে পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন এন্ড মাইন্স) মহোদয় কর্তৃক দাখিলকৃত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কোম্পানির ১টি বিষয়ের বেশ কিছু কার্যক্রমের ওপর গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ যাচাই-বাছাই পরীক্ষা নিরীক্ষা ও দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিতপূর্বক প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনের জন্য পেট্রোবাংলার গত ২০১২ সালে অফিস আদেশ মূলে ৪ জন কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমটি গঠন করা হয়। পেট্রোবাংলার পরিচালক (পরিকল্পনা), আলী ইকবাল মো. নুরুল্লাহকে আহবায়ক, সদস্য সচিব করা হয় পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক (সংস্থাপন) মো. আমজাদ হোসেন, সদস্য পেট্রোবাংলা মহাব্যবস্থাপক (হিসাব) মহ. নজরুল ইসলাম এবং মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন), ড. এম. জোবায়ের হোসেন। এ কমিটি চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারী ৯টি বিষয়য়ের বেশ কিছু কার্যক্রমের উপর গুরুত্ব অনিয়মের অভিযোগ যাচাই-বাছাই,পরীক্ষা নিরীক্ষা ও দোষী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং সুপারিশসহ পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যানকে লিখিতে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) এর গ্রাহক মেসার্স মোস্তফা পেপার কমপ্লেক্স লিঃ (গ্রাহক সংকেত) শিল্প-৫১৫১। এর বিচ্ছিন্নকৃত সংযোগটি বাস বিপণন নীতিমালা অনুযায়ী পুনঃসংযোগ প্রদান করা হয়েছে কি-না তা তদন্তপূর্বক দায়-দ্বায়িত। ক্যাপটিভ সংযোগের জন্য কেজিডিসিএল-এর গ্রাহক মেসার্স মোস্তফা পেশার কমপ্লেক্স লিঃ (গ্রাহক সংকেত) শিল্প-৫১৫১) কে প্রদত্ত মিটারের ১০.৭৫% (-) নেগেটিভ থাকার পরেও কিভাবে পুনঃ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে এবং এ ব্যাপারে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে তদন্তপূর্বক দাফত্ব নির্ধারণ : ২.০। মেসার্স মোস্তফা পেশার কমপ্লেক্স লিঃ (গ্রাহক সংকেত: শিল্প-৫১৫১) কে ১টি ১০০ কিলোওয়াট, জেনারেটরে গ্যাস সংযোগের জন্য বোর্ডের অনুমোদন ব্যতিত গত ২০/১২/২০২১ তারিখে ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্তৃক অনুমোদন প্রদানের বিষয়টি যথাযথ হয়নি। কেজিডিসিএল-এর গ্রাহক মেসার্স ডায়মন্ড সিমেন্ট লিঃ (গ্রাহক সংকেত ৮০৬৫) কে ক্যাপটিভ খাতে নতুন সংযোগ প্রদানের জন্য কোম্পানির বোর্ডের যথাযথ অনুমোদন নেয়া হয়নি। কেজিডিসিএল-এর প্রাঃ মেসার্স আল-রাজী কেমিক্যাল কমপ্লেক্স লিঃ (গ্রাহক সংকেত শিল্প ৭৩৭৮) শিল্প শ্রেণির (বর্ধিত) গ্যাস সংযোগ প্রদানের অনুমোদন সংক্রান্তে কোম্পানির ১৭৫তম বোর্ড সভায় উপস্থাপন না করে দেয়া হয়েছে।
মেসার্স সানা সামিরা টেক্সটাইল মিদ লিঃ (মান মুছা গ্রুপ) এর ক্যাপটিভ খাতে বোর্ডের অনুমোদন দেখা হয়নি। কোম্পানির অকেজো ত্রুটিপূর্ণ মিটার পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত গঠিত কমিটি মিটার পরীক্ষার প্রতিবেদন ছাড়া সংযোগ দেয়া হয়। গুরুত্বপূর্ণ পদে বদলীকরণ করা হয়েছে। সরকারি নিদেশনা অমান্যকরে এক জন কর্মকর্তাকে এটি গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা হয়েছে। কোম্পানি কর্তৃক ২০১১ সালে হিসাব ক্যাডারে সিনিয়র কর্মকর্তাদের ডিঙ্গিয়ে জুনিয়রদের পদোন্নতি প্রধান, কারিগরী ক্যাডারে যোগ্য কর্মকর্তা থাকা সত্ত্বেও পদোষতি না দেওয়া এবং নতুন নিয়োগ কার্যক্রমে ধীরগতির বিষয়ে মতামত প্রদান। আর দিন এর শিয়াতে অনুরুপ ম্যাস বিল ইস্যুকরণ না করা এবং নমি গায়েবসহ অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে পেট্রোবাংলা কর্তৃকমিটি গঠন এবং কোম্পানি পর্যায়ে আরও একটি কমিটি গঠন করার পর উক্ত কমিটির প্রতিবেদন পরবর্তীতে আর তার সব প্রতিবেদন দাখিল গ্রহণের কারণসমূহ তদন্তপূর্বক মতামত প্রদান। মেসার্স আবুল খায়ের চাল লিঃ এর শিল্পখাতে অনুরূপ গ্যাস বিল ইস্যুকরণ ও আদায় না করা এবং নথি গায়েবঃ অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে পেট্রোবাংলা কর্তৃক ২টি তদন্ত কমিটি গঠন এবং কোম্পানি পর্যায়ে আরও একটি কমিটি গঠন করার পর উক্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিল পরবর্তীতে ২ বার সম্পূরক প্রতিবেদন দাখিল করেছে। তারপর এসব কর্তকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সংশ্লিষ্ট্র কর্মকর্তা গ্যাসের বকেয়া বিল আদায় না হওয়া ও অনিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ছায়া নথি খুলে গ্রাহকের কাছে বিল পাঠানো হয় এবং অর্থনৈতিক উপায়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজউদ্দিনের বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকা ঘুঘ গ্রহণ করেছেন তা সত্যতা পাওয়া গেছে। গত ২০২০ সালে সাবেক ব্যবস্থাপক প্রকেশৈলী তাজউদ্দিন ঢালী ও সহকারী প্রকৌশলী আরিফুর হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।