বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চট্টগ্রাম ব্যুরো : হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেছেন, সংখ্যালঘুদের স্বার্থরক্ষায় বাংলাদেশে সর্বস্তরের জনগণের মাঝে ঐক্য বজায় রয়েছে। বাংলাদেশ মুসলিম সংখ্যারিষ্ঠ দেশ হলেও এখানে শত শত বছর ধরে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও উপজাতীয় জনগোষ্ঠীসহ সকল সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করছেন। এই সম্প্রীতিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার ব্যাপারে সরকারের পাশাপাশি জনগণকেও সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে। কেননা দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও উন্নতির জন্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখা জরুরী।
গত শনিবার সন্ধ্যায় দেশের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে সাক্ষাতকালে তিনি একথা বলেন। এ সময় বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর যে নৃশংস হত্যাকা-, ধর্ষণ, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগসহ মুসলিম জাতিগত উচ্ছেদ অভিযানের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানান। তারা বলেন, এসব মানবতাবিরোধী অপরাধ বুদ্ধ ধর্মের শান্তির শিক্ষার চরম অবমাননা। বর্মার ঘটনায় বৌদ্ধধর্মাবলম্বী হিসেবে আমরা লজ্জিত ও অপমানিত। তারা বলেন, রোহিঙ্গা মুসলিমদের পক্ষে মিয়ানমারের শাসক মহলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী আন্দোলনে আমরাও শামিল হয়েছি। ন্যায় ও শান্তির পক্ষে আমাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
আল্লামা শফী আরো বলেন, দেশের গৌরবোজ্জ্বল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে দিয়ে ফায়দা লুটার জন্য দেশের স্বাধীনতা ও স্বার্থবিরোধীরা গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। বি-বাড়িয়ার নাসিরনগরসহ দেশের আরো কয়েকটি স্থানে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলার ঘটনা অস্বাভাবিক ও ষড়যন্ত্রমূলক উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোন সাধারণ নাগরিক এসব ঘটনার সাথে জড়িত নয়। প্রতিবেশী ভারত, মিয়ানমারসহ পশ্চিমা বিশ্বের বহু দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের নেতাদের বক্তব্যে ও মিডিয়ায় সংখ্যালঘু মুসলমানদের বিরুদ্ধে আক্রমাণত্মক বক্তব্য এবং হামলায় প্রকাশ্য উস্কানি দিয়ে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। অথচ আশার কথা হচ্ছে, বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দল, ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠনের উঁচু পর্যায় থেকে শুরু করে কোন স্তরের নেতৃবৃন্দসহ ব্যক্তিগত পর্যায়েও সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য কখনও দেন না।
শাহ আহমদ শফী বলেন, রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীসহ বৌদ্ধ ভিক্ষু ও সন্ত্রাসীরা যে নৃশংস হত্যাকান্ড, নির্বিচারে ধর্ষণ, বাড়িঘরে আগুন ও বর্বরোচিত উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে পৃথিবীর ইতিহাসে জাতিগত এমন বর্বরতার নজির নেই। মিয়ানমারের ঘটনায় বাংলাদেশের মুসলমানগণ অত্যন্ত মর্মাহত, ক্রুদ্ধ ও প্রতিবাদমুখর। বাংলাদেশের মুসলিম জনতার পাশাপাশি এদেশের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরাও মিয়ানমার সরকারের নির্মমতা ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন, মানববন্ধনসহ প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন, এটা প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তিনি বলেন, মিয়ানমারের ঘটনায় বাংলাদেশে বসবাসকারী বৌদ্ধ লোকজনের উপর এদেশের মুসলমানদের কোন নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে না ইনশাআল্লাহ। ইসলাম অর্থ হচ্ছে শান্তি। তাই ইসলাম সবসময় শান্তির শিক্ষা দিয়ে থাকে। অমুসলিমদের প্রতি সহানুভূতি ও সদাচারণের বিষয়ে ইসলামে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।
সম্মিলিত বৌদ্ধ নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক লোকপ্রিয় বড়–য়ার নেতৃত্বে বৌদ্ধ প্রতিনিধি দলে ছিলেন সমন্বয়কারী মিথুন বড়–য়া, বৌদ্ধ ভিক্ষু লোকজিৎ খের, সংখানন্দ খের, প্রকৌশলী সুভাষ চন্দ্র বড়–য়া, অধ্যাপক ঝন্টু কুমার বড়–য়া, সীমান্ত বড়–য়া, শিক্ষক লিটন বড়–য়া, নিরুপম বড়–য়া, বৌদ্ধ ভিক্ষু শাসন বংশ মহাথের, বৌদ্ধ ভিক্ষু পূর্ণানন্দ থের, বৌদ্ধ ভিক্ষু দিপানন্দ থের, বৌদ্ধ ভিক্ষু ইন্দ্রসেন, বৌদ্ধ ভিক্ষু জ্যোতিপাল শ্রমন প্রমুখ।
এসময় হেফাজত আমিরের সাথে আলোচনায় শরিক হন সংগঠনের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মুঈনুদ্দীন রুহী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আনাস মাদানী, আমীরের প্রেসসচিব মাওলানা মুনির আহমদ, হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা নূরুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল্লাহ নজীব, হেফাজত নেতা মাওলানা হাজী মুজাম্মেল হক, মাওলানা হাবীবুল্লাহ আজাদী প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।