Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

আলফাডাঙ্গা বারাংকুলা মাদ্রাসার ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান বহু হতাহতের আশঙ্কা

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২২ আগস্ট, ২০২২, ৬:০৫ পিএম

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বারাংকুলা জে এস ডি মাদ্রাসায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষাকার্যক্রম ও পাঠদান। ভবনের জরাজীর্ণ দশায় যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা। এতে শিক্ষার্থীরা যেমন আছে আতঙ্কে তেমনি শিক্ষক ও অভিভাবকরাও রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। এমন চিত্র সোমবার (২২ আগষ্ট) সরেজমিন এই ভয়াবহতা দেখাযায়।

একাধিকবার সংশ্লিষ্ট বিভাগে লিখিত অভিযোগ করেও কোনও ব্যবস্থা না নেয়ায় ঝুঁকির মধ্যেই মূল ভবনে পরিচালিত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম। যে কোন সময় ঘটতে ভবন ধ্বসের ঘটনা ঘটলে বহু ছাত্রের প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে বলে গ্রামবাসী ৃমন্তব্য করছেন।

মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, বারাংকুলা জে এস ডি মাদ্রাসাটি ১৯৭৯ সালে স্থাপিত হয়। এরপর ১৯৯৪ সালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ফ্যাসিলিটিজ ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। তিনটি কক্ষের মধ্যে একটিতে চলে অফিসের কার্যক্রম। অপর দুইটি কক্ষতে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হয়। প্রতিষ্ঠানটিতে ছোট ছোট দুইটি টিনসেড ঘর থাকলেও পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ না থাকায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাস পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে মাদ্রাসাটিতে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী ও ১৪ জন শিক্ষক রয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে আরো দেখা যায়, ১৯৯৪ সালে নির্মিত এ মাদ্রাসা ভবনটিতে ২০১৯ সালে ত্রুটি দেখা দেয়ার পর ধীরে ধীরে শ্রেণি কক্ষগুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন ভবনের ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ে পুরনো মরিচা ধরা রড বের হয়ে গেছে। আরসিসি পিলার, গ্রেট বিমগুলো ও বিভিন্ন কক্ষের ভেতরের দেয়ালে বিস্তৃত ফাটল ধরেছে। বৃষ্টি হলে ছাদ চুইয়ে পানি পড়ার কারণে দেওয়ালগুলো শ্যাওলা ধরে স্যাঁতসেঁতে হয়ে গেছে। অনেক কক্ষের দরজা-জানালা নেই। মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে ছোট ছোট অপর দুইটি টিনসেড ঘর থাকলেও সেগুলোও বয়সের ভারে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ফলে সব সময় দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। অবস্থা দিনদিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন জেনেও সেখানে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।

শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আরসিসি পিলার ও গ্রেট বিমগুলোতে বিস্তৃত ফাটল দেখা দেওয়ায় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা ভয়ে ভয়ে ক্লাস করে থাকে। ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অনেক অভিভাবক তাদের ছেলেমেয়েকে বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন।

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মুরছালিনা খানম গনমমাধ্যম কে জানান, সামনে আমাদের পরীক্ষা। তাই মাদ্রাসা ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাধ্য হয়ে ক্লাস করছি। সবসময় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ভবনটি ধসে পড়ার আতঙ্কে থাকি।

নাঈম শেখ নামে অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী গনমমাধ্যম কে বলেন, 'মাদ্রাসা ভবনের পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।'

বারাংকুলা জে এস ডি মাদ্রাসার সুপার এম এ শাহিন মিয়া গনমমাধ্যম কে বলেন, 'বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষর কাছে বার বার আবেদন করা হয়েছে। মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের সচিবের নিকটও লিখিত আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে রাখা সম্ভব নয়। যেকোনো সময় বড় কোনো দুঘর্টনা ঘটতে পারে।'

এবিষয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান গনমমাধ্যম কে জানান, 'বিষয়টি উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় রেজুলেশন করা হয়েছে। মাদ্রাসাটিতে নতুন ভবনের জন্য এমপি মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করে শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরে প্রস্তাব প্রেরণ করা হবে।'

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঝুঁকিপূর্ণ ভবন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ