রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মো. আবুল খায়ের, পীরগঞ্জ (রংপুর) থেকে : প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার ৩ বছর পরেও পীরগঞ্জের একটি সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়নি। শুধু বিভাগীয় পর্যায়ে চিঠি চালাচালিতেই চলে গেছে ওই সময়। এদিকে রংপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সেতুটি বাস্তবায়নের জন্য ডিজিটাল টপোগ্রাফিক্যাল সার্ভে করেছে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পীরগঞ্জের টুকুরিয়া ইউনিয়নের তরফমৌজা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের এক জনসভায় জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে তিনি করতোয়া নদীর জয়ন্তীপুর ঘাটে একটি সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। প্রতিশ্রুত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সড়ক বিভাগ থেকে রংপুর সওজ’কে নির্দেশ দেয়া হয়। ২০১৪ইং সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রংপুর সওজ’র নির্বাহী প্রকৌশলী পীরগঞ্জ (গোপীনাথপুর)-জয়ন্তীপুরঘাট-বিরামপুর সড়কের ২য় কিলোমিটারে উল্লিখিতস্থানে একটি সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে রংপুর সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কাছে চিঠি প্রেরণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি বেসরকারি ফার্ম দিয়ে সেতুর স্থান ‘জয়ন্তীপুরঘাট ও সংলগ্ন এলাকায় করতোয়া নদীতে’ ডিজিটাল টপোগ্রাফিক্যাল সার্ভেও করা হয়। পরে সার্ভে রিপোর্টটি সেতুর ডিজাইন ও নকশা প্রণয়নের পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঢাকায় সড়ক ভবনের সেতু ডিজাইন বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে প্রেরণ করা হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সেতুটি নির্মিত হলে পীরগঞ্জ উপজেলার সাথে নবাবগঞ্জ ও বিরামপুর উপজেলাসহ হিলি, জয়পুরহাট এবং গোবিন্দগঞ্জ-বিরামপুর-ফুলবাড়ী-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের সাথে যোগাযোগ সহজতর হবে। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিনাজপুরের নবাবগঞ্জের সৈয়দপুর, মহারাজপুর, মাহমুদপুর গ্রামসহ ওই এলাকার এবং রংপুরের হাজারো মানুষ হিলি সীমান্তে জয়ন্তীপুর ঘাট দিয়ে যাতায়াত করছে। জয়ন্তীপুর ঘাটে শুকনো মওসুমে প্রায় দেড়শ’ মিটার বাঁশের সাঁকো আর বর্ষা মওসুমে দুটি নৌকার উপর বাঁশের চাটাই দিয়ে পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। ঘাটটি দিয়ে শত শত সাইকেল, মোটরসাইকেল, রিকশা-ভ্যানযোগে মালামালসহ হাজারো মানুষ বছর ধরে পারাপার হয়ে আসছে। শুধু তাই নয়, যোগাযোগের অভাবে অনেক মানুষ চিকিৎসা নিতে গিয়ে মারাও যাচ্ছে। সূত্রটি আরো জানায়, সেতুটি নির্মাণের ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রীর তদানীন্তন একান্ত সচিব-১ আব্দুল মালেক তার দফতরের স্মারকে গত ২৫/০২/১৪ তারিখে একটি চিঠি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সড়ক বিভাগের সচিবকে প্রদান করেন। এরপর যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সড়ক বিভাগের ডিপিপি প্রক্রিয়ার সহকারী প্রধান কামরুন নাহার প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নে সওজ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে ওই বছরের ৮ এপ্রিল একটি চিঠি দেন। চিঠিটি ৯ এপ্রিলে রংপুর জোনের ব্রিজ ম্যানেজমেন্ট উইংয়ের কাছে প্রেরণ করা হলে ২২ এপ্রিল রংপুর সওজ’র নির্বাহী প্রকৌশলী জরুরি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপবিভাগীয় প্রকৌশলী-১ কে নির্দেশ দেন। এদিকে প্রস্তাবিত সেতুটির (নদী) উভয়াংশে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর সওজকে হস্তান্তর না করলে সেতুর নির্মাণ প্রক্রিয়া আরো পিছিয়ে যাবে বলে জানা গেছে। চিঠি চালাচালি আর রাস্তা হস্তান্তরে জটিলতা নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর ৩ বছর অতিবাহিত হচ্ছে। তারপরও সেতু বাস্তবায়নে কোনো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। এব্যাপারে রংপুর সওজ’র উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি বেসরকারি ফার্মের দ্বারা ডিজিটাল টপোগ্রাফিক্যাল সার্ভের মাধ্যমে জয়ন্তীপুর ঘাটে সেতু এলাকার মাটি পরীক্ষাসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। সেতুটি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে ‘ড. ওয়াজেদ মিয়া সেতু’র মতোই ডিজাইন, পরিকল্পনা ও একই বরাদ্দ করে সার্ভের রিপোর্ট ঢাকায় সংশ্লিষ্ট বিভাগে প্রেরণ করা হয়েছে। রংপুর সওজ’র নির্বাহী প্রকৌশলী সাদেকুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেয়া মাত্র আমরা স্থানীয়ভাবে কাজগুলো সম্পন্ন করে রেখেছি। এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ যত দ্রুত হবে কাজও তত দ্রুত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। উল্লেখ্য, গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর-পীরগঞ্জ-নবাবগঞ্জ সড়কে করতোয়া নদীর কাঁচদহ ঘাটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত ড. ওয়াজেদ মিয়ার নামে একটি সেতু নির্মাণ করায় গাইবান্ধার সাথে দিনাজপুরের সড়কপথে যোগাযোগে প্রায় ৭০ কিলোমিটার রাস্তা কমে এসেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।