Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এক মুহূর্তে ক্ষতবিক্ষত জীবন

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০২২, ২:৩৩ পিএম

অবরুদ্ধ গাজার জাবালিয়াতে মা-বাবা আর ভাইকে নিয়ে বসবাস রাহাফ সালমানের। ফিলিস্তিনি এই কিশোরীর বয়স ১১ বছর। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত। চলছে ইসরাইলের বিমান হামলা। দুশ্চিন্তায় আচ্ছন্ন মা রাফাকে বললেন, যাও রাতের খাবারের সময় হয়েছে। তোমার বড় ভাইকে ডেকে আনো। মায়ের কথা মতো ভাইকে ডেকে আনতে গেলো রাহাফ।

সাথে সাথেই বিকট শব্দ! ঠিক বাড়ির পাশেই। চিৎকার করতে করতে দৌড়ে গেলেন মা। দেখলেন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে তার ছেলে মোহাম্মদ সালমান। কিন্তু মেয়ের কোনো সন্ধান নেই। দুই ঘণ্টা ধরে পাগলে মতো খুঁজতে থাকেন মা-বাবা। অবশেষে জানতে পারেন, ঘটনার পর স্থানীয়রা রাহাফকে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন।


সেখানে ছুটে যান কিন্তু মেয়েকে খুঁজে পান না। পাবেন কিভাবে? তাদের আদুরে কন্যাটি তো আগের মতো নেই। সারা শরীর স্প্লিন্টারের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত! নরম তুলতুলে গাল দুটি’তে যেন কেউ সুচ ফুটিয়ে ফুটিয়ে রক্তাক্ত করেছে।

অবশেষে যখন মেয়েকে দেখেন বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন মা মানান সালমান। এ কী অবস্থা হয়েছে মেয়ের! শেষবার যে মেয়েকে তিনি দেখেছিলেন, এ তো সে নয়। এক মুহূর্তে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে তার ছোট্ট মেয়েটি।

মায়ের ভাষ্য, যখন স্থানীয়রা রাহাফকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন, সারা শরীর রক্তাক্ত ছিল। ছিন্ন ভিন্ন ছিল শরীর! অবস্থা এতোটাই মারাত্মক ছিল যে, ওর ডান হাত আর পা দুটি কেটে ফেলে দিতে হয়েছে।


এছাড়া পেটেও আঘাত পেয়েছে সে। গলার হাড় ভেঙ্গে গেছে এবং কাঁধেও অনেক ব্যাথা পেয়েছে। চোখেও সমস্যা হয়েছে ।

এতো অসহনীয় কষ্টের মধ্যেও হাসপাতালে তাকে দেখতে আসা স্বজনদের সাথে হাসিমুখে কথা বলছিল রাহাফ।

আর তা দেখে মায়ের বুকে জমছিল ব্যাথার পাহাড়। ভাবতে থাকেন, ‘যে মেয়েকে ডাক্তার বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন, তার আজ এই অবস্থা! কিভাবে সে পড়াশোনা করবে? কিভাবে কাটাবে বাকি জীবন?

রাহাফের এই গুরুতর অবস্থা দেখে মঙ্গলবার হামাস ঘোষণা দিয়েছে, তাকে চিকিৎসার জন্য তুরস্কে পাঠানো হবে। এ ব্যাপারে দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগানের সাথে কথা হয়েছে। তিনি সম্মতি দিয়েছেন।

এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, তুর্কি প্রেসিডেন্ট আহত রাহাফ সালমান এবং তার পরিবারকে তুরস্কে চিকিৎসার জন্য আন্তরিকতার সাথে সম্মত হয়েছেন।


হামাসের এই ঘোষণার পর কিছুটা আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন রাহাফের মা। তিনি বলেন, তুরস্কে চিকিৎসা হলে রাহাফ কৃত্রিম অঙ্গের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে পারবে।

এদিকে রাহাফের ভাই মোহাম্মদ সালমানের (১৩) অবস্থায়ও ভালো না। তার বুকে এবং শরীরের নিম্নাংশে স্প্লিন্টারের আঘাত রয়েছে। তার একটি হাঁটু ভেঙ্গে গেছে এবং একটি হাত আঘাত পেয়েছে।

ইসরাইলের হামলায় গাজায় ১৫ শিশুসহ কমপক্ষে অর্ধশত নিহত হয়েছেন।

সূত্র : ডেইলি সাবাহ



 

Show all comments
  • MD Akkas ১০ আগস্ট, ২০২২, ৪:১৯ পিএম says : 0
    আল্লাহ আপনি এই জালিম ইহুদীদের ধংস করে দিন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফিলিস্তিনি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ