Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যেভাবে জাওয়াহিরিকে খুঁজে পেল যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ আগস্ট, ২০২২, ১:০৪ পিএম

আফগানিস্তানে মার্কিন হামলায় শীর্ষনেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরি নিহত হওয়ার ঘটনা ২০১১ সালে লাদেন হত্যার পর আল-কায়েদার জন্য সবচেয়ে বড় ধাক্কা। তবে বছরের পর বছর ধরে আত্মগোপনে থাকা জাওয়াহিরির অবস্থান শনাক্ত করা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য খুব একটা সহজ ছিল না। মার্কিন প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, জাওয়াহিরিকে খুঁজে বের করে হত্যার এই অভিযান সন্ত্রাসবিরোধী ও গোয়েন্দা বাহিনীর অত্যন্ত সতর্কতা এবং লেগে থাকার ফল।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার আগ পর্যন্ত জাওয়াহিরি পাকিস্তানের প্রত্যন্ত এলাকায় বা আফগানিস্তানে আছেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) দাবি, যাঁর মৃত্যু হয়েছে, তিনি জাওয়াহিরি কি না, তা অনেকভাবে খতিয়ে দেখে নিশ্চিত হয়েছেন তাঁরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জাওয়াহিরি হত্যার অভিযান সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু তথ্য প্রদান করেছেন।
# বেশ কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র সরকার জাওয়াহিরি সমর্থিত একটি নেটওয়ার্ক সম্পর্কে অবগত ছিল এবং গত এক বছরে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর দেশটিতে আল-কায়েদার উপস্থিতির বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করছিলেন কর্মকর্তারা। চলতি বছর তাঁরা শনাক্ত করেন, জাওয়াহিরির পরিবার কাবুলের একটি বাড়িতে আত্মগোপনে আছেন। পরে জাওয়াহিরিকেও একই স্থানে শনাক্ত করেন কর্মকর্তারা।
# কয়েক মাস ধরে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা আরও নিশ্চিত হন যে কাবুলের ওই গোপন আস্তানায় নিজের পরিবারের সঙ্গে আছেন জাওয়াহিরি। গত এপ্রিলের শুরুতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে ব্রিফিং শুরু করেন তাঁরা। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান পরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে বিষয়টি অবহিত করেন। ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘অভিযানের জন্য আমরা একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে একটি প্যাটার্ন তৈরি করতে সক্ষম হই।’
# কর্মকর্তারা বাড়িটির নির্মাণ-প্রকৃতি যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত করেন যে, বেসামরিক নাগরিকদের কিংবা জাওয়াহিরির পরিবারের ক্ষতি ছাড়াই অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব।
# সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন গোয়েন্দা তথ্য যাচাই করতে এবং মোক্ষম পদক্ষেপের জন্য প্রধান উপদেষ্টা ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন। গত ১ জুলাই সিআইএ পরিচালক উইলিয়াম বার্নস ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা একটি প্রস্তাবিত অভিযান সম্পর্কে বাইডেনকে ব্রিফ করেন।
# ২৫ জুলাই প্রেসিডেন্ট বাইডেন তাঁর মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ও উপদেষ্টাদের একটি চূড়ান্ত ব্রিফিং গ্রহণ করেন। জাওয়াহিরিকে হত্যায় অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে তালেবানের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ককে কীভাবে প্রভাবিত করবে তা নিয়ে আলোচনা করার জন্য ডাকেন। আলোচনায় অন্যদের কাছ থেকে মতামত চাওয়ার পর বেসামরিক হতাহতের ঝুঁকি কম থাকবে এমন শর্তে একটি সুনির্দিষ্ট বিমান হামলার অনুমোদন প্রদান করেন বাইডেন।
# শেষ পর্যন্ত ৩০ জুলাই স্থানীয় সময় ৯টা ৪৮ মিনিটে ড্রোন হামলা চালানো হয়। তথাকথিত ‘হেলফায়ার’ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে এই অভিযান সম্পন্ন করা হয়। জাওয়াহিরি বাড়ির ব্যালকনিতে বসে থাকা অবস্থায় ড্রোন হামলা হয়। এতে জাওয়াহিরি ছাড়া আর কারও প্রাণহানি হয়নি। সূত্র : এনডিটিভি



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ