Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আমলাতান্ত্রিক অদক্ষতাই বাংলাদেশে বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করে

যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রতিবেদন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ জুলাই, ২০২২, ১২:০১ এএম

বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি একটি গুরুতর প্রতিবন্ধকতা। সরকার ঘুষ, আত্মসাৎ এবং অন্যান্য ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আইন প্রতিষ্ঠা করলেও তার যথাযথ প্রয়োগ নেই। তাছাড়া আমলাতান্ত্রিক অদক্ষতাই বাংলাদেশে বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করে। নিয়ন্ত্রক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতার অভাব দেশে প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের হতাশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশ কান্ট্রি কমার্শিয়াল গাইডে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন থেকে বাংলাদেশ কান্ট্রি কমার্শিয়াল গাইড-২০২২ প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদাবাজি হয়। সেই সঙ্গে আমলাতান্ত্রিক অদক্ষতা প্রায়ই বাংলাদেশে বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করছে। বাংলাদেশে ব্যবসা করতে গেলে একটি কোম্পানিকে কোন ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে তার উল্লেখ রয়েছে। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য আগ্রহের বিভিন্ন খাতে তাৎপর্যপূর্ণ সম্ভাবনাগুলোও ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
গাইডে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছে চাঁদা দাবি একটি সাধারণ ঘটনা। এছাড়া এখানে ব্যবসার অন্যান্য প্রতিবন্ধকতার মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকা পরিবহন অবরোধ, যা শ্রমিকদের দূরে রাখতে পারে। ফলে পণ্য সরবরাহ অবরুদ্ধ হতে পারে, আর এই কারণে উৎপাদনশীলতা হ্রাস পায়। এ ধরনের অবরোধের সময় যানবাহন ও অন্যান্য সম্পত্তি ভাঙচুর বা অগ্নিসংযোগের ঝুঁকি এবং ব্যবসায় লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে।
গাইডলাইনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে জমি সংক্রান্ত বিরোধ একটি সাধারণ ঘটনা। মার্কিন কোম্পানি এবং নাগরিকরা প্রতারণামূলক জমি বিক্রির বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা হয়েছে, জমির প্রকৃত মালিক যখন বাংলাদেশের বাইরে বসবাস করছিলেন, তখন বিক্রেতা জালিয়াতির মাধ্যমে মালিকানা দাবি করে সরল বিশ্বাসের ক্রেতার কাছে জমি হস্তান্তর করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি একটি গুরুতর প্রতিবন্ধকতা হিসেবে রয়ে গেছে। যদিও সরকার ঘুষ, আত্মসাৎ এবং অন্যান্য ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আইন প্রতিষ্ঠা করেছে, তবে যথাযথ প্রয়োগ নেই।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, আমলাতান্ত্রিক অদক্ষতা প্রায়ই বাংলাদেশে বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করে। নিয়ন্ত্রক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতার অভাব দেশে প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের হতাশ করতে পারে। বাংলাদেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর এবং বিভাগে শীর্ষ ও মধ্য-স্তরের কর্মকর্তাদের ঘন ঘন বদলি, কৌশলগত সংস্কার উদ্যোগ এবং রুটিন দায়িত্ব সময়মত কাজের বাস্তবায়নে বাধা দেয়।
বর্তমান আইনের অধীনে মুনাফা এবং বাহ্যিকভাবে অর্থপ্রদানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, বাংলাদেশ থেকে বহির্মুখী স্থানান্তরে জটিলতা থেকে যায়। একইভাবে মুনাফা বা লভ্যাংশ ফেরত দেওয়ার আবেদনে অতিরিক্ত তথ্য সংগ্রহ বা কর নিয়ে বিরোধের জন্য বিলম্বিত হতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কখনো কখনো বহুজাতিক কোম্পানির সঙ্গে জড়িত কয়েক দশকের পুরনো ট্যাক্সের মামলা বিশেষ লক্ষ্যবস্তু হিসেবে পুনরায় চালু করেছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সূত্রগুলো থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এই গাইড লাইন প্রস্তুতের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের অর্থনৈতিক বিভাগ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশে বিনিয়োগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ