যৌন নির্যাতনের অভিযোগে রাইড শেয়ারিং মোবাইল অ্যাপ উবারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ৫৫০ জন নারী। গতকাল বুধবার (১৩ জুলাই) দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান ফ্রান্সিসকো শহরের কাউন্টি সুপিরিয়র আদালতে এই মামলা করা হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।
মামলাকারী এই নারীরা উবার চালকদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও বন্দি রাখা, যৌন নির্যাতন, অযাচিত যৌন আচরণ (চুম্বন), আঘাত, ধর্ষণ, দেহের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়ার চেষ্টা, হয়রানি ও হামলার অভিযোগ আদালতে জমা দিয়েছেন।
নির্যাতিত এই নারীদের সার্বিকভাবে সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ল’ ফার্ম স্লেটার স্লেটার শুলম্যান। তাদের প্রতিনিধি হিসেবে মামলা করা এবং মামলা পরিচালনার দায়িত্বেও রয়েছে ল’ ফার্মটি।
স্লেটার স্লেটার শুলম্যানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডাম স্লেটার বিবিসিকে জানান, ২০১৪ সালের শুরু থেকে পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়ার বিভিন্ন শহরে ঘটেছে এসব নির্যাতনের ঘটনা, এবং জমা পড়া অভিযোগসমূহের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ১৫০টি অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বিবিসিকে অ্যাডাম স্লেটার বলেন, ‘গ্রাহককে নিরাপদ রাইড পরিষেবা দেওয়াই উবারের ব্যবসার মূল ভিত্তি। কিন্তু ব্যবসার শুরু থেকেই এ ব্যাপারে উদাসীন ছিল উবার কর্তৃপক্ষ। কেবল মুনাফার পেছনে ছুটেছে এই কোম্পনি। আর সেই মুনাফার মূল্য পরিশোধ করেছে নির্যাতনের শিকার এসব যাত্রী।’
উবার কর্তৃপক্ষও অবশ্য যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। গত মাসে উবারের পরিষেবা নেওয়া মার্কিনীদের নিরাপত্তা বিষয়ক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে উবার। সেখানে বলা হয়েছে, ২০১৯ ও ২০২০ সালে উবার চালকদের হাতে ধর্ষণসহ বিভিন্ন মাত্রার যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মোট ৩ হাজার ৮২৪ জন মার্কিন নারী।
উবার কোম্পানির এক মুখপাত্র বিবিসিকে বলেন, ‘যৌন নির্যাতন একটি ভয়াবহ অপরাধ এবং যেসব যাত্রী আমাদের কাছে এ বিষয়ক অভিযোগ করেছেন, তার প্রতিটিই আমরা খতিয়ে দেখছি।’
‘কোনো কিছুই নিরাপত্তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নয়। যাত্রীদের নিরাপদ রাইড পরিষেবা দেওয়া আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাবসায়ীক অঙ্গীকার।’
মমালার বিষয়ে ওই মুখপাত্র বলেন, ‘যেহেতু আদালত এ ব্যাপারটি দেখছে, আমাদের বেশি কিছু বলার সুযোগ নেই। তবে এখন থেকে যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টিতে আমরা বিশেষ মনোযোগ দেবো।’