পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কঠোর আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তেল-গ্যাস-খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। কমিটি বলেছে, সরকার যদি এই প্রকল্প বাতিল না করে, তাহলে ২৬ জানুয়ারি ঢাকায় অর্ধদিবস সর্বাত্মক ধর্মঘট ও হরতাল কর্মসূচি পালন করা হবে। এ ছাড়া প্রকল্পবিরোধী এ আন্দোলন সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতীয় কমিটি। গতকাল শনিবার রামপালসহ সুন্দরবনবিনাশী সব প্রকল্প বাতিল ও সুন্দরবন রক্ষার দাবিতে ডাকা মহাসমাবেশ থেকে এই ঘোষণা দিয়েছেন কমিটির নেতারা। সমাবেশ শেষে কমিটির সদস্যসচিব আনু মুহাম্মদ পাঁচটি কর্মসূচি ঘোষণা করেন। আগামী ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস সুন্দরবন রক্ষায় এবং রামপাল প্রকল্প বাতিলের দাবিতে পালন করবে জাতীয় কমিটি। দেশবাসীকেও এ দু’টি দিবস এভাবে পালনের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। ২৬ ডিসেম্বর ঢাকাসহ সারা দেশে সমাবেশ পালন করার মধ্য দিয়ে দাবি দিবস পালন করা হবে।
দুর্নীতির মহাসড়কে মানুষ চাপা দিয়ে এ সরকার পরিবেশ ধ্বংস করে চলছে। সরকার বর্তমানে আইয়ুব খানের মৌলিক গণতন্ত্রের আদলে ডিজিটাল গণতন্ত্র প্রবর্তন করে দেশ শাসন করছে। পাকিস্তানিদের আদলে সংখ্যালঘু নির্যাতন ও আদিবাসী উচ্ছেদের মাধ্যমে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখছে। গতকাল শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির মহাসমাবেশে বাসদের সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, খোদ রাজধানীর পাশে বুড়িগঙ্গা নদীর দূষণ যেখানে কমাতে পারছে না সরকার, সেখানে কিভাবে সুদূর সুন্দরবনের নদীর দূষণ কমাবে?
মহাসমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকার শুধু ভারতের স্বার্থ বিবেচনা করে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করছে। ভারতের এনটিপিসি তাদের দেশে অনুমোদিত না হয়ে এখন বর্তমানে বাংলাদেশে তাদের নীল নকশা বাস্তবায়ন করতে এসেছে। সরকার গণমত উপেক্ষা করে একমাত্র গায়ের জোরে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চাইছে। বক্তারা আরো বলেন, একমাত্র প্রধানমন্ত্রী ব্যতীত আর কেউ মনে হয় এ প্রকল্পের পক্ষে নেই এবং সরকারের মন্ত্রীরাও মন্ত্রীত্ব যাওয়ার ভয় না থাকলে এ প্রকল্পের বিরোধীতা করতেন।
প্রকৌশলী বি ডি রহমতুল্লাহ বলেন, বায়ু বিদ্যুৎ, বর্জ্য বিদ্যুৎ প্রকল্প থাকতে সরকারকে কেন ভারতের অর্থায়নে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে হবে তাও সুন্দরবনের এতো কাছে প্রাকৃতিক ক্ষতি সাধন করে?
এমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম বলেন, সরকারের এ কথিত উন্নয়নের ফলে পরবর্তীতে যে দুর্ঘটনা ঘটবে, আমরা সে বিষয়ে সরকারকে সতর্ক করতে চাইছি। আমরা উন্নয়নের নামে ওই এলাকার মানুষের উচ্ছেদের বিরুদ্ধে বলছি। এ উন্নয়ন পুঁজিবাদীদের উন্নয়ন।
সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের আহ্বায়ক জোনায়েদ সাকি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, সময় থাকতে রামপাল চুক্তি বাতিল করুন, না হয় এই জনস্রোত আপনার গদি নাড়িয়ে দিতে সক্ষম।
সমাবেশে বক্তারা রামপাল চুক্তি বাতিল না করে শুধু বিদেশি প্রভুদের স্বার্থ রক্ষার্থে যদি সরকার এ বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করে তবে সে বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করতে দেয়া হবে না, প্রয়োজনে ভেঙে ফেলা হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি বিতর্কে বসার আহ্বানও জানান এ সমাবেশ থেকে।
তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মোহাম্মদ বলেন, সরকারের যদি জনমতের প্রতি বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধাবোধ থাকতো, তাহলে সরকার এ প্রকল্প বহু পূর্বেই বাতিল করে দিত। এ প্রকল্পের ফলে সুন্দরবনের ৩৫ লক্ষ মানুষ তার জীবীকা হারাবে, পাঁচ কোটি মানুষ তাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগে সুরক্ষা হারাবে। আমরা ২০১১ সাল থেকে নানা তথ্য ও প্রমাণ দেখিয়ে বলে আসছি এসব ক্ষতির কথা।
মহাসমাবেশের সমাপনী বক্তৃতায় আনু মোহাম্মদ সমাবেশ পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। যার মধ্যে ২৬ ডিসেম্বর দেশব্যাপী দাবি দিবস, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ। ৭ জানুয়ারি বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ দিবস ও ১৪ জানুয়ারি মহাপরিকল্পনা উপস্থাপন। এর মাঝেও দাবি না পূরণ হলে ২৬ জানুয়ারি ঢাকা মহানগরে অর্ধদিবস হরতালের ডাক দেয়া হয়। সমাবেশ শেষে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে একটি মিছিল টিএসসি, শাহবাগ, মৎস ভবন হয়ে প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।