Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দিলেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ জুলাই, ২০২২, ৫:২৮ পিএম

বিশ্ববাজারে তেল ও গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের জ্বালানি পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোরও ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে বর্তমান সংকট সাময়িক বলে মন্তব্য করে তিনি গ্যাস ব্যবহারে মিতব্যয়ী হতে জনগণের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক অডিও বার্তায় এসব কথা বলেন তিনি। নসরুল হামিদ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, ‘আমরা ছয়–সাত মাস ধরে তেলের মূল্য ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করছি। যে তেল আমরা ৭০ থেকে ৭১ ডলারে কিনতাম, এখন তা ১৭১ ডলার হয়ে গেছে। এবং সেটা সব সময় বাড়তির দিকেই যাচ্ছে। আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি যে আমরা তেলের প্রাইসটাকে অ্যাডজাস্টমেন্টে যাব। কিন্তু আমাদের নিজস্ব অর্থে আমরা এই ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু তারপরও আমাদের মনে হয়, আমাদের একটা সময়ে প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্টে (মূল্য সমন্বয়) যেতে হবে। প্রতিমন্ত্রী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তেলের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বে তেলের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ তারা নিয়েছে। তেলের মূল্য তারা সমন্বয় করেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কথাই যদি বলি, তারা বিভিন্ন তেলের ক্ষেত্রে লিটারপ্রতি ৩৫ থেকে ৫০ টাকা বাড়িয়েছে। দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়ার পর লোডশেডিং মোটামুটি বিদায় নিয়েছিল। শহরে বিদ্যুৎ–বিভ্রাট হতো না বললেই চলে। এখন সেই লোডশেডিং আবার ফিরেছে। রাজধানীসহ সারা দেশে কয়েক দিন দিনে কয়েকবার করে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে।

আজ বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী তাঁর অডিও বার্তায় বলেন, ‘আমাদের গ্যাস দিয়ে আমাদের ৬৪ শতাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র চলে। আমাদের যে নিজস্ব প্রাকৃতিক গ্যাস আমরা দিন দিন বাড়াচ্ছি, আবার দিন দিন কমছেও। যে খনিগুলোর কাছ থেকে আমরা পাচ্ছি, সেটা খুব স্বল্প পরিমাণে। আমরা ১০ বছর আগে থেকে বলে আসছি যে ধীরে ধীরে গ্যাসের মজুত কিন্তু কমতে থাকবে।’
এখন থেকে কোন এলাকায় কত সময় লোডশেডিং দেওয়া হবে, তার একটি রুটিন করতে সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লোডশেডিংয়ের বিষয়ে সবার সহযোগিতাও চেয়েছেন তিনি।
নসরুল হামিদ তাঁর বক্তব্যে ইউক্রেন যুদ্ধসহ জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে বৈশ্বিক কারণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘খোলাবাজারে তেলের চাহিদা বেড়ে গেছে সারা বিশ্বে প্রচ-ভাবে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তেল ও গ্যাসের দামে প্রচ-ভাবে ইফেক্ট পড়েছে। ইউরোপের অধিকাংশ দেশ রাশিয়া থেকে গ্যাস নেয়। সেখানে তারা বন্ধ করে দিচ্ছে বলেই এখন ইউরোপের সব দেশ এই গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। যে কারণে খোলাবাজারে যে গ্যাস ছিল ৪ ডলার, সেটা হয়ে গেছে ৩০ ডলার। সেটা কিনতে গিয়েই কিন্তু আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। অর্থ জোগান দিতে আমাদের প্রচ-ভাবে বেগ পেতে হচ্ছে।’
কোন এলাকায় কত সময় লোডশেডিং হবে, রুটিন করুন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাপরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার যে অসুবিধায় পড়েছে প্রতিমন্ত্রীর কথায় তা স্পষ্ট। নসরুল হামিদ বলেন, ‘ সরকারের ভর্তুকি দিয়েও এই পরিমাণ অর্থের জোগান দেওয়া সম্ভব হবে না। এবং আমরা যদি মূল্যবৃদ্ধিই করতে থাকি, তাহলে সাধারণ জনগণের ওপর প্রচ-ভাবে চাপ সৃষ্টি হবে। আমি আগের থেকে বলে আসছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন কিছু করবেন না, যেটা সাধারণ জনগণের ওপর বোঝা হয়ে থাকে। যার কারণে আমরা গ্যাসের সামান্য পরিমাণ মূল্য সমন্বয় করেছি। এখনো আমরা তেলের ব্যাপারে করি নাই। আমি আশা করব যে সবাই এই বিষয় বুঝতে পারবেন এবং ধৈর্য্য ধরবেন।’
বর্তমান নাজুক জ্বালানি পরিস্থিতি সাময়িক বলেই মনে করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এটা খুব সাময়িক, দীর্ঘকালের জন্য নয়। আমাদের প্রচুর পাওয়ার প্ল্যান্ট আছে। কিন্তু গ্যাসের সংকটের কারণে আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছি।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নসরুল হামিদ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ