পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম ফের ঊর্ধ্বমুখী। এমন পরিস্থিতিতে খোলাবাজার (স্পট মার্কেট) থেকে এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত বন্ধ রেখেছে সরকার। জ্বালানি এ পণ্যটির দাম না কমা পর্যন্ত দেশীয় গ্যাস থেকেই চাহিদা পূরণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এতে করে কমে গেছে দেশে গ্যাসের সরবরাহ। গ্যাস সঙ্কটের কারণে বাধ্য হয়ে বেশ কিছু গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে। তাই গত ৩ জুলাই থেকে হঠাৎ করে সারা দেশে বেড়ে গেছে লোডশেডিং। ঢাকার বাইরে গ্রামাঞ্চলের চিত্র আরো খারাপ। সেখানে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১২ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকে না। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দিনে ৫ থেকে ৬ বার এবং গ্রামাঞ্চলে ১০ থেকে ১২ বার লোডশেডিং হচ্ছে। আর আবাসিক এলাকায় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত রান্নার চুলা জ্বলছে না। শিল্প-কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যুতের কারণেই।
জানতে চাইলে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেন, স্পট মার্কেট থেকে সরকার এলএনজি না কেনার সিদ্ধান্তের কারণেই এই সমস্যা হচ্ছে। বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বাড়ার কারণে এখন ঠিকই পেট্রোবাংলা দেশীয় গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিচ্ছে। এই পরিকল্পনাগুলো যদি আরো কয়েক বছর আগে থেকে নেয়া যেত তাহলে আজ আমাদের গ্যাস সঙ্কট নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হতো না। আশা করছি, এই সঙ্কট বেশিদিন থাকবে না, কারণ সামনে এলএনজি ও জ্বালানি তেলের দাম কমে আসবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী ২০০৯ সালে দেশে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ২৭। এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫২টিতে। আগে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ৫ হাজার মেগাওয়াটের কম; এখন উৎপাদন সক্ষমতা ২৫ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াট (ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্যসহ)। এত বিদ্যুতের চাহিদা দেশে নেই। কিন্তু শত ভাগ বিদ্যুতের দেশে বিদ্যুতের অভাবে সবকিছু মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। সামনে ঈদুল ফিরত। শহর থেকে কর্মজীবী মানুষ গ্রামে যাবেন পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে। ঈদের দিন নামাজের পর পশু কোরবানি হবে। মানুষকে যেমন বিদ্যুতের কারণে অন্ধকারে থাকতে হবে; তেমনি মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষ কোরবানির কিছু গোশত ফ্রিজে রাখবেন, বিদ্যুতের অভাবে সেটাও নষ্ট হয়ে যাবে। আবার বিদ্যুতের বিল দিয়েও মোমবাতি ও কেরোসিন কিনে ব্যবহার করতে হবে। পদ্মা সেতু নির্মাণ করে সক্ষমতা প্রকাশ করা হলেও রাজধানী ঢাকার কর্মজীবীরা গ্রামে গিয়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখলে তাতে রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
জানা গেছে, গত জুন মাসের শেষ সপ্তাহে খোলা বাজার থেকে এলএনজি কিনতে প্রতি ইউনিটে (এমএমবিটিইউ) খরচ হয়েছিল প্রায় ২৫ ডলার। সেটি এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০ ডলার। এ কারণেই সরকার খোলা বাজার থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ রেখেছে। এ অবস্থায় জাতীয় গ্রিডে যে পরিমাণ গ্যাস ঘাটতি হচ্ছে, তা দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে জোগান দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ জন্য বেশ কয়েকটি কূপে ওয়ার্কওভার করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান ইনকিলাবকে বলেন, এ পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বই সাশ্রয়ী হচ্ছে। এলএনজির দাম কমলে খোলা বাজার থেকে আমদানি করা হবে। এখন দেশীয় উৎস থেকে উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। গ্যাসের বিকল্প হিসেবে জ্বালানি তেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। তবে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামও চড়া। তেল আমদানি করে দিনে ১০০ কোটি টাকার বেশি লোকসান দিচ্ছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। তাই তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রও পুরোদমে চালানো যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
প্রতিদিন বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে গড়ে ৩০০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হতো। দুই দিন ধরে সরবরাহ ২৭৫ থেকে ২৮০ কোটি ঘনফুট। আমদানি কমায় গ্যাস সরবরাহ কমে গেছে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বিপাকে পড়েছে দেশের সব ধরনের ভোক্তা ও শিল্পখাত। গত ১৩ বছরে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ খাতে সরকারি ও বেসরকারিভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে সে তুলনায় অনেক জেলার মানুষ গ্যাস ও বিদ্যুৎ সবিধা থেকে বঞ্চিত। ২০০৬ সালের একমাত্র বিদ্যুতের অভিযোগে বিএনপি সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছিল। সেই সময় দাম ছিল অনেক কম। ১৩ বছরে তা বেড়েছে কয়েক গুণ।
জানতে চাইলে ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বিকাশ দেওয়ান ইনকিলাবকে বলেন, বর্তমানে গ্রাহকের ভোগান্তি কমাতে বিভিন্ন এলাকায় ভাগাভাগি করে লোডশেডিং করা হচ্ছে। জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা হয়েছে।
গত ১৮ মে বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানোর বিষয়ে শুনানি হয়েছে। ইতোমধ্যে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর দিকেই এগোচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। ভোক্তা সংগঠনগুলো বলছে, এ মুহূর্তে দাম বাড়ানো হলে তা জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কোনোভাবে দাম বাড়ানো যৌক্তিক হবে না। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর শুনানিতে অংশ নিয়ে গ্রাহকরা দাম বাড়ানোর বিরোধিতা করেন। শুনানিতে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) বিদ্যুতের দাম বাড়াতে গত মাসেই গণশুনানি সম্পন্ন করেছে বিইআরসি। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়ে বিইআরসির কারিগরি কমিটি সুপারিশও করেছে। বিইআরসির টেকনিক্যাল কমিটি ২ দশমিক ৯৯ টাকা বাড়ানোর সুপারিশ করে। অর্থাৎ প্রায় ৫৮ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে ওই কমিটি। নিয়ম অনুযায়ী শুনানির পরবর্তী তিন মাসের মধ্যেই দাম বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই অনুযায়ী যে কোনো দিন বিদ্যুতের দাম বাড়তে পারে বলে জানা গেছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণকারী কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, সরকার লোডশেডিং করছে বাধ্য হয়ে। সরবরাহ– সঙ্কট থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় গ্যাস দেয়া যাচ্ছে না। বিশ্ববাজারে দাম চড়া, তাই খোলাবাজার (স্পট মার্কেট) থেকে আপাতত তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কিনছে না সরকার। দেশে যে পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ করা হয়, তার একটি বড় অংশ ব্যবহার করা হয় বিদ্যুৎ উৎপাদনে। শিল্পকারখানায়ও বিপুল পরিমাণ গ্যাস লাগে। লাইনে গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় শিল্পকারখানায়ও উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
বাংলাদেশ তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ করপোরেশন পেট্রোবাংলা সূত্র বলছে, দেশে দিনে গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৩৭০ কোটি ঘনফুট। বিপরীতে গড়ে ৩০০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করা যেত। এর মধ্যে দেশের গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদিত হয় ২২০ থেকে ২৩০ কোটি ঘনফুট। বাকি ৭০ থেকে ৮০ কোটি ঘনফুট আমদানি করা হয়। দুই দিন ধরে সরবরাহ করা হচ্ছে দিনে ২৭৫ থেকে ২৮০ কোটি ঘনফুট।
বিদেশ থেকে জাহাজে তরল অবস্থায় গ্যাস আমদানি শুরু হয় ২০১৮ সালে। তখন অনেকেই এর বিরোধিতা করে বলেছিলেন, বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বেড়ে গেলে সঙ্কট সৃষ্টি হবে। এখন বিশ্ববাজারে গ্যাসের দাম অনেক চড়া। ফলে আমদানিতে ব্যয় অনেক বেশি পড়ছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ২০২০ সালে যে গ্যাস প্রতি ইউনিট ৪ মার্কিন ডলারে নেমে গিয়েছিল, তা এখন বেড়ে ৩৮ ডলার ছাড়িয়েছে। সর্বশেষ কেনা হয়েছিল ২৫ ডলারে। এতে নতুন করে গ্যাস কিনতে বিপুল বাড়তি ব্যয়ের মুখে পড়তে হচ্ছে। এমন অবস্থায় কিছু দিন ধরেই ধাপে ধাপে কমানো হচ্ছিল গ্যাসের সরবরাহ। এলএনজি কেনা না হলে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই আপাতত।
সরকারিভাবে এলএনজি আমদানি করে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল)। সরকারি এ কোম্পানির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, এলএনজি কেনার কাজটি তারা করলেও সিদ্ধান্ত দেয় পেট্রোবাংলা ও সরকার। গত মাসে স্পট মার্কেট থেকে কেনা গ্যাস নিয়ে তিনটি কার্গো (জাহাজ) এসেছে। দিনে ৭৫ থেকে ৮০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করা হয়েছে। এ মাসে কয়েক দিন ধরে ৫০ কোটি ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে। মূলত রোববার থেকে সরবরাহ কমে যায়। এখন শুধু দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় ওমান ও কাতার থেকে আসা এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ রোববার নিজের ফেসবুক পেজে অনেক জায়গাতেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন পুনরায় স্বাভাবিক হবে। রাশিয়া–-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির উচ্চমূল্য ও সরবরাহ অন্যান্য সব দেশের মতো বাংলাদেশকেও সমস্যায় ফেলেছে। গতকাল প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ১০ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে। এই কেন্দ্রগুলোতে এখন অর্ধেকেরও কম বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, গ্যাসের দাম এখন আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেটে প্রতি ঘনফুট ৩৬ ডলার হয়েছে। যেহেতু এই নিতে হচ্ছে।
গ্যাসের চাপ কম থাকায় রান্না নিয়ে বিপাকে পড়েছে নগরবাসী। তিতাস সূত্র বলছে, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, বারিধারা, বাড্ডা ও কেরানীগঞ্জ এলাকায় গ্যাসের চাপ একেবারেই কম। কাঁঠালবাগান, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, যাত্রাবাড়ীসহ বেশ কিছু এলাকায়ও গ্রাহকেরা সঙ্কটে রয়েছেন। কোনোরকমে রান্নার চুলা জ্বলছে এসব এলাকায়।
বিদ্যুতের ঘাটতি
বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে দেশে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ২৭, যা এখন ১৫২টিতে দাঁড়িয়েছে। ওই সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ৫ হাজার মেগাওয়াটের কম, যা এখন দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াট (ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্যসহ)। অবশ্য এত বিদ্যুতের চাহিদা দেশে নেই। বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা তৈরি করে অনেক কেন্দ্রকে বসিয়ে বসিয়ে ভাড়া দেয়া, বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো নিয়ে ব্যাপক সমালোচনাও রয়েছে। বিশেষজ্ঞ ও ভোক্তা অধিকার সংগঠনগুলো এ নিয়ে সমালোচনা তো করছিলই, গত মে মাসে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনও (এফবিসিসিআই) বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলে। সংগঠনটি তখন এক সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ খাতকে অদক্ষ বলে অভিহিত করে সংস্কারে পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। এফবিসিসিআই সংবাদ সম্মেলনটি করেছিল বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের কারণে। সেই প্রক্রিয়া চলছে। এরই মধ্যে ফিরল লোডশেডিংও।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সূত্রে জানা গেছে, দিনে গড়ে দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে। গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের অধিকাংশই বন্ধ রাখতে হচ্ছে। তাই রোববার থেকে সারা দেশে লোডশেডিং বাড়ানো হয়েছে।
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) গতকালও চাহিদার চেয়ে প্রায় ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম সরবরাহ পেয়েছে। দিনে এ সংস্থার চাহিদা ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট। রাজধানীর আরেকটি বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) সরবরাহ কমেছে দিনে ১৫০ মেগাওয়াট। এ সংস্থার দিনে চাহিদা ১ হাজার মেগাওয়াট, গতকাল পেয়েছে ৮৫০ মেগাওয়াট।
সবচেয়ে বেশি খারাপ পরিস্থিতি ঢাকার বাইরের বিভিন্ন এলাকায়। দেশের বৃহত্তম বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের প্রায় ৫৫ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আরইবি। পরিমাণের দিক দিয়ে যা ৮ হাজার মেগাওয়াটের মতো। গত রোববার ৮৫১ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হয়েছে আরইবিকে। সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং করা হচ্ছে ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোয়। কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, রাজশাহী, বগুড়ায়ও বেড়েছে লোডশেডিং। সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, নোয়াখালী, ফেনী, চাঁদপুরেও লোডশেডিং করতে হচ্ছে। দিনে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না গ্রাহকেরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।