পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপির দেয়া নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়ে সরকারকে অবিলম্বে আলোচনায় বসার আবারো আহ্বান জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে। ২০০৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় নয় বছর গণতন্ত্রহীনতার মধ্যে রয়েছি। কেউ যদি মনে করেন এর কোনো সমাপ্তি হবে না, চলতেই থাকবে, তা হবে মারাত্মক ভুল। এই পরিস্থিতির সমাপ্তি হবেই। সেটা বিএনপির নেতৃত্বেই হবে। আমরা দেশে গণতন্ত্র চাই বলেই বেগম জিয়া প্রস্তাব দিয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মওদুদ আহমদ সরকারকে সমঝোতার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা আবারো সরকারকে আহ্বান জানাই, আসুন একটা সমঝোতার মাধ্যমে কি করে একটি নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন করতে পারি, সে ব্যাপারে আমরা আলোচনা করি। আমরা বিএনপির তরফ থেকে সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করব।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের যে প্রস্তাব সেটা সম্পূর্ণ গ্রহণ করতে হবে এমন কোনো কথা নাই। এটার মধ্যে অন্যান্য দলও মতামত দিতে পারে এবং এটা আরো কীভাবে উন্নত করা যেতে পারে, আমরা যদি দেখি প্রস্তাবে কোন সাংবিধানিক অসুবিধা আছে, সেটা আমরা শুদ্ধ করে নিতে পারি। আমরা বলি, আমাদের প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করে একটা সমঝোতায় আসি। তাহলেই এদেশে আবার গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারবো।
উল্লেখ্য, গত ১৮ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনসহ অন্যান্য বিষয়ে ১৩ দফা প্রস্তাব দেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে ‘নিরপেক্ষ সরকার, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন, জনগণের ভোটাধিকার ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পূর্বশত’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়। সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে সদস্য সচিব অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, সাংবাদিক মাহফুজউলাহ, প্রকৌশলী আ ন হ আখতার হোসেন, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, অধ্যাপক মোস্তাক রহিম স্বপন, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বাচ্চু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মওদুদ আহমদ বলেন, সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। সেই ২০০৭ সাল যদি ধরেন এখন পর্যন্ত প্রায় ৯ বছর গণতন্ত্রহীনতায় আমরা রয়েছি। যদি কেউ মনে করেন, এর কোনো সমাপ্তি নাই, এটা চলতেই থাকবে, এটা ঠিক না। এর সমাপ্তির ইনশালাহ হবে। বিএনপির নেতৃত্বে আমরা আবার বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারবো।
নির্বাচন কমিশন গঠন ও শক্তিশালীকরণ নিয়ে বিএনপির প্রস্তাবাবলী আওয়ামী লীগ নাকচ করে দেয়ায় সমালোচনা করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যে একটি অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দল, তারা যে একটি একদলীয় মনোভাবাপন্ন একটি রাজনৈতিক দল। সেজন্য তারা আমাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের উচিৎ ছিলো, এই প্রস্তাবনাকে স্বাগত জানানো এবং জাতীয়ভাবে বিতর্কের একটি আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টি করা। যদি তারা সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রের বিশ্বাস করে। সেই ১৯৭২ সালের একই ধারণা নিয়ে আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনা করছে। এখন ক্ষমতায় থাকার জন্য যা কিছু করার দরকার তাই করছে।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের প্রসঙ্গে মওদুদ আহমদ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য অতীতে তিন বছর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলন করেছেন। ওই সময়ে বলেছেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কনসেপ্ট আমার ব্রেইন চাইল্ড। কত মানুষ তখন মারা গেছে, কত আন্দোলন হয়েছে, কত ভাংচুর হয়েছে, কত গাড়ি পোড়নো হয়েছে, রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিগত কত সম্পত্তির ক্ষতি করা হয়েছে। ওই নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠান জন্য কত হরতাল করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমার মনে হয়, পৃথিবীতে এটা একটা অনন্য দৃষ্টান্ত একজন জাতীয় পর্যায়ের নেতা যিনি এরকমভাবে একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি অবস্থান গ্রহণ করতে পারেন। অন্যকোনো দেশ হলে সেই রাজনীতিবিদকে তখন দেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করতো। সেইদিন বললেন, নির্দলীয় সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হয় না। কত জায়গা পত্র-পত্রিকায় আছে আপনার কথা। আজকে একই ব্যক্তি বলেছেন, না, সরকারি দলের অধীনে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। ওই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ওইটা অগণতান্ত্রিক। যেটা আমাদের বেগম খালেদা জিয়া বলতেন, সেটা এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছেন। এই হলো রাজনৈতিক চরম অবক্ষয়।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নাসিক নির্বাচনে সেনাবাহিনী না চেয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী পরিষ্কার করেছেন সেনাবাহিনী থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন আর না থাকলে সিলেকশন হয়। অথচ গত সিটি নির্বাচনে আইভী সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়েছিলেন যার কারণে সেনাবাহিনীর প্রয়োজনের কথা বলেছিলেন। এবার তিনি নির্বাচন নয়, সিলেকশন করবেন এ কারণে তিনি সেনাবাহিনী চাচ্ছেন না। সেনাবাহিনী মোতায়ন ছাড়া বাংলাদেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
ইসি নিয়ে বিএনপির দেয়া প্রস্তাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার গতিশীল ও তথ্য নির্ভর এই প্রস্তাব সরকারের মধ্যে নার্ভানেস দেখা দিয়েছে। তারা ভাবছে এই প্রস্তাব না মেনে নিলে জনগণের সাথে আরেকবার প্রতারণা করা হবে। এজন্যই খালেদা জিয়ার প্রস্তাব না পড়েই অন্তঃসারশূন্য বলেছে।
আমির খসরু বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়ার কারণেই দেশের চলমান সঙ্কট চলছে। ফলে তারা একের পর এক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।