Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রেকর্ড ৮.৬ % মূল্যস্ফীতির চাপে ইউরো অঞ্চল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০২২, ১২:০৩ এএম

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে বৈশ্বিক জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের বাজার। চীনের কভিডজনিত সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতাও অব্যাহত রয়েছে। এ অবস্থায় ইউরো অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান রয়েছে মূল্যস্ফীতি। জুনেও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে পণ্যের দাম। নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোকে বিপর্যয়ে ঠেলে দেয়া মূল্যস্ফীতির চাপ মে মাসের রেকর্ডকেও ভেঙে দিয়েছে। খবর এপি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাট জানিয়েছে, জুনে ইউরো অঞ্চলের ১৯টি দেশে বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৬ শতাংশে পৌঁছেছে। মে মাসে এ হার ৮ দশমিক ১ শতাংশ ছিল। গত মাসের মূল্যস্ফীতি ১৯৯৭ সালে সম্মিলিত রেকর্ড শুরু হওয়ার পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। ইউরো মুদ্রা ব্যবহার করা দেশগুলোয় জ্বালানির দাম ৪১ দশমিক ৯ শতাংশ এবং অ্যালকোহল ও তামাকজাত পণ্যের দাম ৮ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। উভয় হারই আগের মাসে রেকর্ড করা বৃদ্ধির চেয়ে বেশি। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন এবং কভিডের বিপর্যয় কাটিয়ে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতিগুলো ঘুরে দাঁড়ানোয় জ্বালানির চাহিদা ও দাম দুটোই বেড়েছে। এ অবস্থায় ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের (ইসিবি) ওপর সুদের হার বাড়ানোর চাপ বাড়ছে। চলতি মাসের শেষ দিকে ব্যাংকটি ১১ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো সুদের হার বৃদ্ধির প্রস্তুতি নিয়েছে। তবে দামের অস্থিরতার মধ্যে থাকা জ্বালানি ও খাদ্য বাদ দিয়ে তথাকথিত কোর মূল্যস্ফীতি কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। পোশাক, যন্ত্রপাতি, গাড়ি, কম্পিউটার ও বইয়ের মতো পণ্যের দাম বৃদ্ধি ৪ দশমিক ৩ শতাংশে মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে। গত মাসে অঞ্চলটিতে পরিষেবার দাম ৩ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। এদিকে চলতি বছরের শেষ নাগাদ ইইউ নেতারা বেশির ভাগ রুশ জ্বালানি তেল আমদানি নিষিদ্ধ করতে সম্মত হয়েছেন। এ খবরের পরে দামও বেড়েছে। ২৭ দেশের ব্লকটি মস্কোকে শাস্তি দিতে দেশটির জ্বালানিনির্ভরতা কমিয়ে আনতে চাইছে। যদিও জ্বালানি বিল ও দাম বেড়ে যাওয়ায় এটি জনগণ এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আর্থিক যন্ত্রণাও যোগ করেছে। রাশিয়াও জার্মানি, ইতালি ও অস্ট্রিয়ার মতো বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি ফ্রান্স, পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় রুশ গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আইএনজি ব্যাংকের ইউরো অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ বার্ট কলিজন বলেন, জুনে উন্মোচিত জ্বালানি তেলে নিষেধাজ্ঞা এবং গ্যাস সরবরাহে চাপের কারণে জ্বালানির দাম বেড়েছে। সুতরাং জ্বালানি খাতে নিষেধাজ্ঞা যত বাড়বে, জ্বালানির দামও ঠিক ততটাই বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। যদিও ভোক্তা পর্যায়ে ক্রমবর্ধমান মূল্য বৈশ্বিক একটি সমস্যায় পরিণত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতি যথাক্রমে ৮ দশমিক ৬ এবং ৯ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এ হার দেশগুলোর ইতিহাসে চার দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফেডারেল রিজার্ভ ও ব্যাংক অব ইংল্যান্ডসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো পর্যায়ক্রমে সুদের হার বাড়িয়ে যাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের তথ্যে দেখা গিয়েছে, রুশ সস্তা গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করা রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোয়ও মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। বার্ষিক মূল্যস্ফীতি এস্তোনিয়ায় ২২ শতাংশ, লিথুয়ানিয়ায় ২০ দশমিক ৫ শতাংশ ও লাটভিয়ায় ১৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ইউরো মুদ্রা ব্যবহার করে না তবে ইইউর সদস্য পোল্যান্ডে ভোক্তা পর্যায়ে পণ্যের দাম এক বছর আগের তুলনায় ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, পোল্যান্ডে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পেট্রল ও ডিজেলের দাম। জুনে দেশটির জ্বালানি তেলের দাম গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৬ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ে খাদ্যের দাম বেড়েছে ১৪ দশমিক ১ শতাংশ। এপি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মূল্যস্ফীতি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ