Inqilab Logo

শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

কোটিপতি হিসাবধারী বেড়েছে ১৬২১ জন

তিন মাসের পরিসংখ্যান : আমানত বৃদ্ধি ৯ হাজার ৬৪৭ কোটি টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০২২, ১২:০১ এএম

মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমার সঙ্গে বিশ্ব অর্থনীতিতে ফের চাঙ্গাভাব ফিরে এসেছে। শিল্প-কারখানার চাকাও ঘুরছে আগের মতো। এতে দেশের অর্থনীতিও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। দেশের রফতানি আয়ের ৮৪ ভাগ নেতৃত্ব দেয়া তৈরিপোশাক খাতের রফতানি আদেশ আবারও আগের অবস্থানে। অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে দেশে বাড়ছে কোটিপতির সংখ্যাও। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে দেশে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা নতুন করে বেড়েছে এক হাজার ৬২১টি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।

কোটিপতি অ্যাকাউন্ট ও আমানত বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন তথ্য দিয়ে সকল কোটিপতি হিসাব এখানে আসেনি। কারণ অনেক কোটিপতি আছেন যারা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বাইরে রয়েছে। এই সংখ্যা একদিকে যেমন দেশের উন্নয়ন ও আয় বাড়ার প্রমাণ দিচ্ছে অন্যদিকে এটি বৈষম্য বৃদ্ধিরও প্রমাণ।
এ প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেশের প্রবৃদ্ধি ভালো আছে। নতুন নতুন কলকারখানা হচ্ছে। আমদানি-রফতানি বাড়ছে। এতে মুনাফা বাড়ছে। তাই কোটিপতির সংখ্যাও বাড়ছে। কিন্তু অন্যদিকে দরিদ্র মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। এটি প্রমাণ করে যে দেশে বৈষম্যও বেড়ে চলেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব মতে, গত ২০২০ সালের মার্চ মাসে দেশে করোনাভাইরাস প্রকোপ শুরুর সময় দেশের ব্যাংকগুলোতে এক কোটি টাকার বেশি থাকা হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার ৬২৫টি। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে সে সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যায়। ২০২২ সালের মার্চ প্রান্তিক শেষে দেশে কোটিপতি হসাবধারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৩ হাজার ৫৯৭টিতে। এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের শেষে কোটিপতি হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল এক লাখ এক হাজার ৯৭৬টি। সে হিসাবে তিস মাসের ব্যবধানে কোটিপতি হিসাবধারীর (ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান) সংখ্যা বেড়েছে এক হাজার ৬২১টি।
এসব হিসাবে (মার্চ প্রান্তিক শেষে) আমানতের পরিমাণ ছয় লাখ ৬৩ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা। যা গত ডিসেম্বর শেষে আমানতের পরিমাণ ছিল ছয় লাখ ৫৩ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে তিন মাসে এসব হিসাবে আমানত বেড়েছে ৯ হাজার ৬৪৭ কোটি টাকা।
চলতি বছরের মার্চ মাস শেষে ব্যাংকিংখাতে মোট হিসাবধারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৭৩ লাখ। এসব হিসাবে আমানতের পরিমাণ ১৫ লাখ ১৪ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা।
ব্যাংকাররা জানান, কোটি টাকার হিসাব মানেই কোটিপতি ব্যক্তির হিসাব নয়। কারণ ব্যাংকে এক কোটি টাকার বেশি অর্থ রাখার তালিকায় ব্যক্তি ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। আবার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কতটি ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে, তার কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। ফলে এক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির একাধিক হিসাবও রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কোটি টাকার হিসাবও রয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে দেখা যায়, মোট ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তুলনায় কোটিপতিদের একাউন্ট সংখ্যা ১ শতাংশও নয়। কিন্তু এসব অ্যাকাউন্টে মোট আমনতের প্রায় ৪৪ শতাংশ টাকা জমা আছে। চলতি বছরের মার্চ মাস শেষে ব্যাংকখাতে মোট অ্যাকাউন্ট সংখ্যা দাড়িয়েছে ১২ দশমিক ৭৩ কোটি এবং এসব অ্যাকাউন্টে মোট আমানত জমা আছে ১৫ লাখ ১৪ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি আমানতকারী ছিল ৫ জন। ১৯৭৫ সালে তা ৪৭ জনে উন্নীত হয়। ১৯৮০ সালে কোটিপতি হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৯৮টি। এরপর ১৯৯০ সালে ৯৪৩টি, ১৯৯৬ সালে ২ হাজার ৫৯৪টি, ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২টি, ২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭টি এবং ২০০৮ সালে ছিল ১৯ হাজার ১৬৩টি। ২০২০ সালে ডিসেম্বর শেষে দাঁড়ায় ৯৩ হাজার ৮৯০টিতে।##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কোটিপতি

১ মার্চ, ২০২২
৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ