Inqilab Logo

শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

কোটিপতি আমানতকারী ৮০ হাজার ছাড়াল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারী এখন ৮০ হাজারেরও বেশি। গত তিন মাসে কোটিপতি আমানতকারী বেড়েছে ৪ হাজার ১১০ জন। এ বছরের জুন মাস শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার ৩৯৬ জন। মার্চ শেষে এই সংখ্যা ছিল ৭৬ হাজার ২৮৬ জন। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়াকে ভালো চোখে দেখছেন না বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। তিনি বলেন, ব্যাংক থেকে লুট করা একটি শ্রেণি কোটি কোটি টাকার মালিক হচ্ছেন। আবার তারাই হয়তো ব্যাংকে টাকা রাখছেন। এছাড়া শেয়ারবাজার থেকেও লুট করা একটি শ্রেণি কোটি কোটি টাকার মালিক হচ্ছেন। এটা মূলত সংবিধান পরিপন্থী ও কল্যাণ অর্থনীতির নীতি থেকে সরে আসার কারণেই হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, গত দশ বছরে অর্থাৎ ২০০৯ সালের জুনের তুলনায় ২০১৯ সালের একই সময়ে ৫৮ হাজার ৯০৪ জন মানুষ কোটিপতির তালিকায় নতুন করে নাম লিখিয়েছেন। ২০০৯ সালের জুন মাস শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ২১ হাজার ৪৯২ জন। এখন এই সংখ্যা ৮০ হাজার ৩৯৬ জন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৯ সালের জুন শেষে ৫০ কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা ব্যক্তি রয়েছেন এক হাজার ২৩৮ জন। তিন মাস আগে অর্থাৎ মার্চ শেষে এই সংখ্যা ছিল এক হাজার ১৪৯ জন। ব্যাংকে এক কোটি টাকা আমানত রাখা ব্যক্তি ৬৩ হাজার ৪৮১ জন। এই বছরের মার্চ শেষে এই সংখ্যা ছিল ৫৯ হাজার ৯৮০ জন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই বছরের জুন শেষে ৪০ কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা ব্যক্তি রয়েছেন ৩৬৪ জন। ৩৫ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ২৬২ জন। ৩০ কোটি টাকারও বেশি আমানত রেখেছেন ৩২২ জন। ২৫ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ৫৩১ জন। ২০ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ৯৭৩ জন। ১৫ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ১ হাজার ৩৯৬ জন। ১০ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ৩ হাজার ৩২ জন। পাঁচ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন ৮ হাজার ৭৯৭ জন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, দেশে কোটিপতির তালিকায় প্রতিবছরই গড়ে সাড়ে ৫ হাজার ব্যক্তি নতুন করে যুক্ত হচ্ছেন।

কোটিপতির তালিকা বড় হওয়াকে সমাজে বৈষম্য বাড়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, যারা হঠাৎ কোটি টাকার মালিক হচ্ছেন তাদের আয়ের উৎস কী? কোটিপতিদের অনেকেই হয়তো ব্যাংকে টাকা রাখছেন না। তিনি বলেন, কালো টাকা পেয়ে সমাজে একটি বিশেষ শ্রেণি ধনী হয়ে যাচ্ছে। এই কালো টাকার মালিকরা আবার বিভিন্নভাবে টাকা পাচারও করছেন।

এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি ছিলেন মাত্র পাঁচ জন। ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বরে এই সংখ্যা বেড়ে ৪৭ জনে দাঁড়ায়। ১৯৮০ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৮ জনে। এরশাদ সরকারের পতনের সময় ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতির সংখ্যা ছিল ৯৪৩ জন। ১৯৯৬ সালের জুনে কোটিপতি ছিলেন দুই হাজার ৫৯৪ জন। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর শেষে এ সংখ্যা দাঁড়ায় পাঁচ হাজার ১৬২ জনে। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার ৮৮৭ জনে। ২০০৮ সালে ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারী ছিলেন ১৯ হাজার ১৬৩ জন।

 



 

Show all comments
  • কপাল পোড়া বাঙালি ৩০ অক্টোবর, ২০১৯, ১:১৬ এএম says : 0
    আরে বোকা গভর্নর দুর্নীতি বাজরা বাংলাদেশের ব্যাংকে টাকা রাখে খুবই কম, তারা কিনে প্রোপারটিস, এবং তারা টাকা রাখে বিদেশের ব্যাংকে.
    Total Reply(0) Reply
  • ahammad ৩০ অক্টোবর, ২০১৯, ৩:২০ এএম says : 0
    ১০০% সহমত পোষন করলাম।
    Total Reply(0) Reply
  • অমিত কুমার ৩০ অক্টোবর, ২০১৯, ১০:০৫ এএম says : 0
    খুব ভালো খবর
    Total Reply(0) Reply
  • মনিরুজ্জামান ৩০ অক্টোবর, ২০১৯, ১০:০৫ এএম says : 0
    ব্যাংক থেকে লুট করা একটি শ্রেণি কোটি কোটি টাকার মালিক হচ্ছেন। আবার তারাই হয়তো ব্যাংকে টাকা রাখছেন।
    Total Reply(0) Reply
  • কাওসার আহমেদ ৩০ অক্টোবর, ২০১৯, ১০:০৬ এএম says : 0
    সমাজে ধনী দরিদ্রের বৈষম্য ক্রমেই বেড়েই চলেছে
    Total Reply(0) Reply
  • আয়শা ৩০ অক্টোবর, ২০১৯, ১০:০৭ এএম says : 0
    বিদেশে অর্থপাচার রোধে সরকারকে কঠোর হতে হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কোটিপতি

১ মার্চ, ২০২২
৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ