পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিপুল পরিমাণ একশ, পাঁচশ ও এক হাজার টাকার নোট, কাড়ি কাড়ি পয়সা। উঠোনে বসে কয়েকজন তা গুনছিলেন। কুমিল্লার তিতাস উপজেলার গাজীপুর আমির হোসেন ওরফে বিশা পাগলা (৫৭) নামের এক পাগলের মৃত্যুর পর তার ঘরে পাওয়া গেল এ টাকা-পয়সা। যার পরিমাণ ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। ঘরে বিদেশি মুদ্রাসহ স্বর্ণ ও রুপার অলঙ্কার মেলে।
সূত্র মতে, বিশা পাগলা তিনি ছিলেন আধ্যাত্মিক পাগল। ব্যক্তি জীবনে তিনি বিয়ে শাদি করেননি। মুসলিম ও হিন্দু-নির্বিশেষে সব লোকজনের যাতায়াত ছিল ওই পাগলের বাড়িতে। ঈদুল আযহার আগের রাতে মারা যান তিনি। ওই সাধক পাগলের দেহাবসানের পর তার বাড়িতে আশ্চর্যজনকভাবে এলাকার এমনকি দেশের দূর দূরান্তের লোকজনের ভিড় বাড়তে থাকে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, বিশা পাগল জীবত থাকাকালীন তাকে মানত কিংবা দান খয়রাত করলে মনোবাসনা পূরণ হয়। এমন বিশ্বাস থেকে বিভিন্ন বয়সের হিন্দু-মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের নারী-পুরুষ মানত নিয়ে আসতেন তার বাড়িতে। তারা নগদ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ ও রুপার অলঙ্কারের পাশাপাশি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি দান করতেন। এই দান খয়রাতের আয় দিয়েই নিজের ভরণ-পোষণ চালাতেন তিনি। গত শনিবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তার আত্নীয় স্বজন তাকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর পর গতকাল সকাল ১০টায় স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় বিশা পাগলের স্বজন ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে স্থানীয় লোকজন ওই ঘরে থাকা সিন্দুক ও আলমারী থেকে পলিথিনের কয়েকটি ব্যাগ উদ্ধার করেন। ওই ব্যাগে ছিল টাকা ও পয়সা। বিকেল পর্যন্ত বাড়ির উঠানে পাটি বিছিয়ে ওই টাকা মেশিনের মাধ্যমে গোনা হয়। গুনে ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা পাওয়া যায়। এ ছাড়া ঘরে পাওয়া যায় ৮ ভরি স্বর্ণ অলংঙ্কারসহ বিদেশী মুদ্রা।
স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর হোসেন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, তার বাড়ির সিন্দুক ও আলমারীতে কোটি কোটি টাকা জমা ছিল তা অকল্পনীয়। বিশা পাগলা যে আড়াই কোটি টাকা ও এত স্বর্ণ অলংঙ্কারসহ বিদেশী মুদ্রার মালিক তা সহজে বোঝা যায়নি। কারণ তার চলাচল ছিল অতি সাধারণ।
বিশা পাগলার ছোট ভাই জামাল হোসেন বলেন, আমার ভাই বিশা পাগলা ছিলেন আধ্যাত্মিক সাধক। ব্যক্তি জীবনে তিনি বিয়ে শাদি করেননি। তিনি সকল শ্রেণীর মানুষের সেবা করে বেড়াতেন। তিনি বছর পাঁচ এক আগে পবিত্র মক্কা নগরীতে গিয়ে হজ্জও পালন করে এসেছেন।
তার ভাতিজা মিঠু বলেন, চাচা সবসময় বাড়িতেই থাকতেন। বিভিন্ন সময়ে দূর দূরান্ত থেকে মুসলিম ও হিন্দুসহ সকল শ্রেণীর মানুষ আসতেন তাদের সেবাযত্ন করতে দেখেছি। তবে তার একটি আধুনিকমানের মসজিদ নির্মাণ করার ইচ্ছা ছিল।
এ প্রসঙ্গে তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুধীন চন্দ্র দাস দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশের উপস্থিতিতে টাকাগুলো মেশিনের মাধ্যমে গননা ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা পাওয়া যায়। এ ছাড়া ঘরে পাওয়া গেল ৮ ভরি স্বর্ণ অলংঙ্কারসহ বিদেশী মুদ্রা রয়েছে। তবে বিশা পাগলা নামের ব্যক্তির জন্য দোয়া পড়ার খরচা দেড় লাখ টাকা আলাদা রেখে বাকি টাকাগুলো তার ওয়ারিশ জীবিত দুই ভাই ও এক বোনের যৌথ একাউন্ট করে ব্যাংকে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।