পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচল করবে দক্ষিণ-পশ্চিমের ২১ জেলার যানবাহন। এতে সাশ্রয় হবে সময়, কমে আসবে লঞ্চ ও ফেরির গুরুত্ব। ৩০ টনের বেশি ওজনের ট্রাক পারাপার ও বিকল্প রুট হিসেবে এ ঘাট সচল থাকবে। সেখানে চালু থাকবে ফেরি ও লঞ্চ। এখনই গুরুত্ব হারাচ্ছে না এই নৌরুট অর্থাৎ শিমুলিয়া ঘাট।
গতকাল শুক্রবার বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান আহমদ শামীম আল রাজী ইনকিলাবকে এ তথ্য জানান। বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান বলেন, ৩০ টনের বেশি ওজনের ট্রাক পারাপার ও বিকল্প রুট হিসেবে এ ঘাট সচল থাকবে। তবে কমে যাবে ফেরির সংখ্যা। বেশি ওজনের ট্রাক ও সেতুতে রেললাইন বসানোর কারণে আসতে পারে ভারি যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা। এছাড়া এখন আয়ের উৎস ধরে রাখতে বিকল্প রুট খুঁজছে বিআইডব্লিউটিসি। এরই মধ্যে করা হয়েছে ৮-৯টি রুট সার্ভে।
এদিকে শিমুলিয়া ঘাট সম্পর্কে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলেও শিমুলিয়া ঘাট থাকবে। এই ফেরি সার্ভিসের চাহিদা আছে। দূরপাল্লার যানবাহনগুলো এই রুটটি বেছে নেবে। কারণ ফেরিতে তাদের একটি বিশ্রাম হবে। পণ্যবাহী যানবাহনের জন্যও এর চাহিদা থাকবে। পর্যটন ও ইকোজোন করার পরিকল্পনার নেয়া হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নদীকে থামিয়ে রাখা যাবে না, নদী বহমান। নদীকে ঘিরেই আমাদের জীবন-জীবিকা। নদীর সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক সেটা বন্ধ করা যাবে না। এসব অব্যাহত থাকবে। যদিও শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও মাঝিরকান্দি রুটে ফেরিতে বড় গাড়ি পারাপার বন্ধ। তারপরও এই দুই রুটে দিনে পার হয়Ñ দুই থেকে আড়াই হাজার গাড়ি, আয় ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হচ্ছে আগামী ২৫ জুন। এরপর রাজধানীর সঙ্গে বাগেরহাটের মংলাবন্দরের দূরত্ব অনেক কমে আসবে। এ কারণে এ বন্দরে ব্যবসায়ীদের চাপ বাড়বে। বন্দরে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন করে সেই সক্ষমতাও বাড়ানো হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীরা কতটা সুবিধা পাবেন, এ নিয়ে রয়েছে নানান মত। তারা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হলে ব্যবসায়ী সুবিধার্থে তারা মংলাবন্দরের দিকে ঝুঁকবেন। কিন্তু এখনও অনেকভাবেই তাদের ব্যবসার ক্ষেত্রে বাধা রয়েছে। আর তা হচ্ছে সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বন্দর জেটির নাব্য সঙ্কট।
বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা ইনকিলাবকে বলেন, পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে এ বন্দরে অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আরেকটা বড় প্রকল্প-মহাসড়কে ছয় লেনে উন্নীত করার কাজ বাস্তবায়ন চলছে। বন্দরের আউটার বার ড্রেজিং সম্পন্ন হয়েছে। ইনারবার ড্রেজিংয়ের (জেটি থেকে পশুর নদী) কাজও শুরু হয়েছে। বন্দরে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এর সুফল পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। কোনো প্রকল্পই পিছিয়ে নেই। সবকিছুই ঠিক সময়ের মধ্যে করা হবে। মংলাবন্দর বার্থ-শিপ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকা ও চট্টগাম থেকে যোগাযোগ অনেকটা কমে যাবে। এর ফলে ঢাকার আশপাশে যে শিল্প কারখানা আছে, সেগুলোর পণ্য মংলাবন্দরের মাধ্যমে রফতানি শুরু হবে। এতে এই বন্দরের ব্যস্ততাও বেড়ে যাবে। কিন্তু এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন সেটা হলো, বন্দর জেটিতে নাব্যতা বাড়াতে হবে। বর্তমানে বন্দর জেটিতে ৭ মিটার নাব্যতা আছে। প্রয়োজন সাড়ে ৯ মিটারের নাব্যতা। তাই দ্রুত নাব্যতা ন্যূনতম ৮ মিটারে উন্নীত করতে হবে। যেকোনো বিদেশি জাহাজ মালিক যখন এই বন্দরে জাহাজ পাঠান, তখন লাভ-লোকশানের একটা হিসাব তারা করেন। সেক্ষেত্রে এখান থেকে জাহাজে যে পরিমাণ পণ্য রফতানি হবে, তাতে তারা লাভবান হবেন না। অনাগ্রহ প্রকাশ করবেন। তাই পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর মংলাবন্দর দিয়ে যে পরিমাণ পণ্য রফতানি হবে, তার জন্য নাব্যতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মোস্তফা জেসান ভুট্টো বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর এ অঞ্চলে যে কর্মচাঞ্চল্য বৃদ্ধি পাবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে সরকারের ওপর মহলে দৃষ্টি রেখে বলব, প্রথম তো ফরিপুরের ভাঙ্গা থেকে মংলাবন্দর পর্যন্ত দুই লেনের রাস্তা আছে। ব্যবসায়ীরা যখন এই বন্দরে ছুটে আসবেন, তখনই সড়কে এমন যোগাযোগ ব্যবস্থা দেখে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন। দ্রুত এটাকে ছয় লেনে উন্নীত করতে হবে। কারণ পদ্মা সেতু চালুর পর সড়কে গাড়ির চাপ বাড়বে। তাই টেকসই রোড ক্যাপাসিটি করতে হবে। এখানে ইপিজেড ও অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বেশ কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। সেসব প্রতিষ্ঠানের দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য এখানে দ্রুত একটি পাঁচতারা মানের হোটেল করতে হবে। মংলাবন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়ীদের এসব দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে বলছেন, সবকিছুই যথা সময়ের মধ্যে করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।