Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পদ্মা সেতু নির্মাণের যন্ত্র দিয়ে জাদুঘর তৈরির নির্দেশ

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে ছবি তুলবেন প্রধানমন্ত্রী, সংরক্ষণ করা হবে জাদুঘরে একনেকে ১০ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকার ১০ প্রকল্প অনুমোদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ জুন, ২০২২, ১২:০০ এএম

পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত যন্ত্র-যন্ত্রাংশ দিয়ে মাদারীপুরের ভাঙ্গা অংশে একটি জাদুঘর নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের কাজে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত সবার সঙ্গে ছবি তুলবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই জাদুঘরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তোলা সবার ছবি সংরক্ষণ করা হবে।

গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন বলে বৈঠক শেষে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম এ তথ্য জানান।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে শামসুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক থেকে শুরু করে কর্মকর্তা-কর্মচারী; তাদের সঙ্গে ছবি তুলবেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়া সচিব-মন্ত্রীদের সঙ্গেও ছবি তুলবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রয়োজনে গ্রুপে-গ্রুপে ভাগ হয়ে ছবি তুলবেন। শুধু ছবি তোলা নয়, সেই সঙ্গে একটা মিউজিয়ামও হবে; সেই মিউজিয়ামে ছবিগুলো রাখা হবে। তিনি বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বড় বড় সেতুর পাশে মিউজিয়াম থাকে। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত যন্ত্র-যন্ত্রাংশও ওই মিউজিয়ামে থাকবে। মাদারীপুরের ভাঙ্গা অংশে এটি নির্মাণ করা হবে।

মূল্যস্ফীতিকে প্রাধান্য দিয়ে বাজেট করায় একনেকের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী আগামীতে হাওর অঞ্চলের সব সড়ক এলিভেটেড বা উড়াল সড়ক নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, হাওরের সড়কে ছোট কালভার্ট নির্মাণ না করে বড় ব্রিজ করারও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, হাওর এলাকায় ভবিষ্যতে যে সড়ক হবে, সেগুলো উড়াল সড়ক করা হবে। পানি প্রবাহ ঠিক রাখতে কালভার্টের পরিবর্তে ব্রিজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
একনেকে ১০ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকার ১০ প্রকল্প অনুমোদন : এদিকে একনেক সভায় ১০ হাজার ৮৫৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১০টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেয়া হয়।

সভায় অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলো হলোÑসড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ৫টি প্রকল্প যথাক্রমে ‘নলকাণ্ড সিরাজগঞ্জ-সয়দাবাদ আঞ্চলিক মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ শহর অংশ (শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হতে কাটা ওয়াপদা মোড় পর্যন্ত) ৪ লেনে উন্নীতকরণ ও অবশিষ্ট অংশ ২ লেনে উন্নীতকরণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প; ‘বগুড়া শহর থেকে মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ (এন-৫১৯) (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প; ‘কিশোরগঞ্জ সড়ক বিভাগাধীন গৌরীপুর-আনন্দগঞ্জ-মধুপুর-দেওয়ানগঞ্জ বাজার- হোসেনপুর জেলা মহাসড়ক যথাযথমানে উন্নীতকরণ’ প্রকল্প; ‘বরিশাল (দিনারের পুল)-লক্ষীপাশা-দুমকী জেলা মহাসড়কের ১৪তম কিলোমিটারে রাঙ্গামাটি নদীর ওপর গোমা সেতু নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প; ‘ মদনপুর-দিরাই-শাল্লা-জলসুখা-আজমিরীগঞ্জ জেলা মহাসড়কের (জেড-২৮০৭) দিরাই শাল্লা অংশ পুনঃনির্মাণ’ প্রকল্প; স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘দেশের গুরুত্বপূর্ণ ২৫টি (সংশোধিত ৪৬টি) উপজেলা সদর/স্থানে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপন (৩য় সংশোধিত)’ প্রকল্প; জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প ‘মর্ডানাইজেশন অব পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন-স্মার্ট গ্রিডস ফেজ ১’ প্রকল্প ও মর্ডানাইজেশন অ্যান্ড পাওয়ার এনহেনসমেন্ট অব বিআরইবি নেটওয়ার্ক (ঢাকাণ্ডময়মনসিংহ বিভাগ)’ প্রকল্প; ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (৬ষ্ট পর্যায়)’ প্রকল্প; এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ‘রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (আরএমইউ) স্থাপন’ প্রকল্প।

সভা শেষে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড শামসুল আলম সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান। একনেক সভা শেষে পদ্মা সেতুর খরচ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৪ জুলাই ২০০১ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। তখন ব্যয় ছিল ১০ হাজার কোটি টাকা। অনেকে বলছে এখন ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা হলো কেন? প্রায় ১৩ বছর পেরিয়ে গেছে প্রকল্প শুরুর পর। অর্থনীতির ভাষায় প্রতি পাঁচ বছরে মূল্যস্ফীতি ডাবল হয়। এসব কারণে এটা বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি ধরলে ব্যয় ঠিক হয়েছে। ১৩ বছর বড় সময়। এ কারণে ব্যয় বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি ধরলে মূল খরচই হয়েছে। একনেক সভা শেষে ড. শামসুল আলম আরও বলেন, স্বচ্ছতার সঙ্গে পদ্মাসেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। কেউ কেউ দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল। তবে দুর্নীতি কানাডার কোর্টে প্রমাণ হয়নি। অনেকে সেতু নির্মাণে বাধা দিয়েছে। নানা কারণে পদ্মাসেতু বাস্তবায়ন করেছি। প্রতিকূল অবস্থায় সেতু বাস্তবায়ন হয়েছে। এটা প্রধানমন্ত্রীর আবেগ ও উচ্ছ্বাসের ব্যাপার।

একনেক সভায় কৃষি মন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা সভার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পদ্মা সেতু

১১ জানুয়ারি, ২০২৩
৩১ অক্টোবর, ২০২২
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২
২৬ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ