হজ পালন করা একটি বৈশ্বিক ইবাদত। হজ হচ্ছে এমন একটি ইবাদত যা আদায় করতে দৈহিক ও আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান হতে হয়। আল্লাহ তায়লা ইরশাদ করেন, ‘মক্কাতেই মানবজাতির জন্য সর্ব প্রথম ঘর তৈরি হয়েছিল। ওই ঘর বিশ্ববাসীদের জন্য হেদায়াত ও বরকতের উৎস।’ (সূরা আলে ইমরান : ৯৬)।

গতকাল রাজধানীর মসজিদগুলোতে জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমামরা এসব কথা বলেন। আর মসজিদগুলোতে প্রচুর সংখ্যায় মুসল্লির সমাগম ঘটে। গুলিস্থান ফুলবাড়িয়া রেলওয়ে জামে মসজিদের খতিব আল্লামা মুহিউদ্দীন রাব্বানী বলেন, হজ হচ্ছে এমন একটি ইবাদত যা আদায় করতে দৈহিক ও আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান হতে হয়। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘মানুষের উপর আল্লাহর বিধান ওই ঘরের হজ করা, যার আছে সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য। আর কেউ কুফর করলে আল্লাহ তো বিশ্বজগতের মুখাপেক্ষী নন।’ (সূরা আলে ইমরান : ৯৭)

হাদিসের মধ্যে রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘পাঁচটি ভিত্তির উপর দ্বীনে ইসলাম স্থাপিত। প্রথমত এই সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন সত্য উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল। দ্বিতীয়ত নামাজ প্রতিষ্ঠা করা। তৃতীয়ত যাকাত আদায় করা। চতুর্থত বায়তুল্লাহর (কা’বা গৃহের) হজ করা এবং পঞ্চমত রমযানের রোযা পালন করা’। (বুখারী ৮, মুসলিম ১২২)।

মিরপুরের ঐতিহ্যবাহী বাইতুল মামুর জামে মসজিদের খতিব মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী বয়ানে বলেন, ইসলামে পোশাকের গুরুত্ব অপরিসীম। এর দ্বারা লজ্জা নিবারণ ছাড়াও মানুষের ব্যক্তিত্ব প্রকাশে প্রকৃতি অনুভব করা যায়। ব্যক্তি তার নিজের সম্মান সম্ভ্রম খুঁজে পায়। পরিবার, সমাজ অশ্লীলতা দূষণ মুক্ত থাকে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, হে আদম সন্তান! আমি তোমাদের জন্য লজ্জা নিবারণ ও সৌন্দর্যতা সংরক্ষণের লক্ষ্যে পোশাকের ব্যবস্থা করেছি। আর মার্জিত তাকওয়ার পোশাকই তোমাদের জন্য উত্তম, কল্যাণকর। এটা মহান আল্লাহর নিদর্শন । সূরা আরাফ (আয়াত : ২৬)।

তিনি বলেন, নগ্ন, অর্ধনগ্ন, অশ্লীল ও বেহায়াপনা সৃষ্টিকারী পোশাক পরিধান করা সম্পূর্ণ হারাম, কঠিন গুনাহ । এ ধরনের পোশাক পরিধানকারীর পরিণাম সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, দুই দল জাহান্নামীদের আমি এখনো দেখেনি, একদল যারা গরুর লেজের মত ছড়ি বা লাঠি দিয়ে মানুষকে প্রহার করে, আর এক দল ওইসব মহিলা যারা পোশাক পরিহিত অর্ধ নগ্ন উলঙ্গের ন্যায়, পুরুষ আকর্ষণকারী ও আকর্ষণ কৃতা। রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তারা কিছুতেই জান্নাতে প্রবেশ করবে না এবং জান্নাতের সুঘ্রানও পাবেনা। (মুসলিম শরীফ)

দিনাজপুর গোর এ শহীদ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা রেজাউল করিম বয়ানে বলেন, উম্মতের একটি বড় দায়িত্ব ও সম্মান হলো শুধু নামে মুমিন হলে চলবে না, সত্যিকারে মুমিন হতে হবে। তাহলে দুনিয়া ও আখেরাতে কামিয়াবী নসিব হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, আমাকে পাওয়ার জন্য যে কষ্ট মোজাহাদা স্বীকার করবে, ত্যাগ স্বীকার করবে, অবশ্যই আমাকে পাওয়ার পথ আমি তাকে দেখাবো। সে আমাকে পাবে। অতএব আল্লাহকে পাওয়ার জন্য দুনিয়া ও আখেরাতের কামিয়াবী নসিব করার জন্য কষ্ট মোজাহাদা করতে প্রস্তুত হতে হবে।

রাজধানীর মিরপুর বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী বয়ানে বলেন, অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা ভীষণ পাপের কাজ। আর মুসলিম সমাজে এর প্রচার প্রসার আরও গর্হিত অপরাধ। ‘অশ্লীলতা’ শব্দের আরবি প্রতিশব্দ হিসেবে পবিত্র কোরআনে ‘ফাহশা’ ও ‘ফাহেশা’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। অশ্লীলতা নিয়ে পবিত্র কোরআনে ২৪টি আয়াত রয়েছে। অশ্লীলতাকে আল্লাহ তায়ালা পরিস্কার ভাষায় হারাম করেছেন। ইসলামে সব ধরনের অশ্লীলতা স্পষ্ট ভাষায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে।