পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মসজিদে গাউছুল আজমের খতীব মাওলানা কবি রূহুল আমীন খান গতকাল জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ানে বলেন, পাঠ্যপুস্তকে ডারউইনের থিওরি পড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে যা সম্পূর্ণ কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী। এটি নাস্তিক্যবাদি কুফরি মতবাদ। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক বহু স্থানে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন দুনিয়ার প্রথম মানুষ হলেন হযরত আদম (আ.)। যাকে তিনি নিজ হাতে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তাঁর থেকে তাঁর সহধর্মিনী মা হাওয়া (আ.) কে সৃষ্টি করেছেন। তাঁদের থেকে ক্রমান্বয়ে সৃষ্টি হয়েছে গোটা মানব জাতি। অপরদিকে বিজ্ঞানের নামে যে মতবাদ পাঠ্যতালিকাভুক্ত করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ কোরআনবিরোধী, ইসলামবিরোধী এক নাস্তিক্যবাদ মতবাদ। এর পেছনে রয়েছে মুসলমানের সন্তানদের ইসলামবিরোধী নাস্তিকরূপে গড়ে তোলার গভীর ষড়যন্ত্র। তাই দেশের আলেম-উলামা, পীর-মাশায়েখ, ধর্মপ্রাণ মানুষেরা, বিভিন্ন ইসলামি সংগঠন জোর দাবি তুলেছেন এ মতবাদের পাঠ্যপুস্তকসমূহ প্রত্যাহার করে নেয়ার।
খতীব সাহেব তাঁর বয়ানে পবিত্র কোরআনে প্রথম মানব হযরত আদম (আ.)-এর সৃষ্টি সম্পর্কিত আয়াতসমূহ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শুধু কোরআন নয় সমস্ত আসমানী কিতাবে প্রথম মানব সৃষ্টির বিবরণ একই। তিনি বলেন পবিত্র কোরআনের ২৫টি স্থানে ‘আদম’ শব্দটি ব্যবহার হয়েছে। এসকল আয়াতে আদম (আ.)-এর সৃষ্টির বিবরণ, সৃষ্টির উপাদান, সৃষ্টির উদ্দেশ্য, ফেরেশতাদের আদম সৃষ্টির ঘোষণা দান, আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতাগণের আদমকে সিজদা করা, সিজদা দানে ইবলিসের অস্বীকৃতি, পরিণামে বিতাড়িত শয়তানে পরিণত হওয়া, আদম-হাওয়ার জান্নাতে অবস্থান, শয়তানের প্ররোচনায় আদম-হাওয়ার নিষিদ্ধ ফল ভক্ষণ, তাঁদের বেহেশত হতে বিতারণ, তাঁদের তাওবা কবুল হওয়া ইত্যাদির বর্ণনা রয়েছে। বাইবেলেও রয়েছে “আর সদা প্রভু ইশ্বর মৃত্তিকার ধূলিতে আদম’কে নির্মাণ করিলেন এবং তাহার নাসিকায় ফুঁ দিয়া প্রাণবায়ু প্রবেশ করাইলেন”। (আদি পুস্তক ২:৫-৭)
খতীব বলেন, পবিত্র কোরআনের সূরা হিজরের ২৬ আয়াতে আছে “আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি ছাঁচেঢালা শুষ্ক ঠনঠনে মাটি হতে। “আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন পোড়া মাটির মতো শুষ্ক মাটি হতে” (সূরা আর-রহমান, আয়াত:১৪)। “যখন আমি ফেরেশতাগণকে বললাম আদমকে সিজদা কর তখন ইবলিস ব্যতীত সকলেই সিজদা করলো” (২:৩৪)। “তিনি (আল্লাহ) বললেন, হে ইবলিস! আমি যাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করলাম তাঁর প্রতি সিজদানত হতে তোমাকে কিসে বাধা দিলো? তুমি কি ঔদ্ধত্য প্রকাশ করলে, না উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন”। সে বলল আমি তাঁর থেকে শ্রেষ্ঠ। আপনি আমাকে আগুন হতে সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁকে সৃষ্টি করেছেন কর্দম হতে ।(৩৮:৭৫-৭৬)।
খতীব বলেন, ডারউইনের বিবর্তনবাদ সকল ধর্মমতের বিরোধী। এজন্য অনেক দেশে এই মতবাদ পাঠ্যতালিকায় নিষিদ্ধ। ২০০৬ সালের মে মাসে নিউইয়র্ক টাইমস্ এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫১৪ জন বিজ্ঞানী সম্মিলিতভাবে ডারউইন থিওরির বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেছেন। যাইহোক, ডারউইনের থিওরি হলো ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে এক প্রাণী থেকে অপর প্রাণী সৃষ্টি হয়েছে। হয়েছে ওরাংওটান, শিম্পাঞ্জি, বানর, বনমানুষ, মানুষ। তার এই উদ্ভট মতবাদ ইসলামসহ সকল ধর্ম মতের বিরোধী। ইসলামি মত তথা কুরআন-সুন্নাহর সম্পূর্ণ বিরোধী। আমাদের সন্তানদের ইসলামবিরোধী, কোরআনবিরোধী, ধর্মবিরোধী নাস্তিক্য বানানোর সুদূরপ্রসারি মারাত্মক ষড়যন্ত্র। আমরা প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সরকারের কাছে জোরদাবি জানাই ডারউইনের ‘বিবর্তনবাদ’ নিষিদ্ধ ঘোষণা করুন। আল্লাহ সকলকে সহিহ্ বুঝ দান করুন। আমীন।
ঢাকার বাসাবো আমান মসজিদের খতীব মুফতি আলমগীর হোসাইন আনসারী গতকাল জুমার বয়ানে বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশে কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী শিক্ষা সিলেবাস চালু করে কোমলমতি শিশুদের নাস্তিক বানানোর ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না। শিশুদের যৌন শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করা এবং ডারউইনের বিতর্কিত মতবাদ পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করে নাস্তিক বানানোর চক্রান্ত থেকে সরকারকে ফিরে আসতে হবে। খতীব শিক্ষার সকলস্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক এবং কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী শিক্ষা কারিকুলাম বাতিলের জোর দাবি জানান। মহান আল্লাহ সবাইকে দ্বীনের সহিহ বুঝ দান করুন। আমিন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।