Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঈমান আক্বিদা সংরক্ষণে মাদরাসা শিক্ষার বিকল্প নেই

খুৎবা-পূর্ব বয়ান

শামসুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ২৯ মে, ২০২২, ১২:০৩ এএম

দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও মানুষের ঈমান আক্বিদা সংরক্ষণে মাদরাসা শিক্ষার বিকল্প নেই। মাদরাসা শিক্ষার মধ্যেই মূলত মানুষের কল্যাণে প্রয়োজনীয় সার্বিক বিষয়ে শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। আলেমগণ মাদরাসা মসজিদে আদর্শ জাতি গঠন শৃঙ্খলাময়ী সমাজ বিনির্মাণ পরস্পরের প্রতি সৌহার্দ্য ভালোবাসা সহযোগিতা ও সহমর্মিতার শিক্ষা দেয়। গতকাল জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম এসব কথা বলেন। রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজে প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে।

ঢাকার মিরপুরের ঐতিহ্যবাহী বাইতুল মামুর জামে মসজিদের খতিব মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী গতকাল জুমার বয়ানে বলেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও মানুষের ঈমান আক্বিদা সংরক্ষণে মাদরাসা শিক্ষার বিকল্প নেই। মাদরাসা শিক্ষার মধ্যেই মূলত মানুষের কল্যাণে প্রয়োজনীয় সার্বিক বিষয়ে শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। কারণ এতে ছাত্রদের ঈমান আক্বিদা, আদব আখলাক, আদর্শ বিশ্বাস, দেশপ্রেম, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রয়োজনীয়তা, সঠিক পদ্ধতিতে ব্যবসা-বাণিজ্য, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায়ের গুরুত্ব সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা ও জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের কল্যাণ কামনার শিক্ষা দেয়া হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কল্যাণ কামনাই দ্বীন। (বুখারী শরীফ)। অন্যত্র নবীজি সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে মানুষের উপকার করে সেই উত্তম মানুষ। (আল হাদিস)।

খতিব বলেন, আলেমগণ মাদরাসা মসজিদে আদর্শ জাতি গঠন, শৃঙ্খলাময়ী সমাজ বিনির্মাণ, পরস্পরের প্রতি সৌহার্দ্য, ভালোবাসা, সহযোগিতা ও সহমর্মিতার শিক্ষা দেয়। যার প্রেক্ষিতে সমাজে কোনো সমস্যা অনুভূত হলে, মানুষ কোনো বিপদে পড়লে আলেমগণ অগ্রণি ভূমিকা পালন করেন। যার বাস্তব প্রমাণ আইলা, সিডর ও বর্তমান সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যাপ্লাবিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো। বৈশ্বিক করোনা মহামারিতে গ্র্যাজুয়েট অনেক সন্তানরা তার আক্রান্ত মা বাবার কাছেও যায়নি। কেউবা মৃত মাতা পিতাকে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে গেছে। কিন্তু জীবনের মায়া ত্যাগ করে কওমি মাদরাসায় শিক্ষিত আলেমগণই তাদের সেবা-শুশ্রƒষা নিজেরা না খেয়ে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে মাদরাসা পড়ুয়া ছাত্র শিক্ষকরাই তো তাদের জানাযা কাফন-দাফনের ব্যবস্থা করেছে। আর এখন কতিপয় ব্যক্তি যাদের মাদরাসা শিক্ষা ও মানুষের উপকারে আলেমদের অগ্রণি ভূমিকার কোনো ধারণা নেই তারাই আবার না জেনে শুনে আলেম-ওলামা ও হাজার মাদরাসার বিপক্ষে তথাকথিত শ্বেতপত্র প্রকাশ করে চরম মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। আল্লাহ তাদের হেদায়েত নসীব করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, না জেনে শুনে কথা বলাই মিথ্যাবাদী হওয়ার নিদর্শন। (আল হাদিস)। খতিব সবাইকে মিথ্যাচার পরিহার করত: দেশে বন্যাকবলিত মানুষের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানান। আল্লাহ সবাইকে কবুল করেন। আমীন।

গুলিস্তানস্থ ফুলবাড়িয়া রেলওয়ে জামে মসজিদের খতিব আল্লামা মুহিউদ্দীন রাব্বানী জুমার খুতবায় বলেন, সত্যের কণ্ঠ রুদ্ধ করার জন্য যুগে যুগে মিথ্যা প্রতারণা ও জুলুমের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। সত্যপন্থীদের বিরুদ্ধে হাজারো ষড়যন্ত্র হয়েছিল। মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয়েছিল। মক্কার কাফিররাও মহানবী (সা.)-এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল। তারা তাঁকে হত্যা করতে উদ্ধত হয়েছিল। একপর্যায়ে তাঁকে দেশান্তরিত করেছে। মহানবী (সা.)-এর সেই দুঃসহ জীবনের স্মৃতিচারণা করে কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘স্মরণ করো, কাফিররা তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তোমাকে বন্দি করার জন্য, হত্যা করার জন্য কিংবা নির্বাসিত করার জন্য। তারা ষড়যন্ত্র করে, আল্লাহও কৌশল অবলম্বন করেন। আল্লাহ তো সর্বশ্রেষ্ঠ কৌশলী।’ (সূরা : আনফাল, আয়াত : ৩০)।

ইসলামবিদ্বেষীরা সর্ব যুগে চতুর্মুখী ষড়যন্ত্রের জাল বিছিয়ে হেদায়েতের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। নমরুদ হযরত ইবরাহিম (আ.)-এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল, ফেরাউন মুসা (আ.)-এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল এবং ইহুদিরা ঈসা (আ.)-এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল। আদ জাতি, সামুদ জাতি ও লুত (আ.)-এর জাতিও বহু ধরনের চক্রান্ত করেছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা খড়কুটার মতো ভেসে গেছে। চূড়ান্ত বিচারে নবী-রাসূলরাই বিজয়ী হয়েছেন। শয়তানি চক্রান্তের মাধ্যমে কাফিররা সাময়িক বিজয় দেখলেও পরিশেষে পরাজিত হয়। নিজেদের চক্রান্তের জালে নিজেরাই আটকা পড়ে। দুর্বলতম সৃষ্টি হয়েও মানুষ স্রষ্টার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে। আল্লাহ খুব সহজেই তাদের চক্রান্ত নস্যাৎ করে দেন। মানুষের যাবতীয় কৃতকর্ম সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবগত।

খতিব বলেন, আজ স্বার্থান্বেষী ক্ষুদ্র মহল সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। স্থিতিশীল পরিবেশকে অস্থিতিশীল করতে কথিত গণকমিশন অসত্য, মিথ্যা বানোয়াট শ্বেতপত্র প্রকাশ করে আলেম সমাজকে জাতীর সামনে হেয় প্রতিপন্ন করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। যারা নবীর ওয়ারিসদের সম্মানহানি করার চক্রান্ত করছে আল্লাহ তাদের চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ। ইহজগতে আল্লাহর রীতি হলো প্রথম দিকে আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াত দিতে গিয়ে সত্যপন্থীরা বহু কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করেছেন। বিনিময়ে মহান আল্লাহ নবী রাসূলদের শান্তি, সমৃদ্ধি ও বিজয় দান করেছেন। নবী রাসূলদের অনুসারীদেরও আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ দান করেছেন। আল্লাহ অবিশ্বাসীদের সঠিক পথে ফিরে আসার জন্য সুযোগ দেন। অনেকে এ সুযোগের অপব্যবহার করে। তারা মনে করে, আল্লাহ আমাদের কাজকর্মে সন্তুষ্ট। তাই আমাদের ওপর আজাব আসে না। আসলে তারা নিজেদের ধ্বংসের পথপরিক্রমা সম্পর্কে অবগত নয়। আল্লাহ সকলকে হেদায়াত দান করুন, আমীন।

ঢাকার শেওড়াপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মুফতি সিফাতুল্লাহ রহমানি গতকাল জুমার বয়ানে বলেন, শাওয়াল মাস সম্পর্কে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখবে আল্লাহ তায়ালা তাকে সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব দান করবেন। ঈদুল ফিতরের পর অবিলম্বে এ রোজা রাখা উত্তম। কিন্তু যদি সাথে সাথে রাখতে না পারে তাহলে সারা মাসের মধ্যে তা পুরো করবে। খতিব বলেন, আজ শাওয়াল মাসের ২৬ তারিখ। আগামী মঙ্গলবার ২৯ শাওয়াল এর মধ্যে ছয় রোজা শেষ করতে হবে। এ শাওয়াল মাসেই রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে হযরত আয়েশা রাযি. এর বিয়ে হয়েছিল। এ মাসেই তাঁকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঘরে দেয়া হয়েছিল। এ কারণে এ মাসে বরকতের অনেক উপকরণেরই সম্মিলন ঘটেছে। এর পরবর্তী যিলকদ মাসও হজের মাসের অন্তর্ভুক্ত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনা তাইয়েবায় অবস্থানের পুরো সময়ে হজ ছাড়া চারটি ওমরা করেছেন। এ চার ওমরাই তিনি যিলকদ মাসে আদায় করেছেন। এ কারণেও এ মাস মর্যাদামণ্ডিত। আল্লাহ সবাইকে কবুল করুন। আমীন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খুৎবা-পূর্ব বয়ান

২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->