চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
কথায় আছে পানির অপর নাম জীবন। পানি আল্লাহর নিয়ামত। পিপাসার্ত কোনো পথিক যখন ক্লান্তদেহে কোথাও বসে পড়ে, সেই মহূর্তে টিউবওয়েলের একগ্লাস ঠান্ডা পানি পুরো শরীর শীতল করে দেয়। একজন রোজাদার যখন সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থেকে ইফতারের সময় পানি পান করে- মুহুর্তেই উপবাসের কষ্ট দূর হয়ে যায়। অন্তরে অনুভূত হয় এক অপার্থিব প্রশান্তি। হাদীস শরীফে বর্ণিত একটি দোয়া, যা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইফতারের সময় পানি পান করার পরে পড়তেন- (হাদীসটির অর্থ) ‘পিপাসা নিবারিত হল, শিরা-উপশিরা সতেজ হল আর রোজার সাওয়াব প্রাপ্তির খাতায় লিপিবদ্ধ হয়ে গেলে। সুনানে আবু দাউদ, হাদীস: ২৩৫৭।
মানুষের দেহ সতেজ রাখতে হলে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করতে হয়। সারাদিন ছুটে চলেছি নিজ নিজ কর্মে, এ কর্মব্যস্ততার মাঝে একটু সময় বের করে স্থির থাকা, অনেক সময় দুষ্কর হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় অধিকাংশ মানুষ পানি পান করে দাঁড়িয়ে। দাঁড়িয়ে পানি পনা করা উচিন নয়।
হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত: রসিূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাঁড়িয়ে পানি পান করা থেকে নিষেধ করেছেন। সহীহ্ মুসলিম, হাদীস ৩৭৭২। সুনানে তিরমিযী, ১৮০০। এই হাদীস থেকে উলামায়ে কেরাম বলেন, পানি দাঁড়িয়ে পান করা অনুত্তম ও আদব পরিপন্থি।
বিশেষজ্ঞগণ দাঁড়িয়ে পানি পান করার অভ্যাস পরিহার করতে বলেন। কারণ এর থেকে শরীরে বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার আশংকা থাকে। এর থেকে সবার যথেষ্ট সতর্ক থাকা জরুরী। এবার আমরা জানতে পারি দাঁড়িয়ে পানি পান করার মন্দ দিকগুলো। দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-- আমাদের দেশের প্রচীন চিকিৎসাশাস্ত্র আয়ুর্বেদ মতে, কোনো মানুষের দাঁড়িয়ে পানি পান করা উচিত নয়। এক্ষেত্রে শরীরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে খারাপ প্রভাব পড়ে। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। এক্ষেত্রে আয়ুর্বেদ বলছে, দাঁড়িয়ে পানি পান করলে পেটের ওপর বিশাল চাপ পড়ে। দাঁড়িয়ে পানি পান করলে পাকস্থলীতে দ্রুত পৌঁছে পানি এবং এই কারণে খাদ্যনালীতেও সমস্যা দেখা দেয়। ফলে পাকস্থলী, হজমের অন্যান্য অংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
কী কী সমস্যা দেখা দিতে পারে। ১. বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, দাঁড়িয়ে পানি পান করলে হাড়ে এসে চাপ পড়ে। এর কুফল ভোগ করতে করতে হয়। ২. কিডনিতে চাপ পড়ে- দেখা গেছে, দাঁড়িয়ে পানি পান করলে শরীরে অনেক সমস্যা দেখা যায়। এক্ষেত্রে কিডনিতেও পড়ে চাপ। কিডনিকে বেশি কাজ করতে হয়। এবিষয়ে সবার সতর্ক থাকা আবশ্যক। ৩. পেটের সমস্যা- বিশেষ করে যাদের গ্যাসের সমস্যা রয়েছে তারা কোনো অবস্থাতেই দাঁড়িয়ে পানি পান করবে না। দাঁড়িয়ে পানি পান হজমেও জটিলতা দেখা দেয়। ৪. ফুসফুসের সমস্যা- দেখা গেছে, দাঁড়িয়ে পানি পান করার সময় শ^াসনালীর মাধ্যমে অক্সিজেন গ্রহণের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এর প্রভাব পড়ে ফুসফুসে। তাই ফুসফুসের সমস্যা থেকে বেঁচে থাকরা জন্য বসে পানি পান করতে হবে।
রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাতের অনুসরণ। অনেক রোগ থেকে বেঁচে থাকার মাধ্যম। এই কথা আজ চিকিৎসাশস্ত্রের বিশেষজ্ঞগণও অকপটে স্বীকার করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।