পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আম-লিচুতে ভরপুর উত্তরের জেলা দিনাজপুর। মধু মাসের রসালো ফল পরিবহনে বাঁশের ঝুড়ির বিকল্প নেই। উত্তরের জেলা দিনাজপুরের ফুলবাড়ীসহ অন্যান্য উপজেলায় বর্তমানে বাঁশের ঝুড়ি (টুকরি) তৈরির তোড়জোড় পড়েছে।
প্রতি বছর মধু মাসের ন্যায় এবারও বাঁশের তৈরি ঝুড়ি (টুকরি) তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাহালি সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষরা। দীর্ঘ দিন থেকেই এই পেশায় জড়িতরা নিজেদের বাঁশ শিল্পের কারিগর বলছেন। তারা বছরের অন্য সময় বাঁশ দিয়ে চটা চাটাই, কুলা, ডালা, চাঙারি, টুকরি, ওড়া, চালুনি, মাছ রাখার খলইসহ নানা জিনিস তৈরি করেন।
মাহালি সপ্রদায়ের এই নারী-পুরুষরা জানান, তারা বিশেষ করে মধু মাসের ফলের জন্য শুধুই বাঁশের তৈরি ঝুড়ি (টুকরি) তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করেন। তবে বাজারে প্লাস্টিকের ক্যারেট আসার পর আম পরিবহনের জন্য বাঁশের ঝুড়ির চাহিদা কিছুটা কমলেও লিচুর জন্য এই ঝুড়ির বেশ কদর রয়েছে। বাঁশের মূল্য বৃদ্ধি আর প্লাস্টিকের সহজ লভ্যতা মাহালি সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী এই পেশাকে অনেকটা ঝুঁকিতে ফেলেছে এমনটিই বলছেন তারা।
ফুলবাড়ী উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে ফুলবাড়ী-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে জয়নগর মাহালিপাড়া গ্রাম। এখানে এই সম্প্রদায়ের ৩৬টি পরিবারের বসবাস। কমবেশী সবাই পূর্ব-পুরুষদের ঐতিহ্যবাহী পেশা ধরে রেখেছেন। এর মধ্যে কেউ কেউ লেখাপড়া করে এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন।
মাহালিপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, স্টেফান সরেন ও তার স্ত্রী মিনা মার্ডিসহ পাড়ার সকলেই বাড়ির উঠনে বসে মধু মাসের আম-লিচু পরিবহনের জন্য টুকরি তৈরিতে ব্যস্ত। আবার এখানেই আসছেন বিভিন্ন ফল ব্যবসায়ীরা তাদের চাহিদা মত ঝুড়ি কিনতে।
স্টেফান সরেন বলেন, প্লাস্টিকের ক্যারেট বাজারে আসায় এবার আমের জন্য ঝুড়ি বা টুকরির চাহিদা কম থাকলেও লিচুর ঝুড়ির চাহিদা আছে। লিচুর ঝুড়ির জন্য কিছু পাইকার আসেন। তাই বর্তমানে লিচুর ঝুড়িই তৈরি হচ্ছে বেশি। বাঁশ কিনে দিন শেষে স্বামী-স্ত্রী মিলে ৪/৫টি ঝুড়ি তৈরী করতে পারেন।
এদিকে সুধীর মার্ডি ও তার স্ত্রী সোনা মনি হেমব্রম বলেন, এক সময় প্রতিযোগীতা করে ঝুড়ি তৈরি করলেও এখন সেই ব্যস্ততা নেই। কারণ আমের জন্য প্লাস্টিকের ক্যারেট ব্যবহারের কারণে এখন শুধু লিচুর ঝুড়িই চায় ক্রেতারা। তবে লাভ-ক্ষতি যাই হোক পূর্ব পুরুষদের পেশা তাই ছাড়তে চাননা তারা।
ফুলবাড়ী পৌর বাজারের ফল ব্যবসায়ী গোপাল মহন্ত বলেন, বাঁশের তৈরি ঝুড়ির চাইতে প্লাস্টিকের ক্যারেটে আম ও পণ্য পরিবহনে অনেক সুবিধা রয়েছে। প্লাস্টিক ক্যারেটে আম পরিবহনে আম নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা অনেক কম। অন্যদিকে বাঁশের তৈরি ঝুড়িতে ঝুঁকি বেশি। তাছাড়া প্লাস্টিকের ক্যারেট মজবুত এবং অনেকবার ব্যবহার করা যায়। আর বাঁশের তৈরি ঝুড়ি একবারের বেশি ব্যবহার করা যায় না।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় পরিবেশবান্ধব বাঁশের ঝুড়ি যেন হারিয়ে না যায় এবং প্লাস্টিকের ক্যারেটের পরিবর্তে বাঁশের ঝুড়ি ব্যবহারে উদ্ভুদ্ধকরণে এগিয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন ঝুড়ি তৈরির সাথে সংশ্লিষ্টরা।
দৌলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, মাহালি সম্প্রদায়ের লোকজন পারিবারিক ঐতিহ্য ও পেশা হিসেবে বাঁশ ও বেতের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। বাঁশ ও বেতের তৈরি এসব পণ্য পরিবেশবান্ধব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।