Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গ্রে-র রিপোর্টে দোষী, ক্ষমা চাইলেন বরিস

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০২২, ৩:২৪ পিএম

তদন্ত শুরুর প্রায় ছ’মাস পরে অবশেষে প্রকাশিত হল সু গ্রে রিপোর্ট। তাতে ২০২০ সালে মহামারির মধ্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে হওয়া একাধিক পার্টির ছবি ও বিশদ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। যার বেশির ভাগই আইন ভেঙে আয়োজন করা হয়েছিল।

রিপোর্টে পরিষ্কার বলা হয়েছে, ‘মহামারি কালে যখন সাধারণ মানুষের জীবনে একের পর এক দুরূহ নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছিল, সে সময়ে সরকারের এই ধরনের আচরণ কোনও যুক্তিতেই সঠিক প্রমাণ করা অসম্ভব।’ রিপোর্ট প্রকাশের পরে সর্বসমক্ষে ক্ষমা চেয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

গ্রে-র রিপোর্ট প্রকাশের পরেই হাউস অব কমন্সে দাঁড়িয়ে বরিস জানিয়েছেন, গোটা বিষয়ের যাবতীয় দায়ভার তিনি নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘এই ঘটনা থেকে আমি শিক্ষা পেয়েছি। সর্বোপরি আমি আরও জানাচ্ছি, আমার উপস্থিতিতে যা যা ঘটেছে সব কিছুর সম্পূর্ণ দায়ভার আমি নিচ্ছি।’

২০২০ সালে গোটা ব্রিটেনে কড়া কোভিড বিধি জারি থাকাকালীন নিয়ম ভেঙে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সরকারি বাসভবনে একাধিক পার্টি ও জমায়েত হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। সেই পার্টিগুলি সম্পর্কে তিনি আদৌ অবগত ছিলেন না এবং তার একটিতেও তিনি উপস্থিত ছিলেন না বলে প্রথমে পার্লামেন্টকে জানিয়েছিলেন বরিস।

পরে একাধিক প্রথম সারির ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায় বহু পার্টিতেই উপস্থিত ছিলেন বরিস। মিথ্যে বলে পার্লামেন্টকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ ওঠে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। যা নিয়ে তদন্ত শুরু করে মোট্রোপলিটন পুলিশ। বরিস ও তার স্ত্রী-সহ পার্টিতে উপস্থিত একাধিক সরকারি কর্তার জরিমানাও ধার্য করেছে পুলিশ।

এমন ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে, যা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সরকারি ফটোগ্রাফারের তোলা। ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে সে দিন (২৩ নভেম্বর, ২০২০) বরিসের এক সহকারীর বিদায় সংবর্ধনার অনুষ্ঠান হয়েছিল বলে অভিযোগ। দু’জনের বেশি মানুষের জমায়েত তখন নিষিদ্ধ ছিল ব্রিটেনে। বরিস নিজে জানিয়েছিলেন ওই তারিখে কোনও পার্টিই হয়নি তার বাসভবনে। অথচ সেই ছবিতে দেখা গিয়েছে বরিসের পাশে রাখা টেবিলে ওয়াইন ও জিনের বোতল, অজস্র খালি গ্লাস।

বিষয়টি নিয়ে মাঠে নেমে পড়েন বিরোধীরা। পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে কোনও এমপি মিথ্যে বলেছেন প্রমাণিত হলে তাকে পদত্যাগ করতে হয় ব্রিটেনে। এই পরিস্থিতিতে সকলেই মুখিয়ে ছিল ‘সু গ্রে রিপোর্ট’-এর দিকে। সু গ্রে-র রিপোর্টে লেখা হয়েছে, ‘কিছু জমায়েতে সরকারি ব্যর্থতা একেবারে স্পষ্ট। এই কাজের দায়ভার ডাউনিং স্ট্রিটকেই নিতে হবে। যারা সরকারের মাথায় বসে রয়েছেন, তাদের থেকে এই আচরণ প্রত্যাশিত নয়।’

গ্রে আরও লিখেছেন, কর্মস্থলে ‘অত্যধিক মদ্যপান’ কোনও সময়েই যথাযথ নয়। এই নিয়ে সরকারের নির্দিষ্ট নীতি নেয়া উচিত। রিপোর্টে সু লিখেছেন, ‘এই সব পার্টিতে দফতরের কনিষ্ঠরাও পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন, যেখানে উচ্চপদস্থরাও ছিলেন। এবং বড়রাই মূলত আয়োজন করেছিলেন। যদি কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়, সে ক্ষেত্রে এই বিষয়টিও মাথায় রাখা উচিত।’

বরিস বলেন, ‘আমাদের যা যা দোষ, সেই প্রসঙ্গে বলি, আমি বিশ্বাস করি আমাদের আমলারা পরিশ্রমী, ভাল মানুষ, তারা দেশের জন্য ভাল কাজ করছেন। তাদের নৈতিক ভাবে উৎসাহী করতেই আয়োজন করা হয়েছিল।’ প্রধানমন্ত্রী এ-ও জানান, কর্মীদের উৎসাহ দিতে তিনি খুব অল্প সময়ের জন্য ওই সব পার্টিতে অংশ নিয়েছিলেন। তার পরে কী হয়েছে তার জানা নেই।

বিরোধীরা অবশ্য এ সব শুনতে রাজি নন। তারা ফের বরিস জনসনের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন। লেবার পার্টির নেতা কের স্টারমারের বক্তব্য, গ্রে-র রিপোর্টে যা লেখা হয়েছে, তাতে কোনও মতেই প্রধানমন্ত্রীর বয়ানকে আড়াল করতে পারে না সরকার। সূত্র: ডেইলি মেইল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাজ্য


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ