Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী কি সঙ্কট মেটাতে পারবেন?

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ মে, ২০২২, ১:০০ পিএম

শ্রীলঙ্কার ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলায় সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে চলমান বিক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টায় দেশটির প্রেসিডেন্ট গোটাভায়া রাজাপক্ষ নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেছেন বিরোধী রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড ন্যাশানাল পার্টির নেতা রানিল বিক্রমেসিংহেকে।

প্রবীণ বিরোধী দলীয় এমপি রানিল বিক্রমেসিংহে শপথ গ্রহণ করেছেন এবং একটি সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রস্তাবে তিনি নেতৃত্ব দেবেন। এর আগে প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষ তার পদত্যাগের দাবি প্রত্যাখ্যান করেন এবং জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে তিনি আইন শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দেন।

সোমবার তার ভাই মাহিন্দা রাজাপক্ষ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর থেকে সংঘাতে নয় ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছে এবং আহত হয়েছে দুইশ মানুষ। জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট গোটাভায়া রাজাপক্ষ বলেন সংসদে এবং নতুন মন্ত্রিসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন পাবেন এমন যোগ্য ব্যক্তিকে তিনি নতুন প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ করবেন।

বিক্রমেসিংহে কয়েক দশক ধরে শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে জড়িত আছেন। এটা প্রধানমন্ত্রী পদে তার ষষ্ঠবার নিয়োগ। তবে কোনবারই তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মেয়াদ সম্পূর্ণ করতে পারেননি। তাকে রাজাপক্ষদের ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রধানমন্ত্রী পদে তাকে নিয়োগ করা হয়েছে কারণ রাজাপক্ষ পরিবারের সদস্যদের তিনি নিরাপত্তা দেবেন সে সম্ভাবনা বেশি এবং রাজাপক্ষ অনুরোধ করলে তাদের নিরাপদে দেশত্যাগের ব্যবস্থাও তিনি করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে বিরোধীদের মধ্যে বিক্রমেসিংহের ব্যাপক সমর্থন নেই এবং জনসাধারণও তাকে খুব একটা সমর্থন করে না। রানিল বিক্রমেসিংহেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করার খবরকে বেশিরভাগই অবিশ্বাস্য এবং হতাশাজনক বলে মনে করছেন। তিনি একসময় রাজনীতিতে চতুর খেলোয়াড় ছিলেন। কিন্তু গত কয়েক বছরে তার প্রতি জনসমর্থন দ্রুত কমেছে।

একসময় ক্ষমতাসীন তার ইউনাইটেড ন্যাশানাল পার্টি গত নির্বাচনে মাত্র একটি সংসদীয় আসন পেতে সক্ষম হয়েছে। ফলে সংসদে তিনিই একমাত্র তার দলের প্রতিনিধি। তার রাজনৈতিক ভরাডুবির অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয় বিরোধী দলের সদস্য হবার পরেও রাজাপক্ষ পরিবারের সাথে তার ঘনিষ্ঠতা।

অনেকে মনে করেন রাজাপক্ষ ভাইরা যখন ২০১৫র নির্বাচনে ক্ষমতা হারান তখন বিক্রমেসিংহে তাদের আড়ালে থাকতে সাহায্য করেছিলেন। এখন আবার প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ করাকে দেখা হচ্ছে প্রেসিডেন্ট গোটাভায়া রাজাপক্ষর পদত্যাগের যে দাবিতে জনগণ তাকে অগ্রাহ্য করে সেটা ঠেকিয়ে রাখার একটা প্রচেষ্টা হিসাবে।

অনেকেই মনে করছেন গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জনসাধারণ যে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করছে এই নিয়োগ তা বন্ধ করতে উদ্ধত একটা জবাব। রানিল বিক্রমেসিংহের নিয়োগের পরপই লেখক ও সাংবাদিক অ্যান্ড্রু ফিডেল ফার্নান্ডো এক টুইট বার্তায় বলেন এই পদক্ষেপ "আমাদের দেশে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পচনের পরিচয়।" সূত্র: বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শ্রীলঙ্কা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ