পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অশনির প্রভাবে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে অসময়ে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ হয়ে আছে উপকূলের নিন্মাঞ্চলের ফসলি জমি। এ অবস্থায় চরম বিপাকে পড়েছেন উপকূলের চাষিরা। এছাড়া প্রবল বৃষ্টিতে ঝিনাইদহের কালিগঞ্জে এলাকার ক্ষেতে ভাসছে কৃষকের পাকা ধান। এতে ব্যাপক ক্ষতি ও চরম হতাশায় পড়েছেন ঝিনাইহের কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষকেরা। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে খবর বিস্তারিত :
রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, অশনির প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে প্রায় বিশ হাজার হেক্টর জমির রবিশস্য পানির নিচে পড়ে আছে। স্থানীয়দের অভিযোগ সøুইজ গেটগুলো প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় সময়মত পানি নিস্কাশন করতে না পেরে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে কৃষক। সবচেয়ে বেশি নষ্ট হচ্ছে মুগ ডাল। দেশের তিন ভাগের একভাগ মুগ ডাল আবাদ হয় পটুয়াখালীতে। এছাড়াও গত কয়েক বছর ধরে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে উৎপাদিত মুগ ডাল দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও রফতানি হচ্ছে। ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না পারলে ব্যাহত হতে পারে রফতানি। এ অবস্থায় চরম বিপাকে পড়েছেন উপকূলের চাষিরা।
চলে গেছে অশনি, কিন্ত ক্ষতি বয়ে বেড়াচ্ছে কৃষক। কৃষি নির্ভর জনপদ পটুয়াখালীর দূর্গম উপজেলা রাঙ্গাবালী। গত তিনদিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে এখানকার ফসলি জমি। নষ্ট হচ্ছে মুগডাল, ফেলনডাল, মরিচ, চিনাবাদাম, মিস্টি আলুসহ বিভিন্ন রবিশস্য। জলাবদ্ধ হয়ে আছে শত শত একর জমি। চরমোন্তাজ ইউনিয়নের সøুইজ গেটগুলো প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় সময়মত পানি নিস্কাশন করতে না পেরে বেশি ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে এখানকার কৃষক। পানি অপসারণ করতে মহাব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। এদিকে পানি অপসারন করতে না করতেই বুধবার সকাল থেকে আকাশে কড়া রোদ। রোদের তাপে পানি গরম হয়ে মরে যাচ্ছে গাছ। এ অবস্থায় চরম বিপাকে রয়েছেন ভুক্তভোগী চাষীরা।
সরেজমিনে বুধবার রাঙ্গাবালী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরে দেখা গেছে, মুগ ডাল,বাদাম, ফেলন ডাল, মরিচ, তিলসহ সবজি ক্ষেতগুলো পানিতে থৈ থৈ করছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষেতগুলোতে হাঁটু পানি জমা হয়েছে। হাটু পানির মধ্যে নেমে কৃষকদের তাদের কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে দেখা যায়। বৃষ্টির পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণে মুগ ডাল, বাদাম ও আলু নষ্ট হয়ে যাওয়ার বেশী ঝুঁকিতে রয়েছে। এতে লাখ লাখ টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় চাষিরা।
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে উপজেলায় ১২ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে মুগডাল, ১ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে বাদাম, ১ হাজার ২৫৫ হেক্টর জমিতে ফেলন ডাল, ১ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে মরিচ, ৫১০ হেক্টর জমিতে বোরো, ৮৫ হেক্টর জমিতে শাক সবাজি, ৮ হেক্টর জমিতে ভূট্টা, ৪ হেক্টর জমিতে তিল আবাদ হয়েছে। অসময় বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে দু’দফায় বৃষ্টি। প্রবল বৃষ্টিতে ক্ষেতে ভাসছে কৃষকের পাকা ধান। এতে ব্যাপক ক্ষতি ও চরম হতাশায় পরেছে ঝিনাইহের কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষকেরা। একদিকে শ্রমিক সঙ্কট, অন্যদিকে বৈরী আবহাওয়া যেন তাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্ষেতে কেটে রাখা ধান ঘূর্ণিঝড় অশনি বৃষ্টির পানিতে ভাসছে। ধানের ফলন ও দাম ভালো হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। এ উপজেলায় ঈদের ২-৩ দিন আগে থেকে ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়া কৃষকদের ভাবিয়ে তুলেছে। বৃষ্টি হওয়ায় অনেক কৃষক তাদের আধা পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন। এ সময় পুরোদমে ধানকাটার মৌসুম শুরু হলেও এখনও অধিকাংশ কৃষক ক্ষেতের ধান ঘরে তুলতে পারেনি। আর ২-১ সপ্তাহের মধ্যে মাঠের পাকা ধানগুলো কেটে ঘরে তুলে নেয়ার অপেক্ষায় ছিল। এদিকে সপ্তাহ পার না হতেই ফের গত সোমবার আবার ঘর্ণিঝড় অশনি বৃষ্টি হওয়ায় মাঠের পর মাঠ পাকা ধান মাটিতে নূইয়ে পড়েছে। অনেক জমিতে কেটে রাখা ধান বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। এতে ধানের সঙ্গে ডুবেছে কৃষকদের স্বপ্নও।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, কালীগঞ্জ উপজেলায় ধানচাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৪ হাজার ৩০ হেক্টর। কিন্তু কার্তিক মাসের কিছু ফসল নষ্ট হওয়ায় কারণে এবার চাষ হয়েছে ১৬ হাজার ৫’শ ৩০ হেক্টোর জমিতে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ হাজার ৫’শ হেক্টর বেশি জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এরমধ্যে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ ভাগের মতো ফসল বাড়িতে আনতে পারলেও বাকি সব ক্ষেতেই পড়ে বৃষ্টির পানিতে ভিজছে।উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গতকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় মাঠের পর মাঠ পাকা ধান মাটিতে নূইয়ে পড়েছে। অনেক জমিতে জমে থাকা পানি কেটে রাখা ধানের ওপরে উঠে গেছে। এ বিষয়ে উপজেলার জামাল ইউনিয়নের উল্ল্যা গ্রামের তৈয়েবুর রহমান জানান, এ বছর আড়াই বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছিলাম। কষ্টার্জিত ফসল ঘরেতোলার আগেই বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে তার জমির পাকা ধান। একই এলাকার আরো অনেক কৃষক জানান, তাদের কিছু পরিমান ধান ঘরে তুলতে পেরেছেন বাকি ধান পানিতে ভাসছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।