পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। আগামী জুন এখন দুই হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের সাময়িক হিসাব অনুযায়ী মাথাপিছু আয় এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ২৩৩ ডলার। গত অর্থবছর শেষে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল দুই হাজার ৫৯১ ডলার। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি চলতি অর্থবছর শেষে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়াবে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশে। গত মার্চ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অর্থনৈতিক সূচকের বিশ্লেষণ করে জিডিপির সাময়িক হিসাব প্রাক্কলন করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বিবিএস। ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। এদিকে করোনার মধ্যে গত অর্থবছরের ৭ শতাংশের মতো জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে অর্থনীতিবিদসহ বিশ্লেষকদের মধ্যে ছিল ব্যাপক সংশয়। সেই সংশয়ের মধ্যেই সাময়িক হিসাবে চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি সোয়া ৭ শতাংশ হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী। এই উচ্চ প্রবৃদ্ধি নিয়েও অর্থনীতিবিদদের মধ্যে আবারও নতুন করে সংশয় দেখা দিয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী মান্নান বলেন, করোনার এই পরিস্থিতিতে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হার অনেক ভালো। মার্চ পর্যন্ত ৭ দশমিক ২৫ হলে জুন শেষে এটা আরও বাড়তে পারে, ৭ দশমিক ৫ শতাংশও হতে পারে। আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ জিডিপির চূড়ান্ত হিসাব পাওয়া যাবে। বিবিএসের হিসাব বলছে, এই অর্থবছরে চলতি মূল্যে জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ৩৯ লাখ ৭৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বা ৪৬৫ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরে জিডিপির আকার ছিল ৩৫ লাখ ৩০ হাজার ২০০ কোটি টাকা বা ৪১৬ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ। করোনার কারণে এর আগের বছর ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার নেমেছিল ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশে।
জিডিপির হার করোনার আগের অবস্থায় এসেছে, তাহলে কি দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার হয়েছে? এমন প্রশ্নে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, করোনা থেকে অর্থনীতির পুরোটা পুনরুদ্ধার হয়নি। তবে বৃত্তের বাইরে বিভিন্ন সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের অনেক উন্নতি হয়েছে। গত দুই বছরে আমাদের রেমিট্যান্স বেড়েই চলেছে। রফতানি আয় ও অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। তা ছাড়া মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির বাড়ছে। আমরা আশা করছি, বছর শেষে আমাদের প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে।
প্রাপ্যতার সাপেক্ষে গত ৬/৭ মাসের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে ২০২১-২২ অর্থবছরের জিডিপির এ সাময়িক হিসাব প্রস্তুত করা হয়েছে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বিবিএস। এতে আরও বলা হয়েছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে জিডিপি’র সার্বিক বিবেচনায় কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি শতকরা ২ দশমিক ২০ শতাংশ, শিল্প খাতে ১২ দশমিক ৩১ শতাংশ এবং সেবা খাতে ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল শতকরা ৬ দশমিক ৯৪ ভাগ এবং মাথাপিছু আয় ছিল ২ লাখ ১৯ হাজার ৭৩৮ টাকা বা ২৫৯১ মার্কিন ডলার।
এদিকে একদিনেই ডলারের বিপরীতে ২৫ পয়সা দর হারিয়েছে টাকা। আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে গত সোমবার এক ডলারের জন্য ৮৬ টাকা ৭০ পয়সা খরচ করতে হয়, যা রোববার লেগেছিল ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা। মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সরবরাহ বিচ্ছিন্নতার জেরে বিশ্ববাজারে পণ্য ও কাঁচামালের মূল্য এখন ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করছে, এতে করে আমদানি মূল্য বাড়ায় ডলারের বিপরীতে বিনিময় দর হারাচ্ছে টাকা।
বাংলাদেশের টাকার মতো বিশ্বের অন্যান্য দেশের ছোটখাট মুদ্রাগুলো বৈশ্বিক কাঁচামাল ও নিত্যপণ্যের অস্থিতিশীল মূল্যের শিকার হয়ে আমদানি ব্যয় মেটাতে প্রচণ্ড চাপের মুখে রয়েছে। এতে রেমিট্যান্স ও রফতানির মাধ্যমে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি চাহিদা দেখা যাচ্ছে। ফলে ‘মাথাপিছু আয় বাড়ছে’ হিসাবে উঠে এলেও মানুষের পকেটের অবস্থার অগ্রগতি হচ্ছে, এমনটি এখনই বলা যাচ্ছে না।
এদিকে মাথাপিছু আয় দুই হাজার ৮২৪ ডলারে উঠলেও বাস্তবে দেশের প্রতিটি মানুষের আয় তা নয়। কারণ মাথাপিছু আয় কোনো ব্যক্তির একক আয় নয়। দেশের অভ্যন্তরের পাশাপাশি রেমিট্যান্সসহ যত আয় হয়, তা দেশের মোট জাতীয় আয়। সেই জাতীয় আয়কে দেশের জনসংখ্যা দিয়ে মাথাপিছু ভাগ করে এ আয়ের হিসাব করা হয়। ফলে দেশে মাথাপিছু আয় বাড়লেও তাতে ব্যক্তির আয়ে তেমন কোনো তারতম্য হয় না।
মানুষের মাথাপিছু আয় বর্তমান বাজারের প্রকৃত চিত্রের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ কি না এমন প্রশ্নে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, গ্রামের মানুষও যে যার মতো ভালো আছে, আনন্দে আছে, আনন্দ নিয়ে বাজার করছে। তাই মাথাপিছু আয় বর্তমান বাজারের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ বলে মনে হয় আমার। আমাদের হিসাবে মাথাপিছু আয় ঠিক আছে একই সঙ্গে। আয় বৃদ্ধিতে এবার ঈদে হাটবাজারে বেশি বেচাকেনা হয়েছে। গ্রামেও প্রত্যেকের হাতে মোবাইল-খালি পায়ে কেউ নেই। সবার আয় বেড়েছে।##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।