বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ফরিদপুর সালথায় য়ুবক খুনের ঘটনায় থানায় দায়েরকৃত মামলাটি বুধবার ( ৯ মে) একজন এসআইকে দায়ীত্ববার অর্পন করা হয়েছে।
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্রে করে দুই পক্ষের সৃষ্ট সংঘর্ষে যুবক নিহতের ঘটনায় যদুনন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিক মোল্যাকে প্রধান আসামী করে ৫৬ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করা হয় গতকাল মঙ্গলবার(৮ মে)।
হত্যাকান্ডের তিন দিন পর রবিবার (৮ মে) নিহতের ভাই মিরাজুল মোল্যা বাদী হয়ে সালথা থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলাটি নথিভুক্ত করে এর বুধবার (৯ মে) তদন্তভার দেয়া হয়েছে থানার একজন এসআইকে। তবে হত্যার ঘটনায় এখনও কাউকে আটক করা হয়নি। খুনের ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর-লুটপাট হচ্ছে। আগুন দেয়া হচ্ছে বাড়িতে।
মামলা তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সৈয়দ আওলাদ বলেন- একদিকে নিহতের পরিবার ঘটনার তিন পর মামলাটি করেছেন। অপরদিকে আসামীরাও পলাতক রয়েছে। যেকারণে এখনও কাউকে ধরা সম্ভব হয়নি। তবে চেষ্টা চলছে খুব তারাতারিই আসামীদের গ্রেপ্তার করা হবে।
ভাঙচুর ও লুটপাটের বিষয় তিনি বলেন- কিছু বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটছে। একটি বাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে বলেও শুনেছি। এসব ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। মূলত পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে।
জানা গেছে- আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলার খারদিয়া গ্রামের বাসিন্দা যদুনন্দী ইউপি চেয়ারম্যান রফিক মোল্যার সাথে ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারন সম্পাদক আলমগীর মিয়ার বিরোধ চলছিল। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে আলমগীরের সমর্থক সিরাজুল ইসলামের বুকে কাতরা দিয়ে কোপ দেয় রফিকের সমর্থকরা। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান সিরাজুল ।
পরে উভয় গ্রুপের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হন। আহতদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বোয়ালমালী ও মোকসেদপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভর্তি করা হয়েছিল। সংঘর্ষচলাকালে রফিকের সমর্থকদের অন্তত ৫০টি বসত বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে আলমগীরের সমর্থকরা।
নিহত সিরাজ খারদিয়া ঠাকুর পাড়া গ্রামের মো. ইশারত মোল্যার ছেলে। তিনি স্থানীয় সোনাপুর বাজারে থাকা রমজান মোল্যার স.মিলে শ্রমিকের কাজ করতেন।
সরেজমিনে গেলে নিহতের প্রতিবেশীরা গনমমাধ্যম কে জানান- সিরাজুল ভদ্র মানুষ হিসেবে পরিচিত। কখনো কারো সাথে ঝামেলাও করত না। এবার ৩০টি রোজাই ছিল। নামাজও পড়ত নিয়মিত। কয়েক মাস আগে বিয়ে করে নতুন জীবন শুরু করেন। বিয়ের পর ভালই চলছিল তাদের দাম্পত্য জীবন। হঠাৎ করে সংঘর্ষে যোগ দিয়ে প্রাণ হারায় সিরাজুল। এতে নিভে যায় তার সুখের সংসারের বাতি। সিরাজুলের মৃত্যুতে তার পরিবারের মাঝে এখনও চলছে শোকের মাতম।
সিরাজুলের মা রুবি বেগম বলেন- আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই। যারা আমার সন্তানকে হত্যা করেছে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবী জানাই।
এদিকে সিরাজুল খুনের ঘটনার পর থেকে খারদিয়া, উজিরপুর ও সাধুহাটি গ্রামে মামলার আসামী ও তাদের সমর্থকদের বাড়িতে গিয়ে প্রতিদিনই হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উজিপুর গ্রামে মানোয়ার ফকির নামে এক ব্যক্তি বাড়িতে আগুনও দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সালথা সার্কেল) মো. সুমিনুর রহমান বলেন- খারদিয়ার হত্যা মামলার আসামীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ওই এলাকার পরিবেশ শান্ত রাখতে পৃথকভাবে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। যেকোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।