মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
উনিশশো উননব্বই সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ইমরান খান যখন ঢাকা সফরে আসেন তখন ক্রিকেট দুনিয়ায় তার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। বাংলাদেশে তখনো ক্রিকেট জনপ্রিয় খেলা হয়ে উঠেনি। ফুটবল তখনো দেশের এক নম্বর খেলা। কিন্তু তারপরেও ক্রিকেটার ইমরান খানের নাম গ্রাম অবধি ছড়িয়েছে।
ইমরান খানের সে সফরটি ছিল বেশ সাড়া জাগানো। মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর বাংলাদেশ সফরের পর ইমরান খানের সেই সফরটি ছিল বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের বড় কোন তারকার সফর। জাতিসংঘ শিশু তহবিল বা ইউনিসেফ-এর ক্রীড়া বিষয়ক বিশেষ দূত হিসেবে তিনি ঢাকা সফর করেন। ছয়টি রোগ - যক্ষ্মা, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, ধনুষ্টংকার, পোলিও এবং হাম - থেকে শিশুদের রক্ষার জন্য যে টিকাদান কর্মসূচী ছিল। টিকাদানে উদ্বুদ্ধ করার জন্য ইমরান খান ছয়দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছিলেন।
এর আগে ১৯৭৯ এবং ১৯৮৪ সালে দুইবার ইমরান খান ঢাকায় এসেছিলেন। কিন্তু ১৯৮৯ সালের সেই সফর ছিল ব্যতিক্রম। ইউনিসেফের বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম বিদেশ সফরে তিনি ঢাকায় আসেন। তার সে সফরে ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম গিয়েছিলেন। রাজশাহীতেও তার যাবার কথা থাকলেও বৈরি আবহাওয়ার কারণে সেটি বাতিল করতে হয়েছিল।
ঢাকার সংবাদপত্রগুলোতে তখন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন ইমরান খান। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে তাকে নিয়ে প্রতিদিনই একাধিক রিপোর্ট ছাপা হয়। ইমরান খান কী করছেন, কেমন পোশাক পরেছেন, পোশাকের রং কী, তিনি শেভ করেছেন কিনা, কেন তিনি বিয়ে করছেন না - ইত্যাদি বিষয়ে গণমাধ্যমের নজর ছিল।
ঢাকায় এসে প্রথম দিন এক সংবাদ সম্মেলনে ইমরান খান বলেন, তার জনপ্রিয়তা শিশুদের জন্য কাজে লাগাতে চান। তিনি ব্যাখ্যা করেন, কেন তিনি ইউনিসেফের বিশেষ দূত হয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পাকিস্তানের মুলতানে একটি ক্রিকেট ম্যাচে দর্শক গ্যালারিতে বসে থাকা এক শিশু বলের দ্বারা আঘাত পায়।
আহত সে ছেলেকে হাসপাতালে দেখতে যান খান। হাসপাতালের করুণ পরিবেশ দেখে তিনি উপলব্ধি করেন যে উপমহাদেশের শিশুরা কত অসহায়। আর তখন থেকেই এই অসহায় শিশুদের জন্য কিছু করার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেন ইমরান খান। "ইউনিসেফ আমাকে তাদের বিশেষ দূত হিসেবে মর্যাদা দিয়ে যে সম্মান করেছে আমি তা রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবো," বলেন ইমরান খান।
সফরের দ্বিতীয় দিনে ঢাকার মহাখালীতে ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচী) ভবনের উদ্বোধন করেন ইমরান খান। সেখানে তিনি মিথিলা নামে এক শিশুকে পোলিও প্রতিষেধক টিকা খাইয়ে এর উদ্বোধন করেন। টিকাদান কর্মসূচীতে অংশ নিতে ইমরান খান চট্টগ্রামেও যান। বিমানবন্দর থেকে তিনি আগ্রাবাদ কমিউনিটি সেন্টারে গিয়ে একটি শিশুকে পোলিও টিকা খাইয়ে ইপিআই কর্মসূচী শুরু করেন। এছাড়া তিনি ইপিআই কর্মীদের উদ্দেশ্যে একটি বক্তৃতাও দেন। সেখানে তৎকালীন চট্টগ্রাম পৌর কর্পোরেশন ইমরান খানে জন্য একটি নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজন করে।
বাংলাদেশে ছয়দিন অবস্থানকালে ইমরান খানের সাথে ছিলেন সাংবাদিক আফসান চৌধুরী। তিনি লিখেছেন শিশুদের টিকা দেবার জন্য উৎসাহ দিতে ইমরান খানকে দিয়ে 'আপনার শিশুকে টিকা দিন' বক্তব্য রেকর্ড করানো হয়েছিল। পরবর্তীতে টিকা বিষয়ে সচেতনতার জন্য টেলিভিশনে সেটি বারবার প্রচার করা হয়েছিল। ইমরান খান আশা করেন ১৯৯০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ইপিআই কর্মসূচী তার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে। সূত্র: বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।