পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
বরাবরের মতো এবারও রমজান মাসেও আল-আকসায় ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। সেখানে ফিলিস্তিনিদের নামাজ আদায়ে বাধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ইসরাইলের প্রতিরোধের মুখেও ভয় না পেয়ে ফিলিস্তিনিরা সেখানে প্রতিবাদ করে যাচ্ছে। এদিকে রমজানের তৃতীয় শুক্রবারে সব বাধা পেরিয়ে আল-আকসায় নামাজ আদায় করেছেন প্রায় দেড় লাখ মুসল্লি। জেরুজালেম ইসলামিক ওয়াকফ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। শুকবার ফজরের নামাজের পরপরই ওই মসজিদে অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। সে সময় ইসরাইলি সৈন্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩১ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজন সাংবাদিকও রয়েছেন। বিভিন্ন স্থান থেকে আল-আকসায় নামাজ আদায় করতে আসা ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর রাবার বুলেন, স্টান গ্রেনেড এবং টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এদিকে ইসরাইল পুলিশের দাবি, ফিলিস্তিনিরা পাথর ছুড়ে মারার পর তারা সেখানে অভিযান শুরু করেছে। শুক্রবার নামাজরত মুসল্লিদের ওপর টিয়ার গ্যাসও ছুড়ে মারা হয়েছে। গত সপ্তাহে ইহুদিদের উৎসব চলাকালীন সময় পুলিশ ইসরাইলিদের সুরক্ষা দিয়ে আল-আকসা মসজিদে প্রবেশ করতে দিয়েছে। অবৈধ দখলদারীদের এ অনুপ্রবেশের ফলে মসজিদে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অনেক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে এবং বহু মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ১৫ এপ্রিল ইহুদিদের ধর্মীয় উৎসব পাসওভারের প্রথম দিন ছিল। সেসময় ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে ১৫৮ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৪শ ফিলিস্তিনি আহত হয়। পুরো সপ্তাহজুড়েই এই দৃশ্য দেখা গেছে। ফিলিস্তিনিরা বলছে, তাদের যতই বাধা দেওয়া হোক না কেন তারা আল-আকসায় প্রবেশের চেষ্টা বন্ধ করবে না। মুসলিম এবং ইহুদি দুই ধর্মাবলম্বীদের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত আল-আকসা মসজিদ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিবাদ চলছে। দুই ধর্মাবলম্বীই একে নিজেদের বলে দাবি করে থাকে। আর এটা নিয়েই বহু যুগ ধরে ইসরাইল, ফিলিস্তিন এবং মুসলিম বিশ্বের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। মুসলিমদের জন্য তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থান এটি। এ মসজিদ চত্বর মুসলিমদের কাছে হারাম-আল-শরিফ হিসেবে পরিচিত। ইহুদি ধর্মাবলম্বীরা আল-আকসা মসজিদ ও তার আশপাশের অংশকে ‘টেম্পল মাউন্ট’ হিসেবে অভিহিত করে থাকে এবং তাদের কাছে এটি বিশ্বের সবচাইতে পবিত্র স্থান। মুসলিমদের পবিত্র রমজান মাস, ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পাসওভার উৎসব এবং খ্রিস্টানদের ইস্টার সানডে একই সঙ্গে পড়ে যাওয়ায় সব ধর্মাবলম্বীরাই এসময় আল আকসা চত্বরে প্রবেশ করছেন। নয়দিনব্যাপী চলা ‘পাসওভার’ উৎসবের সময় আল-আকসায় ইহুদিদের প্রবেশ অনেক বেড়ে যায়। এ সময় এমনিতেই এক ধরনের উত্তেজনা বিরাজ করে। তারমধ্যে ইসরাইলি বাহিনীর অভিযান আরও সংঘাতময় পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। রানা মোহাম্মদ নামে এক ফিলিস্তিনি বলেন, এটা আমাদের জমি, আল-আকসা আমাদের এই সত্যটা আমাদের সন্তানদের শেখানোর জন্য জেরুজালেম এবং আল-আকসায় আসা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি আমি। ইহুদিদের পাসওভার উৎসব শেষ হওয়ার পর রমজানের শেষ ১০ দিন আল-আকসায় প্রবেশে মুসলিমদের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে ইসরাইলি বাহিনী। আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।